যশোরে শীতকালীন জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘দেশে একশ্রেণির অপশক্তি পাঠ্যবইয়ে যে তথ্য নেই, সেই তথ্য আছে বলে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। মিথ্যাচারকে প্রশ্রয় দেওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের যদি ভুল থাকে, তা স্বীকার করে সংশোধন করব। ইতিমধ্যে যেখানে ভুল দেখা গেছে, দায়িত্বশীলদের দিয়ে সংশোধন করা হয়েছে।’
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘নতুন কারিকুলামের পাঠ্যবইয়ে কোথাও কোথাও ভুল থাকতে পারে, এগুলো সংশোধনের জন্য দুই কমিটি করা হয়েছে। ভুল চিহ্নিত হওয়া মাত্র সঙ্গে সঙ্গে সংশোধন করা হবে। তবে যেখানে ভুল নেই; বইয়ে ভুল নিয়ে মিথ্যাচার করছে একটি অপশক্তি। তারা দেশকে পিছিয়ে নিয়ে যেতে চায়। যারা মিথ্যাচার করছে, সেই অপশক্তি প্রচেষ্টাকারীদের প্রতিহত করব ঐক্যবদ্ধ থেকেই।’
ডা. দীপু মনি আরো বলেন, ‘আমাদের অনেক লক্ষ্য রয়েছে-২০৩০ সালে উন্নত সমৃদ্ধ, টেকসই বাংলাদেশ গড়ার। দেশ গড়ার জন্য যেমন সম্ভাবনা রয়েছে; তেমনি চ্যালেঞ্জও। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেদের তৈরি করতে হবে। তৈরি হওয়ার জন্য আমাদের শিক্ষার্থীদের যুগোপযোগী শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। তাদের সুস্থ ধারায় সুন্দর মন নিয়ে কর্মের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে। তারই অংশ হিসেবে বিগত শিক্ষাব্যবস্থাকে রূপান্তর করা হয়েছে। নতুন কারিকুলামে শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা জ্ঞানের দক্ষতা বৃদ্ধি, চিন্তা করার দক্ষতা, সমসাময়িক বিষয়ে সমাধানের দক্ষতা অর্জন করতে পারবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের সিনিয়র সচিব কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. ওমর ফারুক, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাবিবুর রহমান, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকার চেয়ারম্যান প্রফেসর তপন কুমার সরকার, জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ার্দার।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোরের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আহসান হাবিব।
বক্তব্য শেষে অংশগ্রহণকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অলিম্পিক মশাল প্রজ্বালন, সুশৃঙ্খল প্যারেড, স্কুল শাখার ছাত্রীদের অংশগ্রহণে মাঠে ডিসপ্লে ও ক্রীড়া ডিসপ্লে প্রদর্শনী হয়।
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোরের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আহসান হাবীব জানান, পদ্ম, গোলাপ, বকুল ও চাঁপাড় এই চার অঞ্চলের শ্রেষ্ঠ প্রতিযোগীদের নিয়ে হবে প্রতিযোগিতা। ময়মনসিংহ ও ঢাকা অঞ্চল নিয়ে গঠিত পদ্ম। রাজশাহী ও দিনাজপুর অঞ্চল নিয়ে গঠিত চাঁপা। সিলেট, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা অঞ্চলের নামকরণ করা হয়েছে বকুল। বরিশাল ও খুলনা অঞ্চল নিয়ে গঠিত গোলাপ।
তিনি আরো জানান, ছয় দিনব্যাপী শুরু হওয়া আট ইভেন্টে ৮২৪ জন ক্রীড়াবিদ অংশ নেবে। এর মধ্যে ছাত্র ৪৪০ ও ছাত্রী ৩৮৪ জন। অ্যাথলেটিকস, ছাত্র ও ছাত্রীদের ভলিবল, বাস্কেটবল, হকি, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস ও সাইক্লিং ইভেন্ট রয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতির আয়োজনে এবং যশোর শিক্ষা বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় চার দিন লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে যশোরের ছয়টি মাঠ।
জাতীয় পর্যায়ে প্রথম হওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ, দ্বিতীয় হওয়া প্রতিষ্ঠানকে ৭০ হাজার ও তৃতীয় প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। এ ছাড়া বিজয়ী প্রতিযোগীদের ট্রফি, মেডেল, প্রাইজবন্ড ও সনদপত্র প্রদান করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন