খেলাপি ঋণ কমানো নিয়ে নানা আলোচনার মধ্যে গত তিন মাসে অনাদায়ী এই ঋণ বাড়ল আরও ১০ হাজার কোটি টাকা। সব মিলিয়ে মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ ১৩ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা। ২০২০ ও ২০২১ সাল জুড়ে কয়েক দফায় করোনার কারণে ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে কোনো ঋণ পরিশোধ না করে কিংবা সামান্য পরিশোধ করে খেলাপিমুক্ত থাকার সুযোগ ছিল। এ ধরনের বিভিন্ন সুবিধার বেশিরভাগই শেষ হয়েছে গত ডিসেম্বরে। এর পরপরই খেলাপি ঋণ বেড়েছে ব্যাপকভাবে।
মার্চে এসে মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ২৯ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বরে যা ছিল ১৩ লাখ এক হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ বেড়েছে ১০ হাজার ১৬৭ কোটি ৮ লাখ টাকা। এই তিন মাসে ঋণ স্থিতি বেড়েছে ২৭ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা।
কেবল টাকার অঙ্কে নয়, খেলাপি বেড়েছে শতকরা হিসেবেও। সব মিলিয়ে মার্চ শেষে বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ খেলাপি হয়ে গেছে। গত ডিসেম্বর শেষে বিতরণ করা ঋণের ৭ দশমিক ৯৩ ছিল খেলাপি। অর্থাৎ শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ খেলাপি ঋণ বেড়েছে তিন মাসে।
২০২০ সাল থেকে দফায়-দফায় খেলাপিমুক্ত থাকার সুবিধা বাড়ানো হয়। এখন অনেকের ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো গেলেও এক শ্রেণির ব্যবসায়ী ঋণ শোধ করছেন না। ব্যাংকগুলো নানা উপায়ে চেষ্টা করেও তাদের থেকে টাকা আদায় করতে পারছে না। ২০২১ সালে ঋণের ১৫ শতাংশ পরিশোধ হলেও তা নিয়মিত দেখানো হয়। চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত কেউ এ হারে টাকা দিলেও ব্যাক ডেটেও নিয়মিত থাকার সুযোগ দেয়া হয়েছে।
এর আগে ২০২০ সালে এক টাকা না দিলেও কেউ খেলাপি হয়নি। বিশ্বব্যাপী করোনার প্রভাব শুরুর পর ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত প্রথমে এ সুবিধা দেয়া হয়। পরে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পরে সময় বাড়িয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বর করা হয়। ২০২১ সালের শুরুতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, ঋণ পরিশোধ না করে খেলাপিমুক্ত থাকার সুবিধা আর বাড়বে না।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ক্ষতির মুখে পড়ার কথা বলে এরই মধ্যে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত কেউ ঋণ পরিশোধ না করলেও খেলাপি না করার দাবি জানিয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন