শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমাদের চ্যালেঞ্জ আছে, সম্ভাবনাও আছে। সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার মূল হাতিয়ার হচ্ছে শিক্ষা। সেই শিক্ষার ক্ষেত্রে সরকার বিনিয়োগ করছে। আগামী দিনে আরও অনেক বিনিয়োগ করবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু গড় জাতীয় আয়ের শতকরা চারভাগ বিনিয়োগ করার কথা বলেছেন। এখন বলা হয়, অন্তত ৬ ভাগ বিনিয়োগ করতে। কিন্তু আমরা শতকরা তিন ভাগের বেশি এখনও করতে পারছি না। তবে, আগামী দিনে নিশ্চয়ই পারব, ইনশাআল্লাহ। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে শিক্ষাই হবে আগামী দিনের মেগা প্রজেক্ট।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির ১ম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার খরচ আছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরকার সে খরচ বহন করে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সে খরচ বহন করতে হয়। কোনো কিছুই একেবারে বিনামূল্যে হয় না। কিন্তু তার মূল্য আমরা দিতে পারি না। শিক্ষার ক্ষেত্রেও যে মূল্য দেওয়া প্রয়োজন, তার প্রতি আমাদের মনোযোগী হওয়া দরকার। তার মানে এই নয় যে, আমরা অতিরিক্ত উচ্চমূল্য ধারণ কিংবা বিনামূল্যে দেব।
তিনি বলেন, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বিনামূল্যে পড়বার সংস্কৃতি থেকে সরে আসা দরকার, ঠিক তেমনি যাদের দেবার ক্ষমতা আছে, শিক্ষার ব্যয়ভার বহন করার ক্ষমতা আছে, তারা সেই ব্যয়ভার বহন করেই শিক্ষা গ্রহণ করবেন। বঙ্গবন্ধু যে কথাটি বারবার বলে গেছেন, দারিদ্র্য যেন কখনো কোনো মেধাবী শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষার পথে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সেই দায়িত্ব রাষ্ট্র বহন করবে। এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যার সরকার বদ্ধ পরিকর। কাজেই শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যয়ের বিষয়টি আমাদের ভাবতে হবে। বিষয়টিকে একটি যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের সামনে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বিশাল সম্ভাবনা। আজকে যারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ছে, তারা যখন কর্মজগতে প্রবেশ করবে, এখন যেই কাজগুলো দেখি তার শতকরা ৬৫ ভাগ তখন আর থাকবে না। তার মানে আরও নতুন নতুন কাজ আমাদের সামনে থাকবে। আমাদের কাজ হলো, কি কাজ থাকবে সেটি বুঝে নিয়ে তার জন্য প্রস্তুত হওয়া।
দীপু মনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিত শিক্ষার্থীদের কর্মজগতের জন্য প্রস্তুত করে দেওয়া। শুধুমাত্র ডিগ্রি দেওয়াই যথেষ্ট নয়। চাকরিদাতা আর চাকরিপ্রার্থীর মধ্যে কোথায় যেন ফারাক থেকে যায়। সেখানে পার্শ্ববর্তী কোনো দেশের সার্টিফিকেট কোর্স বা ডিপ্লোমাধারীরা চাকরি পেয়ে যাচ্ছেন। কারণ কিছু বিশেষ দক্ষতা তারা অর্জন করতে পারছেন। তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা সে দক্ষতাগুলো দিচ্ছে। আমরাও যেন শিক্ষার প্রতিটি স্তরে শিক্ষার্থীদের সেই দক্ষতায় দক্ষ করতে পারি, সেজন্য শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আসছি।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের শিল্পকারখানা, কর্মজগতের যে চাহিদা রয়েছে, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কারিকুলাম নির্ধারণ করতে হবে। এক্ষেত্রে ইউজিসি বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ঢেলে সাজাতে হবে। অনেক সার্টিফিকেট কোর্স নেওয়ার সুবিধা থাকতে হবে। নানান মেয়াদী ডিপ্লোমা দেওয়ার সুবিধা থাকতে হবে। কাজের জগতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই ধাপে ধাপে সেগুলোকে বদলাতে হবে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ও উদ্ভাবন হতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন