ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এবার লড়াই হচ্ছে হাড্ডাহাড্ডি। শেষ দিন পর্যন্ত শিরোপা দৌড়ে টিকে আছেন ম্যানচেস্টার সিটি ও লিভারপুল। তবে মাত্র এক পয়েন্টের ব্যবধানে এগিয়ে সিটিজেনরা। শেষ দিনে নির্ধারিত হচ্ছে দুই দলের শিরোপা ভাগ্য। তবে এমন পরিস্থিতিতে প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাস কথা বলছে ম্যানসিটির পক্ষেই।
আজ বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় অ্যাস্টন ভিলাকে স্বাগত জানাবে সিটি। যে দলটির কোচ আবার লিভারপুল কিংবদন্তি স্টিফেন জেরার্ড। কোনোমতে সিটিজেনদের যদি তিনি আটকে দিতে পারেন, আর একই সময়ে হওয়া ওপর ম্যাচে উলভসের বিপক্ষে জয় পায় রেডরা, তাহলে বদলে যেতে পাশার দান। তবে তীরে এসে তরী ডোবার ঘটনা নেই সিটির। ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগ যুগ শুরু পর চলতি মৌসুমের আগ পর্যন্ত শেষ দিনে শিরোপা নিষ্পত্তি হয়েছে আটবার। তাতে এগিয়ে থাকা দলের শিরোপা হাতছাড়া করার রেকর্ড নেই। আর সেখানে সফল দলও ম্যানসিটি। এমনকি লিগের শেষ তিনটি ঘটনার সাক্ষীও তারা। এরমধ্যে আবার দুটি লিভারপুলকে টপকে।
সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনাটি ২০১১-১২ মৌসুমে। সমান ৮৬ পয়েন্ট হলেও নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের গোল ব্যবধানে এগিয়ে ছিল সিটি। তবে সান্ডারল্যান্ডের বিপক্ষে ১-০ গোলে জয় পায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। তখন পর্যন্ত কুইন্সপার্ক রেঞ্জার্সের বিপক্ষে ২-১ গোলে পিছিয়ে ম্যানসিটি। এরপর বাকীটা ইতিহাস। ম্যাচের যোগ করা সময়ে এডেন জেকোর সমতাসূচক গোলে প্রাণ পায় ম্যানসিটি। ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার কয়েক সেকেন্ড আগে মারিও বালেতেল্লির সঙ্গে দেওয়া নেওয়া করে সার্জিও আগুয়েরোর অবিশ্বাস্য এক গোল। তাতে প্রথম শিরোপা জয়ের উল্লাসে মাতে ম্যানসিটি। ক্লাবটির ইতিহাস তখন থেকে যায় পাল্টে।
২০১৩-১৪ মৌসুমেও শেষ দিনে শিরোপা জিতে নেয় সিটি। এবার অবশ্য মৌসুমে অনেকটা সময় লিভারপুল ছিল টেবিলের শীর্ষে। কিন্তু শেষ দুই রাউন্ডে তারা হোঁচট খেলে তাদের টপকে যায় ম্যানসিটি। দুই পয়েন্টের ব্যবধানে এগিয়ে যায় তারা। শেষ দিনে দুই দল নিজ নিজ ম্যাচে জিতলে শিরোপা যায় সিটির ঘরেই। এরপর ২০১৮-১৯ মৌসুমেও সেই এক ঘটনা। এবার ঠিক চলতি মৌসুমের মতোই ইঁদুর-বিড়াল লড়াই চলে। এক পয়েন্টে এগিয়ে ছিল সিটিজেনরা। শেষ দিনে লিভারপুল উলভসকে হারালেও পেপ গার্দিওলার দলও জয় পায় ব্রাইটনের বিপক্ষে।
সিটিজেনদের উত্থানের আগে শেষ দিনে তিনবার শিরোপা জয়ের রেকর্ড রয়েছে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ইউনাইটেডের। ১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে প্রথমবার। নিউক্যাসলের বিপক্ষে দুই পয়েন্টে এগিয়ে ছিল দলটি। শেষ দিনে মিডলসবোরোকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন ইউনাইটেড। অন্যদিকে নিউক্যাসেল ড্র করে টটেনহ্যাম হটস্পারের সঙ্গে। এরপর ১৯৯৮-৯৯ সালে। আর্সেনালের চেয়ে মাত্র এক পয়েন্ট বেশি নিয়ে মাঠে নামে ইউনাইটেড। পিছিয়ে পড়েও ২-১ গোলে টটেনহ্যামকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় দলটি। অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে জিতেও লাভ হয়নি আর্সেনালের। আর ২০০৭-০৮ মৌসুমে চেলসির সমান ৮৪ পয়েন্ট ছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। শেষ দিনে বোল্টনের সঙ্গে ড্র করে চেলসি আর উইগানকে হারিয়ে ইউনাইটেড।
তবে শেষ দিনে দুইবার শিরোপা হারানোর উদাহরণ আছে তাদের। ১৯৯৪-৯৫ তাদের চেয়ে দুই পয়েন্ট বেশি নিয়ে মাঠে নামে ব্ল্যাকবার্ন রোভার্স। শেষ দিনে লিভারপুলের কাছে ২-১ গোলে হেরে যায় তারা। কিন্তু ওয়েস্ট হ্যামের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে ইউনাইটেড। ফলে নাটকীয়ভাবে শিরোপা জিতে ব্ল্যাকবার্নই। এরপর ২০০৯-১০ মৌসুমে চেলসির কাছে শিরোপা হাতছাড়া করে তারা। যদিও শেষ দিনে নামার আগে এক পয়েন্টে এগিয়ে ছিল ব্লুজরাই। আর উইগানকে ৮-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় তারা। তাই স্টোক সিটিকে ৪-০ গোলে হারিয়েও লাভ হয়নি ইউনাইটেডের।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন