শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খেলাধুলা

জাতিকে লজ্জা দিলেন মামুনুলরা

প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : বাংলাদেশ ফুটবলে ব্যর্থকার ষোলকলা পূর্ণ হয়েছে। সদ্য সমাপ্ত সাফ সুজুকি কাপে চরম ভরাডুবির পর এবার দেশের মাটিতেই জাতিকে লজ্জা দিলেন মামুনুলরা। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টের শেষ চার থেকেই বিদায় নিলেন তারা। গতকাল সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের শেষ চারের প্রথম ম্যাচে বাহরাইন অলিম্পিক দল ১-০ গোলে বাংলাদেশ জাতীয় দলকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয়। বিজয়ীদের পক্ষে মিডফিল্ডার ইব্রাহীম আল হুতি একমাত্র জয়সূচক গোলটি করেন।
ম্যাচের শুরু থেকে আমণাত্মক ফুটবল খেললেও ধীরে ধীরে অগোছালো হয়ে পড়ে বাংলাদেশ দল। সময় যত গড়িয়েছে ততই যেন হতাশ হয়েছেন দর্শকরা। মামুনুল-জামাল ভুইয়ারা এমন ফুটবল খেলেছেন যা দেখে লজ্জাই পেয়েছেন স্টেডিয়ামে উপস্থিত হাজার দুয়েক দর্শক। বরং ম্যাচের শুরু থেকেই পাল্টা আক্রমণে যায় বাহরাইন। বাংলাদেশ একাদশ দেখে শুরুতেই বুঝা গেছে ম্যাচে খারাপ কিছু ঘটতে যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত তাই ঘটেছে। এদিন বাংলাদেশ দলের লাইনআপে দু’টি পরিবর্তন আনেন কোচ মারুফুল হক। টুর্নামেন্টে নির্ভরতার প্রতীক হয়ে ওঠা বাংলাদেশ গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা ইনজুরির কারণে সেমিফাইনালের একাদশে জায়গা পাননি। তার পরিবর্তে গোলবার সামলাতে মাঠে নামেন গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেল। যিনি অনেক ম্যাচেই জাতীয় দলের হারের প্রধান কারণ। এছাড়া ফরোয়ার্ড নাবিব নেওয়াজ জীবনের পরিবর্তে নামানো হয় মিডফিল্ডার মিঠুন চৌধুরীকে। এই পরিবর্তন কতটা যুক্তিসঙ্গত ছিলো তা ম্যাচেই প্রমাণ হয়েছে। শুরু থেকেই বাংলাদেশ আক্রমণাত্মক মেজাজে থাকলেও ব্যর্থ হয়েছে। এসময় ডানপ্রান্ত থেকে হেমন্ত ভিনসেন্ট, বামপ্রান্ত থেকে কখনও মোনায়েম খান রাজু, কখনও মিঠুন চৌধুরী ক্রমাগত হানা দেন বাহরাইন রক্ষণ দূর্গে। কিন্তু গোল অধরাই রয়ে যায় বাংলাদেশের জন্য।
বাহরাইনের বয়স ভিত্তিক দলটির কাছে বাংলাদেশ কতটা অসহায় ছিল, দর্শকরা স্বচক্ষে দেখেছেন। ম্যাচের ক্ষণে ক্ষণে প্রতিপক্ষের আক্রমণে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা মামুনুলদের। ম্যাচের প্রথম সুযোগটি পায় বাহরাইন। দু’মিনিটে পোস্টের ২৫ গজ দূর থেকে নাসির আল কাসমির ফ্রিকিক বাংলাদেশ সাইডবার ঘেষে মাঠের বাইরে চলে যায়। তবে ২৪ মিনিটে দু’টি নিশ্চিত গোলের সুযোগ নষ্ট হয় বাংলাদেশের। হেমন্তর পাস থেকে বলটা জালে ঠেলে দিতে পারলেই নিশ্চিত গোল হতো। কিন্তু মিঠুনের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৩০ মিনিটে রায়হানের থ্রো থেকে বক্সে ডিফেন্ডার ইয়াসিন খানের হেড জাল খুঁজে পায়নি। মিনিট নয়েক পর বাংলাদেশের বিপদ সীমানায় ঢুকে পড়েন বাহরাইনের মিডফিল্ডার মোহামেদ আলনার। তাকে অবৈধভাবে বাধা দেন ডিফেন্ডার ইয়াসিন খান। ফ্রি কিকের নির্দেশ দেন রেফারি সিভাকরণ। বক্সের কোনা থেকে ফরোয়ার্ড আনোয়ার আলীর ফ্রি কিক ফিস্ট করে নিশ্চিত গোল থেকে বাহরাইনকে বঞ্চিত করেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেল। কিন্তু প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়েই সর্বনাশ যা ঘটার ঘটে যায়। বক্সের বাইরে থেকে আলথুয়াইনির শটটি পাঞ্চ করে ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক সোহেল। ফিরতি বলে হেড নেন বাহরাইন মিডফিল্ডার ইব্রাহীম আল হুতি। নিজের জায়গা ছেড়ে এগিয়ে আসায় বল ফেরানোর সুযোগটাও পাননি সোহেল। ফলে যা হওয়ার তাই হলো। বাংলাদেশ গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়িয়ে যায় (১-০)। দ্বিতীয়ার্ধে বেশ ক’বার বাহরাইনের গোলমুখে আক্রমণ শানিয়েছিলেন মামুনুলরা। কিন্তু তাদের সেই আক্রমণ কখনো গোলবারে, কখনো প্রতিপক্ষের রক্ষণবুহ্যের দেয়ালে আছড়ে পড়ে। সেই সঙ্গে আছড়ে পড়ে বাংলাদেশের ভাগ্যও। ফলে মাচের বাকি সময় আর কোন গোল না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলের হার নিয়েই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় বাংলাদেশ। ফাইনালের টিকিট কাটে বাহরাইন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন