মালয়েশিয়ার আইন ও দণ্ডবিধিতে আর ‘বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ড’ বলে কোনো বিষয় থাকছে না। এ বিষয়ে এখন থেকে আদালতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য করা হবে।
এতদিন দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দেশটির আইনে খুন, মাদক পাচার, সন্ত্রাসবাদে সংশ্লিষ্টতা, অপহরণ ও অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রাখার মত অপরাধের শাস্তি হিসেবে ‘বাধ্যতামূলক মৃতুদণ্ডের’ উল্লেখ ছিল। এর অর্থ, যদি আদালত এসবের মধ্যে কোনো একটি বা একাধিক অপরাধের এজাহারভুক্ত আসামিকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত না করতেন, সেক্ষেত্রে দেশটির সংবিধান ও আইন অনুযায়ী আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করতে পারতেন বাদিপক্ষ।
কিন্তু সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে ‘বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ড’ হতে পারে- এমন কোনো মামলার রায়ের ক্ষেত্রে সংবিধানের দোহাই দিয়ে আদালতকে চ্যালেঞ্জ করার পথ বন্ধ হলো। কোনো মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে কি না- এখন থেকে সেটি পুরোপুরি নির্ভর করবে বিচারকের বিজ্ঞতা ও বিচক্ষণতার ওপর। তবে বাদিপক্ষ নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবেন।
শুক্রবার এএফপিকে দেওয়া এক সক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার আইনমন্ত্রী ওয়ান জুনাইদি তুয়ানকু জাফর। গত আট জুন মালয়েশিয়ার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্তটি পাস হয়েছে উল্লেখ করে তুয়ানকু জাফর বলেন, ‘মাদকপাচার, অবৈধ অস্ত্র রাখাসহ যে ১১ টি অপরাধের বিপরীতে এতদিন দেশের আইনে বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ডের বিধান ছিল, তা বাতিল করতে সম্মত হয়েছে মন্ত্রিসভা। এসব মামলার আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে কি না- এখন থেকে তা পুরোপুরি আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে।’
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্বের অল্প যে কয়েকটি দেশে মৃত্যুদণ্ড বাতিল করা হয়েছে, সেসবের কাতারে প্রবেশ করল মালয়েশিয়া। গত মাসে পূর্ব আফ্রিকার দেশ জাম্বিয়া ঘোষণা দিয়েছে, শিগগিরই মৃত্যুদণ্ড বাতিলের পরিকল্পনা করছে দেশটি।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার বক্তব্য- কাউকে মৃতুদণ্ড প্রদান মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘণ। এই দণ্ড বাতিলের দাবিতে বহুদিন ধরে বিশ্বজুড়ে আন্দোলন করছে এসব সংস্থা। সূত্র : এএফপি
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন