ঈদের সময় যত ঘনিয়ে আসছে মহাসড়কে ততই যানবাহনের চাপ বাড়ছে। বঙ্গবন্ধু সেতুর টাঙ্গাইল দিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪২ হাজার ১৯৯টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ১৮ লাখ ৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে টোল প্লাজা দিয়ে রেকর্ড প্রায় ৮ হাজার মোটরসাইকেল পারাপার হয়েছে। চালু হওয়ার পর থেকে একদিনে এতো মোটরসাইকেল বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়নি।
বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব কর্তৃপক্ষ জানায়, গত শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বাস, ট্রাক, পিকআপ ও মিনিট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন পারাপার হয়েছে। তারমধ্যে সেতু পূর্ব টোল প্লাজায় যানবাহন পারাপার হয়েছে ২৫ হাজার ৭৪১টি। টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৭৭ লাখ ২৯ হাজার ৫০ টাকা। আবার সেতু পশ্চিম টোল প্লাজায় ১৪ হাজার ৪১৮টি যানবাহন পার হয়েছে। টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪০ লাখ ৭৮ হাজার ৯৫০ টাকা। গতকাল শনিবার বঙ্গবন্ধু সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান মাসুদ বাপ্পী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, এতো বিপুল সংখ্যায় মোটরসাইকেল আগের কোনো ঈদের সময় সেতু পার হয়নি।
সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ে টোল প্লাজার উভয় পাশে ১৮টি পয়েন্টে টোল আদায় করা হচ্ছে। সড়কে যাতে যানজটের সৃষ্টি না হয় সে লক্ষ্যে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ।
বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পর গেল ঈদে সর্বোচ্চ ৫২ হাজার ৭৬৮টি যানবাহন পারাপার হয়। যা এ যাবতকালে সর্বোচ্চ যানবাহন পারাপারের রেকর্ড। টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। ক্রমেই তা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অন্যদিকে, বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব গোল চত্বর থেকে ভূঞাপুর-এলেঙ্গা আঞ্চলিক মহাসড়কে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে যানজট লক্ষ্য করা গেলেও থেমে থেমে ধীরগতিতে ঢাকাগামী যানবাহন চলছে।
ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে কয়েকদিন থেকে মিডিয়ায় খবর প্রকাশ করা হয়। এরপর সরকার সড়কের উন্নয়ন কাজ ঈদের সময় বন্ধ রেখে যানবাহন চলাচলে সড়ক প্রস্তুত করে। যানজট নিরসনে পুলিশের সদস্যরা ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু সড়ককে চারটি সেক্টরে ভাগ করে বিভিন্ন পয়েন্টে কাজ করছেন। এ ব্যাপারে এলেঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আতাউর রহমান বলেন, মহাসড়কে যানজট নেই। স্বাভাবিক গতিতেই যানবাহন চলাচল করছে।
মোটরসাইকেল পারাপারের রেকর্ড : টাঙ্গাইলে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে সর্বোচ্চ সংখ্যায় মোটরসাইকেল পারাপারের রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেতুর পূর্ব ও পশ্চিমপাড়া টোল প্লাজা দিয়ে প্রায় ৮ হাজার মোটরসাইকেল পারাপার হয়েছে।
জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে বিভিন্ন যানবাহনের পাশাপাশি মোটরসাইকেলে ঝুঁকি নিয়ে পরিবার নিয়ে বাড়ি যাচ্ছে মানুষ। এতে বঙ্গবন্ধু সেতুতে সর্বোচ্চ সংখ্যাক মোটরসাইকেল পারাপার হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ৭ হাজার ৯৫৯টি মোটরসাইকেল পার হয়েছে। গত শুক্রবার এই সংখ্যা ছিল ৫ হাজারের বেশি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈদে মহাসড়কে যানজট নিরসন ও নিরবচ্ছিন্নভাবে সেতুতে টোল আদায়ের জন্য ঢাকা ছেড়ে আসা উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গগামী মোটরসাইকেলগুলো বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব গোলচত্বর থেকে সেতুর স্টক ইয়ার্ডের সড়কে ঘুরিয়ে দিচ্ছে। মোটরসাইকেলের জন্য স্টক ইয়ার্ডের সড়ক দিয়ে গিয়ে সেতুর টোল প্লাজার দক্ষিণপাশে অস্থায়ী দুটি টোলবুথ স্থাপন করা হয়েছে। এতে মোটরসাইকেল আরোহীরা অল্প সময়ে টোল দিয়ে সেতু পার হয়ে যাচ্ছেন।
মোটরসাইকেলযোগে পরিবার নিয়ে ঢাকা থেকে বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া একরামুল বলেন, যাত্রীবাহী বাসে ভাড়া কয়েকগুণ বেশি। সঙ্গে ভোগান্তিও পোহাতে হয়। ফলে পরিবার নিয়ে মোটরসাইকেলে বাড়ি যাচ্ছি। ক্লান্তি লাগলে বিশ্রাম নিতে পারছি।
সেতু কর্তৃপক্ষের বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান মাসুদ বাপ্পী বলেন, সেতুর টোলের ইতিহাসে এবারই প্রথম সর্বোচ্চ সংখ্যাক মোটরসাইকেল বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে পারাপার হয়েছে। এবার লোকজন মোটরসাইকেলযোগে বেশি যাচ্ছে। এতে সেতুর পাশেই মোটরসাইকেলের জন্য দুটি অস্থায়ী টোলবুথ চালু করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন