বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

আরিফের জীবন সংগ্রাম

প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : ১২ থেকে ১৩ বছরের মো: আরিফ নামে এই ছেলেটির হাতে বই-খাতা নিয়ে বিদ্যালয় গমনকালে মুখের এই ফুটফুটে হাসিখানা থাকত; তাহলে কতই না সুন্দর লাগত। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, হয়তো বিধাতা ওই ধরনের হাসি ওর কপালেই লেখেননি। তা না হলে কেন এ বয়সে আরিফকে গলায় গামছা ঝুঁলিয়ে পানের বাক্স নিয়ে ভ্রাম্যমাণ পান বিক্রেতা হতে হবে? আরিফ নেছারাবাদ উপজেলার আউরিয়া গ্রামের রিকশাচালক মো: কবির মিয়ার ছেলে। স্কুলের এই ফি, সেই ফি ও বছরের বিভিন্ন সময় মাত্রাতিরিক্ত টাকা দিয়ে নোট-গাইডের ব্যয়ভারের ভয়ে আরিফের রিকশাচালক বাবা কবির মিয়া তাকে লেখাপড়া করাতে পারেননি। আরিফ এখন বিদ্যালয় ছেড়ে হয়েছে উপজেলার পথে-প্রান্তরের ভ্রাম্যমাণ পানবিক্রেতা। ক্রেতা সেজে আরিফের কাছে পান খাওয়ার ছলে লেখাপড়ার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে ও বলেছে কয়েকটি কথা। ‘লেহাপড়া (লেখাপড়া) করতে অনেক টাহা লাগে। পামু (পাব) কই’? আরিফ জানায়, ছোটকালেই তার মা তাকে ছেড়ে চট্টগ্রামে গিয়ে নতুন করে বিয়ে বসেছে। বাবা উপজেলার দক্ষিণ জগন্নাথকাঠি ভূঁইয়াবাড়ি রাস্তায় রিকশা চালায়। ঘরে তার ছোট একটি বোন আছে। এয়াছাড়া (এছাড়া) বাবায় না পড়ালে আমি কি করমু। লেখাপড়ার টাকা কোতায় পামু? পান খাইলে কয়েন (বলেন)। শুধু এভাবে আরিফই নয়, এ উপজেলায় বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের প্রধান কারণেই এখনো নাম না জানা অনেক শিশু বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার আলো থেকে। আর শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত এসব শিশু কাজ করছে পথে-প্রান্তরের নানা খাবার হোটেল, ঢাকা শহরের বাসাবাড়ি, কারখানার শ্রমিক, আবার কেউবা রাস্তার ফেরিওয়ালা হিসেবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন