‘দুর্নীতি’ ও ‘সন্ত্রাসীদের’ রক্ষার অভিযোগে ৫৭ জন বিচারকে বরখাস্ত করেছেন তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কাইস সাঈদ। এক-ব্যক্তিকেন্দ্রিক শাসন দৃঢ় করার পর প্রেসিডেন্ট দেশটির রাজনৈতিক অবস্থাকে নতুন ছাঁচে গড়ার অংশ হিসেবে এ পদক্ষেপ নিলেন।
বিচারকদের বরখাস্তের ডিক্রি জারি করার কয়েক ঘণ্টা পর এক টেলিভিশন ভাষণে প্রেসিডেন্ট কাইস সাঈদ বলেছেন, তিনি বিচার বিভাগকে নিজ থেকেই শুদ্ধ হতে সতর্ক করেছিলেন। তাদেরকে সুযোগও দিয়েছিলেন। শেষে এ পদক্ষেপ নিয়েছেন।
বরখাস্ত বিচারকদের একজন ইউসেফ বোজাকার এর আগে দেশটির সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের প্রধান ছিলেন। প্রেসিডেন্ট সাঈদ গত ফেব্রুয়ারিতে এ কাউন্সিল ভেঙে দেন।
২০১১ সালে তিউনিয়ায় বিপ্লবের পর থেকে এ কাউন্সিলই বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতার প্রধান নিয়ন্ত্রক ছিল।
এই পদক্ষেপের ফলে সাঈদ বিচারিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ‘শুদ্ধি অভিযানের’ শিকার আরেকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি হলেন বশির আকরেমি। কিছু রাজনৈতিক কর্মী বলেছেন, এই বিচারক ইসলামপন্থী দল এন্নাহাদা দলের খুব ঘনিষ্ট ছিলেন এবং এ দলের বিরুদ্ধে করা বেশকিছু মামলা তিনি স্থগিত করেছিলেন। তবে এন্নাহাদা ও আকরেমি দুজনই এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
প্রেসিডেন্ট সাঈদ ২০১৪ সালের সংবিধানকে স্থগিত করে এবং নির্বাচিত সংসদকে ভেঙে দিয়ে গত জুলাইয়ে দেশটির নির্বাহী ক্ষমতা নিজের হস্তগত করেন।
এর পর থেকে তিনি একটি ডিক্রি জারি করে দেশ শাসন করতে থাকেন। তিনি বলেন, তিউনিসিয়াকে ‘সঙ্কট থেকে বাঁচাতে’ এ পদক্ষেপ নিয়েছেন।
কয়েক বছরের অর্থনৈতিক অস্থিরতা, রাজনৈতিক অসাড়তা ও দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার এ পদক্ষেপ কিছুটা জনসমর্থন পেলেও এখন উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বেকারত্ব ও সরকারি সেবা হ্রাসের কারণে জনগণ তার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন।
স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণও নিয়ে নেয়া প্রেসিডেন্ট সাঈদ বলেছেন, তিনি এ মাসেই একটি নতুন সংবিধান প্রবর্তন করবেন, যার ওপর আগামী জুলাইয়ে গণভোট হবে।
তবে তিউনিসিয়ার শক্তিশালী ইউজিটিবি লেবার ইউনিয়নসহ দেশটির প্রায় সকল রাজনৈতিক দল তার এ উদ্যোগকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
গত সপ্তাহে ইউজিটিটি বলেছে, সরকারী খাতের কর্মীরা ১৬ জুন থেকে ধর্মঘটে যাবে, যা এখন পর্যন্ত সাঈদের ক্ষমতা দখলের জন্য সবচেয়ে বড় সরাসরি চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। সূত্র : আলজাজিরা
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন