নিজের প্রথম তিন ওভার মিলিয়ে বল হাতে বেশ নিয়ন্ত্রিত ছিলেন দিল্লি ক্যাপিটালসের মুস্তাফিজুর রহমান। তবে আশা জাগিয়েও উইকেটের দেখা মিলছিল না। কলকাতা নাইট রাইডার্সের ইনিংসের শেষ ওভারে পাল্টে গেল চিত্র। রীতিমতো বিধ্বংসী হয়ে উঠলেন বাংলাদেশের এই বাঁহাতি পেসার। চার বলের মধ্যে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে নজর কাড়লেন তিনি।
গতপরশু মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪৬ রান তোলে কলকাতা। তাদেরকে দেড়শর নিচে আটকাতে দারুণ নৈপুণ্য দেখান মুস্তাফিজ। কাটার মাস্টার খ্যাত তারকা চার ওভারের কোটা পূরণ করে মাত্র ১৮ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। একে একে তার শিকার হন রিংকু সিং, নিতিশ রানা ও টিম সাউদি। জবাবে এক ওভার আগেই চার উইকেটে জয় পায় দিল্লি।
ম্যাচের ও নিজের প্রথম ওভারে মাত্র ২ রান দেন মুস্তাফিজ। শুরুটা অবশ্য প্রত্যাশামাফিক ছিল না। লেগ সাইড দিয়ে দেন ওয়াইড। বৈধ দ্বিতীয় ডেলিভারিতে উইকেটও পেয়ে যেতে পারতেন তিনি। ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে ভেতরে ঢোকা বল অ্যারন ফিঞ্চের সামনের প্যাডে লেগেছিল। কিন্তু দিল্লির খেলোয়াড়দের আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। পরে টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, বল গিয়ে লাগত স্টাম্পের মাথায়।
মুস্তাফিজ আবার আক্রমণে ফেরেন ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে। তার বিপরীতে কলকাতার অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার ও বাবা ইন্দ্রজিত আনতে পারেন ৫ রান। ওই ওভারেও উইকেট শিকারের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন মুস্তাফিজ। দারুণভাবে ভেতরে ঢোকা ফুল লেংথের ডেলিভারি ঠিকভাবে খেলতে পারেননি ইন্দ্রজিত। ইনসাইড এজ হয়ে স্টাম্প ঘেঁষে বল চলে যায় ফাইন লেগের দিকে। কলকাতার ইনিংসের ১৮তম ওভারে ফের বল হাতে পান মুস্তাফিজ। কিন্তু তেমন সুবিধা করতে পারেননি তিনি। ১৪তম ওভারে কেবল ৮৩ রানে ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর দলের হাল ধরা রানা ২ চার আদায় করে নেন। সবমিলিয়ে ওই ওভার থেকে আসে ১০ রান।
সেরাটা অবশ্য একদম শেষ সময়ের জন্য জমিয়ে রেখেছিলেন মুস্তাফিজ। শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লং-অফে রভম্যান পাওয়েলের হাতে ধরা পড়েন রিংকু। এতে ভাঙে রানার সঙ্গে তার ৩৫ বলে ৬২ রানের গুরুত্বপূর্ণ সপ্তম উইকেট জুটি। চতুর্থ বলে ছন্দে থাকা রানাকেও সাজঘরে পাঠান মুস্তাফিজ। সুইপার কভারে অনেকটা দৌড়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে দারুণ ক্যাচ নেন চেতন সাকারিয়া। মাঠের আম্পায়াররা নিশ্চিত হতে না পাড়ায় তৃতীয় আম্পায়ারের কাছ থেকে আসে আউটের সিদ্ধান্ত। পরেরটি ছিল ম্যাচে মোস্তাফিজের অন্যতম সেরা ডেলিভারি। গতিসম্পন্ন ইয়র্কারে সাউদির লেগ স্টাম্প উপড়ে যায়। ১ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি।
বিপর্যয়ে পড়া কলকাতাকে লড়াইয়ের পুঁজি দিতে মুখ্য ভূমিকা রাখেন রানা। ৩৪ বলে ৩ চার ও ৪ ছয়ে ফিফটি হাঁকিয়ে তিনি করেন ৫৭ রান। ৩৭ বলে ৪২ রান আসে শ্রেয়াসের ব্যাট থেকে। রিংকু ১৬ বলে করেন ২৩ রান। বাকিরা কেউ দুই অঙ্কে যেতে পারেননি। দিল্লির হয়ে সেরা বোলিং নৈপুণ্য অবশ্য মুস্তাফিজের নয়। বাঁহাতি স্পিনার কুলদীপ যাদব তিন ওভারে ৪ উইকেট দখল করেন ১৪ রানে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন