দীর্ঘ ১৪ বছর পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে মুখোমুখি হচ্ছে ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশ। সর্বশেষ ২০০৮ সালে এ দুই দেশ মিয়ানমারের গ্র্যান্ড রয়েল চ্যালেঞ্জ কাপে পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছিল। ওই ম্যাচে বাংলাদেশকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল ইন্দোনেশিয়া। এ ম্যাচের পর আর কোন আসরে দেখা হয়নি বাংলাদেশ-ইন্দোনেশিয়ার। তবে একযুগেরও বেশি সময় পড়ে আগামী বুধবার ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। খেলা হবে ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপের বান্দুং শহরে।
বাংলাদেশ জাতীয় দল এই ম্যাচটি খেলছে এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের প্রস্তুতি হিসেবে। এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে দুটি ফিফা প্রীতি ম্যাচ খেলার কথা ছিল লাল-সবুজদের। কিন্তু বাংলাদেশ দলের ফুটবলারদের করোনাভাইরাস টিকার ডোজ সমস্যায় সফরটি বাতিল হয়। এবার এশিয়ান কাপ বাছাই খেলতে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে এ ম্যাচটির আয়োজন করে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের (১৮৮) চেয়ে ২৯ ধাপ এগিয়ে ইন্দোনেশিয়া (১৫৯)। র্যাঙ্কিংই বলে দেয় ঘরের মাঠে আসন্ন প্রীতি ম্যাচে ইন্দোনেশিয়াই ফেভারিট। ম্যাচটি বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের নতুন স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার জন্য একটা পরীক্ষাও। শুধু ইন্দোনেশিয়া ম্যাচই নয়, মালয়েশিয়ার এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের তিন ম্যাচও ক্যাবরেরার জন্য পরীক্ষা। আগামী ৮ থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ‘ই’ গ্রুপে বাংলাদেশ যে তিনটি দেশের বিপক্ষে খেলবে সেই বাহরাইন, তুর্কমেনিস্তান ও স্বাগতিক মালয়েশিয়া র্যাঙ্কিংয়ে আরও এগিয়ে লাল-সবুজদের চেয়ে। তাই ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি নিয়ে একটু ভালো ফল প্রত্যাশা করছেন ফুটবলবোদ্ধারা। যদিও নিজেদের মাঠে ইন্দোনেশিয়া পরিষ্কার ফেভারিট হিসেবেই মাঠে নামবে।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে খুব বেশি ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত এ দুই দেশ মুখোমুখি হয়েছে ৬ বার। যার মধ্যে চারবারই জিতেছে ইন্দোনেশিয়া আর একবার বাংলাদেশ। একটি ম্যাচ ড্র হয়েছে। দুই দেশ প্রথম মুখোমুখি হয়েছিল ১৯৭৫ সালে মালয়েশিয়ায় মারদেকা কাপে। ওই ম্যাচে ইন্দোনেশিয়া জিতেছিল ৪-০ গোলে। ১৯৮৪ সালে ইন্দোনেশিয়ায় এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছিল ২-১ ব্যবধানে। ১৯৮৫ সালে ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দুই ম্যাচের একটিতে হেরেছিল বাংলাদেশ, অন্যটি জিতেছিল। জাকার্তার ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছিল ২-০ গোলে। আর ঢাকার ম্যাচে লাল-সবুজরা জিতেছিল ২-১ ব্যবধানে। বাংলাদেশের পক্ষে এ ম্যাচে গোল করেছিলেন কায়সার হামিদ ও আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু। ওই বছরের এপ্রিলে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত কায়েদ-ই আযম টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ-ইন্দোনেশিয়া ম্যাচ ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল।
ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে ১ জুনের প্রীতি ম্যাচটি শুধু বাংলাদেশ কোচ ক্যাবরেরার জন্যই পরীক্ষা নয়, পরীক্ষা দলের ফুটবলারদের জন্যও। কারণ প্রীতি ম্যাচে ভালো করলে মালয়েশিয়ার এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ফুরফুরে মেজাজে খেলতে পারবেন জামাল ভূঁইয়ারা। এমন ধারণা দেশের ফুটবলপ্রেমীদের। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ৮ জুন নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাহরাইনের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ১১ জুন তুর্কমেনিস্তান ও ১৪ জুন স্বাগতিক মালয়েশিয়ার বিপক্ষে গ্রæপের শেষ ম্যাচ খেলবে লাল-সবুজরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন