মৌসুমে বার্সেলোনার আর কোনো শিরোপা জেতার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু বার্সেলোনার এখন লক্ষ্য লিগে অন্তত দ্বিতীয় হওয়া। আর সে লক্ষ্যের পথে কাল একটা হোঁচট খেয়েছে বার্সা। ঘরের মাঠে রায়ো ভায়োকানোর বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে গেছে দলটি। বার্সার হারে শিরোপার জেতার একদম হাত ছোঁয়া দূরত্ব চলে গেছে রিয়াল মাদ্রিদ। আরও একটি শিরোপা জিততে ৩৩ ম্যাচে ৭৮ পয়েন্ট নিয়ে এক নম্বরে কার্লো আনচেলেত্তির দলের পাঁচ ম্যাচ থেকে কেবল এক পয়েন্ট পেলেই চলবে। সমান ম্যাচে ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়েই থাকছে বার্সা। কোচ জাভি অবশ্য বলেই দিয়েছিলেন, এবারের লিগে তাদের লক্ষ্য দ্বিতীয় হওয়া। পরের মৌসুমে তারা খেলবেন শিরোপার জন্য। পরের পাঁচ ম্যাচ জেতা এখন জরুরি হয়ে উঠেছে দলটি। জাভি তাই জানিয়ে দিয়েছেন, লিগে আগামী পাঁচ ম্যাচই তার জন্য ফাইনাল।
ঘরের মাঠে টানা তিন ম্যাচ হার- ক্লাব ইতিহাসে এমন অভিজ্ঞতা তাদের আগে হয়েছিল একবারই, ১৯৯৮ সালে লুই ফন গালের কোচিংয়ে। ইউরোপা লিগে ফ্রাঙ্কফুর্টের বিপক্ষে হার দিয়ে শুরু, এরপর কাদিজ এসে ক্যাম্প ন্যু জয় করেছে। আর গতপরশু করল রায়ো ভায়োকানো। প্রায় ২২ বছর আগে সর্বশেষ ক্যাম্প ন্যুতে জয় পেয়েছিল ভায়োকানো।
সে ম্যাচের একজন এদিনও ছিলেন স্টেডিয়ামে। ২০০০ সালের মে মাসের সে ম্যাচেও বার্সার ডাগআউটে ছিলেন জাভি। তখন বদলি খেলোয়াড় হিসেবে জায়গা হয়েছিল বেঞ্চে, এবার কোচ হিসেবে। এই হারে লিগে এখন সেভিয়ার সমান পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে বার্সেলোনা। মুখোমুখি লড়াইয়ে অবশ্য এগিয়ে বার্সা। এ কারণে পরের পাঁচ ম্যাচই জিততে পারলে অবস্থান ধরে রাখতে পারবে তারা।
যেকোনো মূল্যে পরের মৌসুমের স্প্যানিশ সুপার কাপ খেলতে চায় বার্সেলোনা। আর্থিকভাবে ধুঁকতে থাকা এক দলের জন্য নিশ্চিতভাবেই ৮০ লাখ ইউরো বেশ বড় অঙ্ক। আগামী পাঁচ ম্যাচে তাই পা হড়কানোর কোনো সুযোগ দেখছেন না জাভি, ‘ঘরের মাঠে কাদিজ ও রায়োর বিপক্ষে জেতা উচিত- এমন দুটি ম্যাচ হেরেছি। কিন্তু নভেম্বরে যখন এসেছিলাম, তখন দল নয় নম্বরে ছিল। ক্লাব বেশ ধুঁকছিল। এ ম্যাচগুলো বেশ জটিল, কিন্তু এটাই ফুটবল। আমাদের মায়োর্কাকে (পরের ম্যাচের প্রতিপক্ষ) নিয়ে ভাবতে হবে, এই ফলের কথা ভুলতে হবে এবং প্রস্তুত হতে হবে। পাঁচটি ফাইনাল বাকি।’
ঘরের মাঠে টানা হারের দায় নিজের কাঁধেই নিচ্ছেন জাভি, ‘আমাদের আরও ভালো প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামতে হবে। প্রথমার্ধে আমরা ভালো খেলিনি। দ্বিতীয়ার্ধে ভালো করেছি, সবকিছুই করেছি, কিন্তু পরিস্থিতি কঠিন ছিল। কোচ হিসেবে আমি ওদের অনুপ্রেরণা দিতে না পারার দোষ মেনে নিচ্ছি।’ দলের হারে নিজের ভুলের ব্যাখ্যায় জাভি আরও বলেছেন, ‘ভুলগুলো বারবার হতে দেওয়া যায় না। আমাদের আত্মসমালোচনা করতে হবে। এটাই আমাদের বাস্তবতা।’
ওদিকে ম্যাচের প্রথম ৯০ মিনিটে মাত্র একটি শট নিয়ে সেটাতেই গোল পেয়েছে রায়ো। ঘরের মাঠে যেভাবে গোল খাচ্ছেন, তাতে বিরক্তি ধরে গেছে অধিনায়ক সার্জিও বুসকেতসের, ‘গোলগুলো আমাদের মনোযোগের অভাব বা ভুলের কারণে হচ্ছে। আমরা ভুল করেনি, কিন্তু ওরা যেভাবে গোলটা করেছে...আলভারো গার্সিয়া দ্রুততার সঙ্গে যে গোল করেছে, সেটা এমন এক আক্রমণের মাধ্যমে যে ধরনের আক্রমণের ভিডিও আমরা অন্তত ২০০ বার দেখেছি। তারপরও আমরা সেটা থামাতে পারিনি।’
ছোট দলের বিপক্ষে ঘরের মাঠে এরকম বিব্রতকর হার নিশ্চিতভাবে তাদের প্রত্যাশার অনেক বাইরে। চলতি লিগে অবশ্য ভায়োকানোর বিপক্ষে দুই দেখায় দুবারই হেরেছে কাতালান ক্লাবটি। গত অক্টোবর এই দলটির বিপক্ষে ১-০ গোলে হারের পর চাকরি হারান তখনকার কোচ রোনাল্ড কোমান। এবার জাভির ভাগ্যে কি ঘটে সেটিই দেখার!
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন