জাতীয় দল ছাড়া এই দুজনের এক দলে খেলার ইতিহাস খুব একটা নেই। অনেকটা অঘোষিতভাবেই একজন লাল-সবুজের জার্সি খুলে রেখেছেন, আরেকজন এখনও মাঠ মাতিয়ে যাচ্ছেন সাফল্যের চূড়ায় থেকে। দুজনই অনেক অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ, নেতৃত্বগুণেও ঋদ্ধ। মাশরাফি বিন মুর্তজা ও সাকিব আল হাসানের মতো দুজনকে ঘরোয়া ক্রিকেটে একই দলে পাওয়া আশীবার্দের মতোই। দেশের ক্রিকেটের দুই মহাতারকার সেই উষ্ণতার ছোঁয়া অনুভব করছেন আফতাব আহমেদ। দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার যেভাবে ভূমিকা রাখছেন দলে, তাতে মুগ্ধ এক সময়ের সতীর্থ এই লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ কোচ।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে এবার শুরু থেকেই এই দলের সারথি মাশরাফি। প্রথম ম্যাচটি তিনি খেলতে পারেননি। এরপর থেকে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার অধিনায়কত্ব নিয়ে নতুন করে বলার আছে সামান্যই। যথেষ্ট সফল তিনি বল হাতেও। এই ৩৮ বছর বয়সেও লিগে ১১ ম্যাচে তার শিকার ১৮ উইকেট। লিগের শেষদিকে এসে রূপগঞ্জের শক্তি বেড়েছে নাটকীয়ভাবে সাকিবকে পেয়েও। এমনিতে তার খেলার কথা ছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে। তবে এই অলরাউন্ডার মাঠে নামার আগেই মোহামেডান ছিটকে যায় লিগ থেকে। তিনি এরপর নাম লেখান রূপগঞ্জে। দলের সবশেষ ম্যাচে খেলেন তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে মাঠে ফেরার পরদিনই। মাঠে নেমে নিজের ছাপ রাখতেও সময় নেননি সাকিব। প্রাইম ব্যাংকের পিক্ষে সেদিন প্রথম ওভারেই আউট করেন তামিম ইকবালকে। ৭ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে উইকেট নেন দুটি। ব্যাট হাতে ২১ রান করার পর রান আউট হয়ে যান।
দুজনকে এভাবে নিজ দলে পেয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত আফতাব। গতকাল মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে দলের অনুশীলনের ফাঁকে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রূপগঞ্জ কোচ বললেন, তার দলের জন্য বড় প্রাপ্তি এই দুজন, ‘মাশরাফি শুরু থেকে দলটাকে চাঙা রাখার চেষ্টা করেছে। দল সবসময় চাঙাই ছিল। সাকিব আসার পর তো এক্সট্রা অর্ডিনারি। সবার প্রচেষ্টা অনেক বেশি ছিল। সাকিব যেমন চ্যাম্পিয়ন, মাঠে ওর মানসিকতা ওরকমই ছিল। ওর জন্য বাকি সবার মানসিকতাও ওর মতো ছিল।’
শুধু পারফরম্যান্সই নয়, মাশরাফি-সাকিব যেভাবে প্রভাব রাখছেন দলে, সেটিই বেশি মুগ্ধ করছে তাদের এক সময়ের সতীর্থ আফতাবকে, ‘ওরা অনেক সহায়তাপ্রবণ। মাশরাফি প্রথম থেকেই আমাকে সহযোগিতা করেছে অনেক। সাকিব এখন এসেছে, সেও একইরকম। দলে অনেক সম্পৃক্ত ও, এটা দলের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এমন নয় যে ও কেবল এলো আর গেল, বরং অনেক সম্পৃক্ত দলে। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া। ওরা এসেই চলে যাচ্ছে, এমন নয়। দলের জন্য যা যা করা দরকার, মিটিংয়ে বলুন বা... আগের ম্যাচে নিশ্চয়ই দেখেছেন সেন্টারে সাকিব-মাশরাফি কতটা সম্পৃক্ত ছিল, এটা দলের জন্য অনেক বড় পাওয়া।’
গত আসরে পয়েন্ট তালিকার তলানির দিকে থেকে শেষ পর্যন্ত কোনো রকমে রেলিগেশন এড়াতে পেরেছিল রূপগঞ্জ। এবার তারা ১২ ম্যাচ শেষে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকায় আছে দুইয়ে। শিরোপার লড়াইয়ে কেবল তারাই টিকে আছে ২২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের সঙ্গে। লিগে ম্যাচ বাকি আছে আর তিনটি। আজ দুই দলই সাভারের দুই ভেন্যুতে নামবে ভাগ্য বদলের আশায়। এই সময়ে চার পয়েন্টের ব্যবধান ঘোচানো একটু কঠিনই। তবে আফতাব প্রেরণা খুঁজে নিচ্ছেন আগের এক লিগের অভিজ্ঞতা থেকে, ‘গত বছরের আগের বছর যদি মনে করে দেখেন, আমরা আবাহনীর চেয়ে এক পর্যায়ে চার পয়েন্টে এগিয়ে ছিলাম। পরে আবাহনীই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। কাজেই কে জানে যে আমরাও এবার চ্যাম্পিয়ন হব না!’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন