সিরিজ শুরুর আগে থেকেই নানা চোটে জর্জরিত বাংলাদেশ শিবির। দল ঘোষণার পরও চোটে ছিটকে গেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। শক্তিশালী একাদশ সাজানো নিয়েই হিমশিম খেতে হয়েছে নির্বাচকদের। কোনো রকমে জোড়াতালি দিয়ে চট্টগ্রাম টেস্টে লড়াই করে ড্র এলেও নতুন সঙ্কটে পড়েছে বিসিবি। নাঈম হাসানের আঙুল ভেঙে গেছে। ফলে মিরপুরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ছিটকে গেছেন তিনি। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছে বাংলাদেশ দল। স্কোয়াডে নাঈম ছাড়া আর কোনো বিশেষজ্ঞ অফ স্পিনার নেই। অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে দিয়ে ঠেকা কাজ চালানো সম্ভব। এছাড়া, জাতীয় দলের আশেপাশে এবং বর্তমান হাইপারফরম্যান্স দলে নেই কোনো অফ স্পিনার। ফলে নাঈমের বিকল্প খুঁজতে দ্বিধায় আছেন নির্বাচকরা।
সবশেষ চট্টগ্রাম টেস্টে লঙ্কানদের দ্বিতীয় ইনিংসে চোট নিয়ে খেলে যান নাঈম। প্রথম ইনিংসে ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে ১০৫ রানে ৬ উইকেট নিলেও পরেরবার তিনি কার্যকর হতে পারেননি। তার আলগা ডেলিভারিগুলো থেকে সফরকারীরা আদায় করে নেয় অনেক রান। ২৩ ওভারে ৭৯ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন তিনি। আগের দিন চট্টগ্রামে টেস্ট শেষেই নির্বাচক হাবিবুল বাশার জানিয়েছিলেন, মিরপুর টেস্টে অনিশ্চিত নাঈম। গতকাল ঢাকায় ফেরার পর প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন দিয়েছেন তার খেলতে না পারার দুঃসংবাদ, ‘আরেকটি পরীক্ষার পর জানা গেছে, নাঈম আনুষ্ঠানিকভাবে বাদ পড়েছে পরের টেস্টের দল থেকে। তবে আমরা এখনও তার বিকল্প ঠিক করতে পারিনি।’ টেস্টে প্রত্যাবর্তনে ঝলক দেখানো তরুণ নাঈমের সেরে উঠতে সময় লাগবে লম্বা সময়। ফলে সামনের মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজে বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ সফরেও তার যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। নাঈম বলেছেন, ‘আমার আঙুল ভেঙে গেছে। সারতে সময় লাগবে এক মাসের মতো। তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজেও যাওয়া হচ্ছে না আমার।’
আগামী ২৩ মে থেকে শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। সেখানকার উইকেটে বিবেচনায় নিঃসন্দেহে স্পিননির্ভর বোলিং আক্রমণ সাজাবে বাংলাদেশ। কিন্তু নাঈমকে না পাওয়া বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে দলের জন্য। কারণ, আঙুলের চোটের কারণেই এই সিরিজে খেলতে পারছেন না টেস্ট দলের নিয়মিত মুখ মেহেদী হাসান মিরাজ। তাদের বাইরে গত কয়েক বছরে আর কোনো অফ স্পিনারকে দেখা যায়নি টাইগারদের টেস্ট দলে। নির্বাচকদের বিবেচনায় থাকতে পারে ৩৫ বছর বয়সী শুভাগত হোমের নাম। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি অফ স্পিনেও উইকেটশিকারের সামর্থ্য আছে তার। ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১০৬ ম্যাচে ৩০.৩২ গড়ে ২৩৯ উইকেট নিয়েছেন তিনি। তবে ২০১৬ সালের পর বাংলাদেশের জার্সিতে টেস্ট খেলা হয়নি তার। তাই তাকে স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত করা হবে চমক জাগানিয়া।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম টেস্ট শেষ হওয়ার পরপরই মিরপুর টেস্টের পরিকল্পনা জানিয়ে দেয় শ্রীলঙ্কা। একজন পেসার কমিয়ে স্পিনবান্ধব একাদশ সাজাবে তারা। সংবাদ সম্মেলনে দলের সহ-অধিনায়ক ধনঞ্জয়া ডি সিলভা বলেছিলেন, ‘অবশ্যই একজন পেসার ও তিন স্পিনার খেলবে। উইকেট স্পিনারদের সহায়তা করবে।’
মিরপুর টেস্টের বাংলাদেশ দল : মুমিনুল হক (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, লিটন দাস, ইয়াসির আলি চৌধুরী, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, তাইজুল ইসলাম, ইবাদত হোসেন, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, নুরুল হাসান সোহান, রেজাউর রহমান রেজা ও শহিদুল ইসলাম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন