আদমদীঘি (বগুড়া) থেকে মোঃ মনসুর আলী ঃ বগুড়ার সান্তাহারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বহুতল অত্যাধুনিক রাইস সাইলো নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে এই সাইলো নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক সান্তাহার সাইলোর সাবেক অধীক্ষক ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে। নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের কারণে উদ্বোধন না হতেই বারান্দাসহ বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ফাটল। এছাড়াও ধারণ ক্ষমতা,পরীক্ষামূলক ৫০ মেট্রিক টন চাল রাখায় তাতে আর্দ্রতা কমে ওজনে কম হয়ে যাওয়া, পোকা ধরে নষ্ট হওয়া, রাস্তার কাজে নতুন ইটের স্থলে নির্মাণকৃত সাইলোর পুরাতন রাস্তার ইট নতুন রাস্তার কাজে ব্যবহার, সীমানা প্রাচীর নির্মাণে, নিম্নমানের এসি ও সোলার ক্রয় এবং ভবনের ইলেকট্রিক লাইনের কাজে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমান সরকার দেশে চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে এবং কৃষকদের নিকট থেকে অধিক পরিমাণ ধান, চাল ক্রয়ের লক্ষ্যে শস্যভাÐার বলে খ্যাত বগুড়ার সান্তাহারে জাইকার অর্থায়নে প্রায় ২৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বহুতল আধুনিক রাইস সাইলো নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। জাপানের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিমুজি গত ২০১২ সালে এই সাইলোর নির্মাণ কাজ শুরু করে। এর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথাছিল ২০১৪ সালে। জাপানের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিমুজি কাজ শেষ না করে কিছু অসমাপ্ত রেখে দেশে ফিরে যাওয়ার পর থেকে প্রকল্প পরিচালক নিজেই ইচ্ছেমত কাজ করছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। ফলে কাজ শুরুর পর দীর্ঘ ৪ বছর পার হলেও এখনো পুরোপুরি কাজ শেষ হয়নি। এসব কারণে দেশের অত্যাধুনিক এই সাইলোটি সময়মত উদ্বোধন করাও সম্ভব হয়নি। আগামী ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে প্রধানমন্ত্রী এই সাইলোটি উদ্বোধন করবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এছাড়াও ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা ২০০৬ সাল থেকে ২০১৩ পর্যন্ত একটানা প্রায় ৭ বছর সান্তাহার সাইলোর অধীক্ষের দায়িত্বে থেকে প্রশাসনিক ও আর্থিক বিষয়ে প্রভাব বিস্তার করে সাইলোর যন্ত্রাংশ ক্রয়, মেরামত, জীপ গাড়ীর যন্ত্রাংশ ক্রয়, তেলের ভুয়া ভাউচার তৈরী, লেবার হাজিরা দেখিয়ে এবং প্রায় ৫০টি মত আবাসিক এলাকার বড় বড় বিভিন্ন প্রকার গাছ বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ২০১০ সালে সাইলো থেকে সান্তাহার-বগুড়া সড়ক পর্যন্ত সাইলোর নিজস্ব রাস্তার দুই পার্শ্বের জমি লীজ, গাছের ডালপালা ও তাল বিক্রি টাকা আত্মসাৎ করা নিয়ে তাকে বদলী করার দাবীতে জনসাধারণ শহরে মিছিল মানববন্ধন করলে তাকে আশুগঞ্জ সাইলোতে বদলী করে মোঃ জুরফিকার রহমানকে সান্তাহার সাইলোর অধীক্ষের দায়িত্ব দেয়া হলেও কোন এক খুঁটির জোরে তাকে চার্জ না দিয়ে জোর করে নিজ পদে বহাল থাকে এ সব দুর্নীতি করেন। এই প্রকল্প পরিচালকের খুঁটির জোর এতই বেশি যে কারণে অত্র সাইলোর ভিতর ও বাইরে কেউ মুখ খোলার সাহস পায়নি। তাই তৎকালীন উক্ত সাইলোর একাধিক কর্মচারী তার অবৈধ কাজে সহযোগিতা করে তারা নিজেরাও লাভবান হয়েছেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে ওই প্রকল্প পরিচালক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব। এবিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, কোন বিল্ডিং-এ ফাটল নেই, যে বেগুনে পোকা নেই সে বেগুনে বিষ আছে, রাস্তার কাজ দেখার দায়িত্ব আমার নয়, একজনের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করতেই পারে, এর সত্য মিথ্যা আপনারাই বের করতে পারেন, যারা অভিযোগ করছে তাদেরকে নিয়ে দেখান, এইসব পত্রিকায় লেখার বিষয় নয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন