ইমরান মাহমুদ : গেল নভেম্বরে নিরাপত্তার ‘নগ্ন অজুহাতে’ বাংলাদেশ সফর বাতিল করে অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দল। সেই একই ‘অমূলক অশঙ্কায়’ বড়দের পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাংলাদেশে হওয়া অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে তাদের যুব দলকেও পাঠায়নি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। তাতে কি জৌলুস এতটুকু হারিয়েছে যুববিশ্বকাপ? বাংলাদেশে তা সম্ভব না, ষোলকোটি ক্রিকেট পাগল বাঙালি তা হতেও দেয়নি। নিরাপত্তা শঙ্কা তো দূরে থাক, ছোট খাটো কোন সমালোচনারও সুযোগ দেয়নি বাংলাদেশ। এমন ক্রীড়াবান্ধব পরিবেশ আর দর্শক পেয়ে ক্রিকেটাররাও যেন দিয়েছেন দুহাত ভরে। শুরুতেই ইংল্যান্ডের জুটিতে বিশ্ব কেরর্ড, আসরজুড়ে ব্যাটসম্যানদের রানবন্যা, সাথে ১১টি সেঞ্চুরি, ৬৪টি হাফ সেঞ্চুরিসহ, দুটি হ্যাটট্রিক! এমনই কিছু পরিসংখ্যান দিয়ে গতকাল পর্দা নামলো এবারের যুব বিশ্বকাপের। এগারোতম আসরে এসে দ্বিতীয়বারের মতো সফল আয়োজক হয়ে থাকল বাংলাদেশের নামটি।
একটু বিষদে বলতে গেলে ফেভারিটেদের তুলনায় আন্ডারডগ দলগুলোর চমক ছিলো চোখে পড়ার মত। এমনকি ফাইনালে তিনবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে হারিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম শিরোপা জেতাটাও চমকই বটে। ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের ক্ষেত্রেও রয়েছে চমক। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছেন সেমিফাইনালে না উঠতে পারা ইংল্যান্ডের জ্যাক বার্নহ্যাম। এই ইংলিশ যুবার নামের পাশে রান যোগ হয়েছে ৪২০। ছয় ম্যাচে ছয় ইনিংস থেকে তিন সেঞ্চুরির মারে করেন এ রান। যেখানে তার রান তোলার গড় ৮৪। সমান ম্যাচে সমান ইনিংস থেকে ৩৫৫ রান করে দ্বিতীয় স্থানে আছেন ভারতের সরফরাজ খান। তিনি ৫ হাফসেঞ্চুরিতে এ রান করেন।
এ ছাড়া দুই হাফসেঞ্চুরি ও এক সেঞ্চুরিতে ৩১৫ রান করে ড্যান লরেন্স তৃতীয়, এক সেঞ্চুরি ও এক হাফসেঞ্চুরিতে ২৯৩ রান করা পাকিস্তানের হাসান মহসিন চতুর্থ এবং এক সেঞ্চুরি ও দুই হাফসেঞ্চুরিতে ২৮৫ রান করা সামার স্প্রিঙ্গার হয়েছেন পঞ্চম। সেরা পাঁচে কোনো বাংলাদেশি স্কোরার নেই। এমনকি সেরা দশের একেবারে শেষে রয়েছেন নাজমুল হাসান শান্ত। যিনি এক সেঞ্চুরি ও এক হাফসেঞ্চুরিতে করেছেন ২৫৯ রান।
এদিকে একইভাবে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিও হয়েছেন শেষ চারে উঠতে ব্যর্থ হওয়া আরেক দল নামিবিয়ার ফ্রিৎজ কোয়েটজে। বল হাতে সর্বোচ্চ ১৫ উইকেট নিয়েছেন নামিবিয়ার মিডিয়াম পেসার। ১৪ উইকেট নিয়ে নেপালের সনদ্বীপ লামিচানের নামে জমা হয়েছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট। সমান ১৩টি করে উইকেট পেয়েছেন চারজন। তারা হলেনÑ আয়ারল্যান্ডের ররি অ্যান্ডার্স, ইংল্যান্ডের সাকিব মাহমুদ, ওয়েস্ট ইন্ডিজের আলজারি জোসেফ ও বাংলাদেশের সাইফুদ্দিন। সেরা ১০-এ বাংলাদেশের আরও দুজন বোলার রয়েছেন। তারা হলেনÑ সালেহ আহমেদ শাওন ও অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। দু’জনই নিয়েছেন সমান ১২টি করে উইকেট।
আইসিসি অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ
রোল অব অনার
আসর স্বাগতিক চ্যাম্পিয়ন রানার্সআপ
১৯৮৮ অস্ট্রেলিয়া অস্ট্রেলিয়া পাকিস্তান
১৯৯৮ দ.আফ্রিকা ইংল্যান্ড নিউজিল্যান্ড
২০০০ শ্রীলঙ্কা ভারত শ্রীলঙ্কা
২০০২ নিউজিল্যান্ড অস্ট্রেলিয়া দ.আফ্রিকা
২০০৪ বাংলাদেশ পাকিস্তান উইন্ডিজ
২০০৬ শ্রীলঙ্কা পাকিস্তান ভারত
২০০৮ মালয়েশিয়া ভারত দ.আফ্রিকা
২০১০ নিউজিল্যান্ড অস্ট্রেলিয়া পাকিস্তান
২০১২ অস্ট্রেলিয়া ভারত অস্ট্রেলিয়া
২০১৪ ইউএই দ.আফ্রিকা পাকিস্তান
২০১৬ বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভারত
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন