বোদা (পঞ্চগড়) উপজেলা সংবাদদাতা : পঞ্চগড়ের বোদায় আগাম শাক-সবজিতে বেশি লাভ করায় কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে শীতকালীন শাক-সবজি চাষে। এই উপজেলার উৎপাদিত শাক-সবজি দেশের বিভিন্ন জেলার চাহিদা পূরণ করছে। এ উপজেলার কৃষকরা তাদের নিজস্ব বুদ্ধি, কৌশল ও মেধা দিয়ে প্রতি বছর সবজি উৎপাদনে অসমান্য অবদান রাখছেন। বর্তমানে তাদের উৎপাদিত শীতকালীন আগাম সবজি হাট-বাজারে আসতে শুরু করেছে। আগাম শাক-সবজিতে লাভ বেশি থাকায় কৃষকরা মওসুমের আগেই চাষ শুরু করেছেন। বোদা পৌর নগরকুমারী বাজারে সবজি কিনতে আসা হারুন-অর-রশিদ বলেন, বাজারে শীতকালীন আগাম সবজি আসতে শুরু করেছে। এই সবজির স্বাদ আলাদা। পৌরশহরে বাজারের খুচরা সবরি ব্যবসায়ী দেলোয়ার জানান, আগাম সবজির দাম বেশি হলেও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। জানা যায়, অন্য সময়ে শাক-সবজির চাষ হলেও মওসুমের শীতকালীন সময়ে সবজির চাষ ও উৎপাদন হয় বেশি। এ সময় চাষিদের উৎপাদিত শাক-সবজি দেশের জেলা ও উপজেলার শহরগুলোতে নিয়ে যায় পাইকাররা। সরেজমিন দেখা যায়, বড়শশী, কাজলদিঘী, কালিয়াগঞ্জ, মাড়েয়া বামনহাট, সাকোয়া, চন্দনবাড়ি, পাচপীর, মায়দানদিঘী ইউনিয়নের কৃষকদের জমিতে শীতকালীন আগাম শাক-সবজি চাষ। এর মধ্যে রয়েছে শিম, লাউ, বেগুন, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাল শাক, পালং শাক, মুলাসহ অন্যান্য শীতকালীন সবজি। শাক-সবজির হাট ঘুরে দেখা যায়, কৃষকরা পাইকারদের কাছে তাদের উৎপাদিত ফসল ভালো দামে বিক্রি করছেন। ময়দানদিঘী হাটে আসা কৃষক তারা মিয়া বলেন, ৪০ কেজি বেগুন নিয়ে বাজারে এসেছি। পাইকাররা দাম হাঁকাচ্ছেন কেজি প্রতি ২০ টাকা, কিন্তু ২৫ টাকা হলে বিক্রি করে দেবো। মাড়েয়া বাজার থেকে আসা জয়নাল জানান, এখানে শীতকালীন আগাম সবজি চাষ করা হয়। যা অন্য কোথাও হয় না। তাই তিনিসহ অনেক পাইকার সবজি ক্রয় করতে এখানে ছুটে আসেন। এ অঞ্চলের সবজির স্বাদ আলাদা। তাই ক্রেতাদের কাছে এই অঞ্চলের সবজির আলাদা একটা চাহিদা রয়েছে। এ সময় কথা হয় মাড়েয়া ইউনিয়নের আলোকপাড়ার কৃষক মো: শাহিনুরের সাথে। তিনি বলেন, ভালো দামের আশায় চলতি মওসুমে ৯০ শতক জমিতে আগাম শীতকালীন লাউ, মুলা ও লাল শাক চাষ করেছেন। এতে মোট খরচ পড়েছে ২৫ হাজার টাকা। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে তার উৎপাদিত সবজি খরচ বাদ দিয়ে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মো: আল মামুন-অর-রশিদ জানান, সবজি উৎপাদনে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। চলতি মওসুমে ৯৯৫ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাক-সবজির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে শাক-সবজির চাষ হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন