বোলিংয়ের শেষটা ছিল স্বপ্নের মতো। ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায় দাঁড়িয়েও বল হাতে ঝলক দেখাচ্ছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। খেলাঘরের ইনিংসের ৪৮তম ওভারে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে টানা দুই বলে ২ উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান দেশসেরা এই পেসার। নূর আলম এসে পরের বলটি ঠেকিয়ে দিলে হ্যাটট্রিক আর হয়নি। কিন্তু এর পরের বলেই নূর আলম আউট। খেলাঘরের ইনিংসেরও ইতি সেখানেই। ইনিংসের শেষ ওভারের চার বলে ৩ উইকেটসহ মাশরাফির বোলিং বিশ্লেষণ ৮ ওভারে ৩৮ রানে ৪ উইকেট, যা এবারের ঢাকা লিগে তার সেরা বোলিং।
ব্যাটিংয়েও মাশরাফি হতে পারতেন রূপগঞ্জের নায়ক। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ধীরগতির উইকেটে খেলাঘরের ১৯৮ রান তাড়া করতে নেমে সেই মাশরাফিকে এমন অবস্থায় ব্যাটিংয়ে নামতে হয়, যখন রূপগঞ্জ জয়ের জন্য দরকার ৫৬ বলে ৪২ রান, হাতে আছে পাঁচ উইকেট। কিন্তু ১৬ বলে ১২ রান করে সেই নূর আলমের বলে কাভারে ক্যাচ তুলে মাঠ ছাড়েন মাশরাফি। ছোট্ট ইনিংসটিতে কাভার দিয়ে মারা একটি চারের মারও ছিল। শেষ পর্যন্ত তানভীর আহমেদ অপরাজিত ৫১ রানের ইনিংস খেলে রূপগঞ্জের ২ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেন। শেষ ওভারে রূপগঞ্জের জয়ের জন্য দরকার ছিল ৩ রান। মাসুম খানের করা শেষ ওভারের প্রথম তিন বলে দৌড়ে ৩ রান নিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় রূপগঞ্জ। ম্যাচসেরার পুরস্কার পান মাশরাফিই।
এর আগে রূপগঞ্জের ভারতীয় ক্রিকেটার চিরাগ জানি বল হাতে ৩ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাটিং নেমে খেলেছেন ৭৮ বলে ৭২ রানের ঝলমলে ইনিংস। ৭টি চার ও ২টি ছক্কা ছিল চিরাগের ইনিংসে। রূপগঞ্জের ব্যাটিংয়ের আরেক আকর্ষণ নাঈম হাসানের ব্যাট থেকে এসেছে ২৪ রান। ৬১ বল ক্রিজে থাকা নাঈমকে আজ রানের জন্য বেশ কষ্টই করতে হয়েছে। এবারের লিগে টানা পাঁচটি পঞ্চাশ ছাড়ানো ইনিংসের পর আজ প্রথম ব্যাট হাতে লম্বা ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হন এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। তবে নাঈমের দল ৭ ম্যাচ খেলে ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার চার নম্বরে জায়গা ধরে রেখেছে। খেলাঘর ৮ ম্যাচে কেবল ১ জয় নিয়ে আছে টেবিলে সবার নিচে।
দিনের আরেক ম্যাচে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবকে হারিয়ে এবারের লিগে টানা দ্বিতীয় জয়ের দেখা পেয়েছে দীর্ঘদিন পর প্রিমিয়ার লিগে আসা সিটি ক্লাব। পয়েন্ট তালিকায় সিটি ক্লাবের অবস্থান ১০ নম্বরে, শাইনপুকুর ১১ নম্বরে।
বিকেএসপিতে আগে ব্যাট করা শাইনপুকুরের ১৭৫ রান স্বাচ্ছন্দ্যেই তাড়া করেছে সিটি ক্লাব। রান তাড়ায় উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান শাহরিয়ার কমলের অর্ধশত সিটি ক্লাবকে ভালো শুরু এনে দেয়। ছন্দে থাকা জাকিরুল আহমেদও (৪৬) রান পেয়েছেন। কমলের সঙ্গে জাকিরুলের জুটি ৫৬ রানের। ৫৫ রান করে কমল আউট হলেও আশিক উল ইসলাম ও জাওয়াদ রয়েন মিলে সিটি ক্লাবকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান। জাওয়াদ ২২ রানে আউট হন। আশিক ৪৪ রানে অপরাজিত থেকে ৪০.৪ ওভারে ৪ উইকেট বাকি থাকতে সিটি ক্লাবকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন