শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

অধিক বাঁহাতিতে ‘গাজন নষ্ট’!

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ জুন, ২০২২, ১২:০০ এএম

আগে একটা সময় ছিল, বাংলাদেশ দলে বাঁহাতি ক্রিকেটার পাওয়া যেত কালেভদ্রে। পরে দু’একজন পেলেও ভালো ডান-বাম কম্বিনেশন খুঁজতে ঘাম ঝরাতে হতো নির্বাচকদের। এখন ঠিক যেন উল্টো স্রোত বইছে বাংরাদেশ ক্রিকেটে। ব্যাটসম্যান তো বটেই, বাংলাদেশ দলেই এখন বাঁহাতির ছড়াছড়ি! আর এটিই কি এখন নতুন দুশ্চিন্তার কারণ বনতে যাচ্ছে! টেস্টে বাঁহাতি ব্যাটার দেখলেই অ্যারাউন্ড দ্য উইকেটে এসে কাবু করার চেষ্টা করছেন ডানহাতি পেসাররা। এই দৃশ্য এখন বেশ নিয়মিত। বাংলাদেশের লাইনআপে প্রথম চারজনের মধ্যে তিনজনই বাঁহাতি। এবং কখনো কখনো প্রথম ছয়জনের মধ্যে চারজন থাকেন বাঁহাতি। প্রতিপক্ষও তাই পেয়ে বসে। যেটা দেখা গেছে সম্প্রতি ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও। তবে এটাকে নিয়ে খুব বেশি উদ্বেগের জায়গা দেখেন না নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মিরপুরে দ্বিতীয় টেস্টে কাসুন রাজিতা আর আসিতা ফার্নান্দো দুই ইনিংসেই ধসিয়ে দেন বাংলাদেশের টপ অর্ডার। প্রথম ইনিংসে ২৪ রানে বাংলাদেশ হারায় ৫ উইকেট। যার চারজনই ছিলেন বাঁহাতি। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৩ রানে পড়ে ৪ উইকেট। এরমধ্যে তিনজনই বাঁহাতি। বাঁহাতিদের আউট হওয়ার ধরণ ছিল প্রায় একই। ডানহাতি পেসাররা অ্যারাউন্ড দ্য উইকেটে এসে অ্যাঙ্গেল তৈরি করেছেন, বল ভেতরে ঢুকিয়েছেন। যাতে ভুগে কখনো সিøপে ধরা দিয়েছেন ব্যাটাররা, কখনো এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েছেন তারা। বাঁহাতিদের এই ভোগান্তি দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজেও দেখা গেছে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের আগে এই বিষয়টি খেয়াল করলে তা থেকে বড় কোন উদ্বেগের কারণ পাচ্ছেন না হাবিবুল, ‘ডান হাতি পেসারদের অ্যারাউন্ড দ্য উইকেটে এসে বাঁহাতি ব্যাটারদের বল করার প্রবণতা ভিন্ন একটি বিষয়। আমরা ডেভিড ওয়ার্নারকে স্টুয়ার্ট ব্রডের বিপক্ষে সাম্প্রতিক কালে ভুগতে দেখেছি। আমরা টপ অর্ডারকে ভুগতে দেখছি কিছুটা কিন্তু আবার কেউ কেউ এরমধ্যে রানও করে নিচ্ছে। আমি তাই বলব না এটা উদ্বেগের কারণ। ‘হ্যাঁ এটা একটা বিষয় যে আমাদের টপ অর্ডারে চারজনের মধ্যে তিনজন বাঁহাতি। কিন্তু আপনি যদি দেখেন ম্যাথু হেইডেন আর জাস্টিন ল্যাঙ্গার দুজনেই বাঁহাতি হয়ে ওপেন করে দাপট দেখাতেন। দিনশেষে এটা পারফরম্যান্সের বিষয়। কৌশলগত কোন বদল দরকার হলে টিম ম্যানেজমেন্ট সিদ্ধান্ত নিবে। ব্যাটিং কোচ বাঁহাতিতে ভেতরে ঢোকা বলগুলো নিয়ে নিশ্চয়ই কাজ করবে।’
বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবার বেশ অনভিজ্ঞ পেস আক্রমণ নিয়ে নামতে পারে। চোটের কারণে অনিশ্চিত সাকিব আল হাসানদের বিপক্ষে বরাবর সফল কেমার রোচ। নেই শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। জেসন হোল্ডার নেই বিশ্রামের কারণে। পেস আক্রমণে আছেন আগ্রাসী জেডন সিলস, আলজেরি জোসেফরা। অবশ্য ২০১৮ সালে ৪৩ রানে গুটিয়ে যাওয়ার স্মৃতি থেকে ক্যারিবিয়ানদের যেকোনো পেস আক্রমণেই সমীহ বাংলাদেশের। তবে তাদের নিয়ে বাড়তি ভাবনায় পীড়িত না থেকে নিজেদের নিয়েই ফোকাস করতে চায় দল, ‘আমরা জানি তাদের পেস আক্রমণ ভাল কিন্তু আমরা প্রতিপক্ষের শক্তির কথা ভাবছি না। আমরা আমাদের খেলোয়াড়দের সেরাটা বের করা নিয়ে ভাবছি।’
টপ অর্ডারে ধস ঠেকাতে সদ্য অধিনায়কত্ব ছাড়া মুমিনুল হকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বেশ কয়েক টেস্ট ধরেই রানে নেই তিনি। গত ১৫ ইনিংসে গড় তেরোর নিচে তার। হাবিবুল অবশ্য আশা করছেন নেতৃত্বের ভার কমে যাওয়ায় নির্ভার মুমিনুল ফিরবেন চেনা ছন্দে, ‘আমরা জানি মুমিনুলের মেধা কতখানি। টেস্টে তার সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি আছে। অধিনায়কত্ব সহজ না এটা হয়ত তার উপর প্রভাব ফেলছিল। আমি আশা করি সে তার ছন্দ খুঁজে পাবে কারণ যদি দেখেন অধিনায়কত্ব পাওয়ার আগের ও পরের তার গড়ে একটা বড় তফাৎ হয়েছিল।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে এরমধ্যে অনুশীলন শুরু করেছে বাংলাদেশ দল। নতুন সহ-অধিনায়ক লিটন দাসের নেতৃত্বে গতকাল থেকে তিন দিনের একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলছে দু’দল। যদিও ক্যারিবিয়ান বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশের বিপক্ষে এই ম্যাচে ছিলেন না নতুন আরেক দফায় নেতৃত্ব পাওয়া সাকিব আল হাসান। যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটিয়ে আজই দলে যোগ দেবার কথা তার। অ্যান্টিগায় বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম টেস্ট শুরু হবে ১৬ জুন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন