রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ইইউর প্রভাবশালী নেতা হতে যাচ্ছেন ম্যাখোঁ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৭ এএম

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট হিসেবে অতি-ডানপন্থী মেরিন লে পেনের বিপক্ষে মধ্যপন্থী ইমানুয়েল মাখোঁর পুনর্নির্বাচনে স্বস্তি দেখা দিয়েছে ইউরোপের দেশগুলোতে। একই সঙ্গে ম্যাখোঁর এ বিজয় ইউরোপীয় ইউনিয়নের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা হিসেবে তার অবস্থানকে আরো শক্তিশালী করতে ভ‚মিকা রাখবে। তবে ইউতে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে সংগঠনটিতে অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সমর্থনও তার দরকার। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, পুননির্বাচিত হওয়ায় তিনি এখন সম্প‚র্ণ নির্ভার হয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে সচেষ্ট ভ‚মিকা রাখতে পারবেন। পাশাপাশি ২৭ দেশের জোটটিকে আরো শক্তিশালী করতেও ম্যাখোঁ ভ‚মিকা রাখবেন বলে প্রত্যাশা বাড়ছে। গত রোববার নিজের বিজয়ী ভাষণেও সেই ইঙ্গিত দেন ম্যাখোঁ। ভাষণে ইউরোপকে আরো শক্তিশালী করার লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণের অঙ্গীকার করেন তিনি। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদরদপ্তর স্ট্রাসবর্গে এক প্রচারণা সমাবেশে ম্যাখোঁ বলেন, ইউরোপ হলো শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতীক। এটা আমাদের আজ ও আগামীর জন্য নিরাপদ সম্পদ। ইউরোপ আমাদের সংকট ও যুদ্ধ থেকে সুরক্ষা দিয়ে আসছে। ১৬ বছর পর জার্মানির চ্যান্সেলর হিসেবে এঙ্গেলা মার্কেলের বিদায় ও ২০২০ সালে যুক্তরাজ্যের জোট ত্যাগ ইইউতে ম্যাখোঁর প্রভাবশালী অবস্থান তৈরিতে ভ‚মিকা রাখবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তবে এক্ষেত্রে ফ্রান্স ও জার্মানির সম্পর্ককে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখতে হবে। শিগগিরই জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে তার। নির্বাচনে জেতার পর ফরাসী প্রেসিডেন্টরা ঐতিহ্যগতভাবে প্রথম বিদেশ সফর হিসেবে যান জার্মানিতে। একাধিক যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যাওয়া দুই দেশের বন্ধুত্ব অটুট রাখতে ফরাসী রাষ্ট্রপ্রধানরা এ সফর করে থাকেন। শোলজের মুখপাত্র স্টিফেন হেবেসট্রেইট জানান ম্যাখোঁর সঙ্গে বৈঠকের অন্যতম প্রধান আলোচ্য বিষয় থাকবে ইউক্রেন সংকট। অতি-ডান প্রতিদ্ব›দ্বী মেরিন লে পেনের বিপক্ষে বিজয়ী হওয়াকে ‘ইউরোপের জন্য একটি ভালো দিন’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। তার বিদেশ সফরের এক পর্যায়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি’র সঙ্গেও দেখা করতে যেতে পারেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট। দীর্ঘদিন ধরেই ইইউর নিজের নিরাপত্তা জোরদার করতে দায়িত্বশীল হওয়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে এসেছেন ম্যাখোঁ। তার মতে, ন্যাটো জোটকে শক্তিশালী করা অত্যন্ত জরুরি। ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ তার সেই বক্তব্যকেই জোরদার করেছে। আগামীতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নীতি-নির্ধারণী বিষয়ে প্রচারণা চালাবে ম্যাখোঁর নেতৃত্বাধীন ফ্রান্স। এর মধ্যে বøকজুড়ে ন্য‚নতম মজুরি প্রবর্তন, আমদানির ওপর কার্বন ট্যাক্স নির্ধারণ ও রাজস্ব অন্যতম। এছাড়া আশ্রয়প্রার্থীদের বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি স্থগিত আলোচনাকে গতিশীল করতে চায় ফ্রান্স। তবে এ ধরনের সংবেদশীল বিষয়গুলোতে অগ্রগতির জন্য অপরাপর রাষ্ট্রপ্রধানদের আন্তর্জাতিকভাবে ঐক্যমতে পৌঁছাতে হবে। সেন্টার ফর ইউরোপীয়ান রিফর্মের পরিচালক চার্লস গ্রান্ট বলেন, মাখোঁ সবকিছু তার নিজের মতো করে পাবেন না। অনেক মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় সদস্য ফরাসী নীতির বিরোধিতা করবে, ব্রিটিশরা এখনো মাথাব্যথার কারণ হয়ে রয়েছে এবং জার্মানরাও হয়ত কিছু ফরাসী নীতির সঙ্গে একমত হবে না। জ্বালানি কৌশলের মতো কিছু বিষয় নিয়ে ফরাসীদের সঙ্গে জার্মানদের বিরোধ রয়েছে। সবুজায়ন ও অধিক জ্বালানি-স্বনির্ভরতার অংশ হিসেবে ম্যাখোঁ যখন পারমাণবিক জ্বালানি পক্ষে কথা বলছেন, শোলজের সরকার তখন জার্মানির শেষ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো এ বছর বন্ধ করে দিচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব মোকাবেলা করতে ইইউর গ্রহণ করা ঋণ ব্যবহারের জন্য একটি বিনিয়োগ পরিকল্পনার বিষয়ে ফ্রান্সের প্রস্তাবেও বিরোধিতা করতে পারে জার্মানি। মূলত কভিড-১৯ মহামারীকালীন সংকটের সময় জোটভুক্ত দেশগুলোকে সহায়তা দেয়ার জন্য সমন্বিতভাবে ঋণ গ্রহণের প্রস্তাবনাটি ইইউ। তবে একজন গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘিকে পাশে পেতে পারেন ম্যাখোঁ। দীর্ঘদিন ধরেই প্যারিসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করে আসছেন তিনি। এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতার নতুন চালিকাশক্তি হিসেবে ইতালি ও ফ্রান্সকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য গত বছর রোমে ম্যাখোঁর সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন তিনি। রয়টার্স।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন