রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

আক্ষেপের দিনে তাইজুলেই স্বস্তি

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০২ এএম

চ্যালেঞ্জ ছিল অনেক। স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার পরীক্ষিত ব্যাটিং লাইনআপ তো আছেই, মামিনুল হকের দলের জন্য এক রাশ রোমাঞ্চ নিয়ে অপেক্ষায় ছিল বাতাসও। তার সঙ্গে যোগ হয় টস হেরে ব্যাটিং না পাওয়ার হতাশাও। আর তাতে পোর্ট এলিজাবেথে সমন্বিত বোলিং পারফরম্যান্সটা এখনো আশা পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। তবে দলে ফেরা তাইজুল ইসলামের সৌজন্যে বৃষ্টিবিঘ্নিত দ্বিতীয় সেশনটা অপেক্ষাকৃত ভালো কেটেছে সফরকারীদের। অর্ধশতক করা ডিন এলগার ও কিগান পিটারসেনকে ফিরিয়েছেন বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনার। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনের দ্বিতীয় সেশন দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ করেছিল ৩ উইকেটে ১৯৯ রান তুলে। রিপোর্টটি লেখা পর্যন্ত (৭০ ওভার) ঐ ৩ উইকেট হারানো প্রোটিয়াদের ঝুলিতে ২৪১ রান। ফিফটি তুলে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা খেলছেন ৫৫ রান নিয়ে, ২৭ রানে তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন রিকেলটন। প্রথম সেশনে সারেল এরউইয়ির উইকেট হারিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা তুলেছিল ১০৭ রান। দ্বিতীয় সেশন ২ উইকেট হারিয়ে তারা তুলেছে আরও ৯২ রান। চারজন বোলার নিয়ে এ টেস্টে নেমেছে বাংলাদেশ, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে উজ্জ্বল তাইজুলই। ২৪ ওভারে ৬০ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেল অভিজ্ঞ এই স্পিনার।
দলের এক ঝাঁক তারকা খেলোয়াড়দের ছাড়া বাংলাদেশের বিপক্ষে লড়ছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাই নিয়েই প্রথম টেস্টে দুর্দান্ত এক জয়। সিরিজ হার এড়াতে হলে এ টেস্টে জিততেই হবে টাইগারদের। তার জন্য টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নামা দলটির প্রয়োজন শুরুতেই প্রোটিয়া শিবিরে আঘাত হানা। সুযোগটা এনে দিয়েছিলেন বোলার সৈয়দ খালেদ আহমেদ। কিন্তু অধিনায়ক নিতে পারলেন কোথায়? সারেল এরউইয়াকে ফেরানো যেত তৃতীয় ওভারেই। ব্যক্তিগত ৪ রানেই পড়তে পারতেন এলবিডব্লুর ফাঁদে। তার বিরুদ্ধে করা জোরালো আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দিলে রিভিউ নেওয়ার জন্য অধিনায়কের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন বোলার খালেদ। কিন্তু সিদ্ধান্ত নিতে নিতেই সময় শেষ! রিপ্লেতে দেখা গিয়েছে বল-ট্রাকিংয়ের তিনটিই লাল। আবারও সেই আক্ষেপ দিয়ে দিন শুরু।
তবে সেই আক্ষেপ কিছুটা কেটেছে যারবান টেস্টে উপেক্ষীত থাকা তাইজুলের হাত ধরে। সেশনের শুরু থেকে একদিকে আঁটসাঁট বোলিং করছিলেন এই স্পিনার, যদিও অন্যদিকে ইবাদত হোসেনের এলোমেলো বোলিংয়ে চাপ আলগা হয়ে যাচ্ছিল। তাঁকে টানা দুই চার মারা ডিন এলগার অবশ্য ফিরেছেন পরের ওভারে তাইজুলের বলে। ভালো বোলিংয়ের পুরস্কার পান তাইজুল। আগের বলে এলবিডব্লু আবেদন নাকচ হয়েছিল, তবে ঠিক পরের বলেই অফ স্টাম্পের বাইরে জোরের ওপর করা ডেলিভারিতে খোঁচা দিয়ে কট-বিহাইন্ড হন এলগার। দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক ফেরেন ৮৯ বলে ৭০ রান করে, এর আগে পিটারসেনের সঙ্গে তার দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ওঠে ৮১ রান।
এলগার ফিরলেও অবশ্য আক্রমণ চালিয়ে গেছেন পিটারসেন, ইবাদতকে মারেন টানা তিন চার। এর মধ্যে তৃতীয়টি দিয়ে সাত টেস্টের ক্যারিয়ারের চতুর্থ অর্ধশতকটি পান, মাইলফলকে যান ৭৪ বলে। তবে বৃষ্টির কারণে ছন্দপতন হয় তার। প্রথম দফা বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ ছিল ২৫ মিনিট, পরে আরেকবার ঝিরঝির বৃষ্টি নেমেছে, তবে আম্পায়াররা খেলা বন্ধ করেননি আর।
সে বিরতির পর স্বাগতিকদের রানের লাগাম টেনে ধরে বাংলাদেশ। সে সময় ১০ ওভারে ওঠে মাত্র ১৬ রান। অবশ্য এরপর দুই ওভারে আসে দুটি বাউন্ডারি, তবে পিটারসেনের উইকেটটাও পেয়ে যায় বাংলাদেশ। তাইজুলের বলে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে গিয়ে খেলতে গিয়ে মিস করেন পিটারসেন, আম্পায়ার আলাউদ্দিন পালেকারের নট-আউটের সিদ্ধান্ত রিভিউ করে বাংলাদেশ। ১২ সেন্টিমিটারের জন্য ইমপ্যাক্টে আম্পায়ারস কল হয়নি, বাংলাদেশ পায় তৃতীয় উইকেট, তাইজুল পান নিজের দ্বিতীয়টি। পিটারসেন করেন ১২৪ বলে ৬৪, প্রথম শতকের অপেক্ষা আরেকটু বাড়ল তার।
বাভুমার সঙ্গে রায়ান রিকেলটন অবিচ্ছিন্ন থেকেই যান চা-বিরতিতে। প্রথম রান করার জন্য ১৭তম বল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে রিকেলটনকে, সামনে এসে তাইজুলকে মারা চারের শটেও অবশ্য খুব বেশি নিয়ন্ত্রণ ছিল না এ বাঁহাতির। এই জুটিই মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন