এবারও নিজের ছন্দ খুঁজে পেলেন না মুমিনুল হক। সদ্য সাবেক টেস্ট অধিনায়ক ফিরেছেন রানের খাতা খোলার আগেই। তরুণ মাহমুদুল হাসান জয়ও ফের শূন্যের বৃত্তে বন্দি। তামিম ইকবাল আর নাজমুল হোসেন শান্ত রান না পেলে চরম বিব্রতকর এক পরিস্থিতিতেই পড়তে হতো বাংলাদেশ দলকে। প্রস্তুতি ম্যাচে নেমে যে বাকি ব্যাটসম্যানদের হতশ্রী দশা! গতপরশু রাতে অ্যান্টিগার কল্ডিজ ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশের বিপক্ষে তামিমই টেনেছেন দলকে। আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিনে বাংলাদেশ তুলেছে ৬ উইকেটে ২৭৪ রান। ওপেন করতে নামা অভিজ্ঞ তামিম অপরাজিত ছিলেন ১৪০ রানে। তিনে নেমে শান্ত করেন ৫৪ রান। বাকিদের মধ্যে দুই অঙ্কের ঘরে গেছেন কেবল আহত হয়ে মাঠ ছাড়া ইয়াসির আলি (১১)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের দলটি ছিল একেবারেই আনকোরা। তেমন কোন বড় নাম ছিল না তাদের দলে। নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে টস করতে যান লিটন দাস। আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক। ইনিংসের একদম দ্বিতীয় ওভারেই বিপর্যয়। জেরিমাহ লুইসের বলে খোঁচা মেরে কোন রান না করে সিøপে ক্যাচ দেন জয়। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে জমে উঠে তামিম-শান্তর জুটি। দুজনে মিলে খেলা করে দেন সহজ। ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে ফিফটি তুলে নেন শান্ত। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আগের টেস্টে দুই ইনিংসেই শূন্য রানে আউট হওয়া তামিম ছিলেন দারুণ দাপুটে। থিতু হতে সময় নেননি, থিতু হয়েও ধৈর্যহারা হননি। ১৪০ রানের জুটির পর প্রেস্টন ম্যাকসুইনের বলে শান্ত ৫৪ রান করে বিদায় নিলে ধাক্কা খায় সফরকারী ইনিংস।
সদ্য নেতৃত্ব হারানো মুমিনুল টিকেছেন কেবল ৬ বল। অফ স্পিনার ব্রায়ান চার্লসের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কোন রান না করেই। দারুণ ছন্দে থাকা অধিনায়ক লিটনও এদিন ব্যর্থ। ১৯ বল খেলে এক বাউন্ডারি ৪ রানেই তাকে থামান লুইস। দুই অঙ্কে যাওয়া ইয়াসির মাঠ ছাড়েন আহত হয়ে। মেহেদী হাসান মিরাজ ২৭ বলে ৭ রান করে শিকার হন জুমেল ওয়ারিকনের বাঁহাতি স্পিনে। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের সঙ্গে দিনটা পার করেন তামিম। ২৪০ বলে ১৯ চার, ১ ছক্কায় ১৪০ রানে ক্রিজে থেকে একাই ভরসা দিচ্ছেন তিনি।
খুব ভালো না হলেও এই প্রস্তুতি ম্যাচটি বাংলাদেশ দলের ব্যাটারদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলবে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ দলের অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কন্ডিশন উপমহাদেশের চেয়ে ভিন্ন। এই ম্যাচ দিয়ে কন্ডিশনের সাথেও দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপারেও আশাবাদী দীর্ঘ দিন পর দলে ফেরা এই অলরাউন্ডার, ‘২-৩ দিন ফিটনেস ট্রেনিং করেছি, আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। তিনদিনের একটা প্রস্তুতি ম্যাচ হচ্ছে যেটা আমাদের জন্য ভালো একটা সুযোগ; ব্যাটাররা এখান দারুণ আত্মবিশ্বাস অর্জন করছে। তামিম ভাই খুবই ভালো ব্যাটিং করছেন। শান্তও ভালো ব্যাটিং করেছে। তাই আমি মনে করি ব্যাটারদের জন্য ভালো একটা প্রস্তুতি ছিল। প্রথম টেস্টের আগে প্রস্তুতি ম্যাচটা আমাদের ভালো সহায়তা করবে।’
আবহাওয়া ও পরিবেশ তো ভিন্ন বটেই, দক্ষিণ এশিয়ার চেয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের উইকেটের আচরণগুলোও ভিন্ন। মোসাদ্দেক মনে করছেন, প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে বলের গতিবিধি আর আচরণ বুঝতে সুবিধা হবে ব্যাটারদের, ‘বিশেষ করে এখানকার কন্ডিশন বাংলাদেশ থেকে একটু ভিন্ন। বল একটু বেশি মুভমেন্ট থাকে, উইকেট ও বাংলাদেশ থেকে সাধারণত বাউন্সি হয়। প্রস্তুতি ম্যাচটা তাই সবদিক থেকে আমাদের কাজে দেবে। ব্যাটাররা আত্মবিশ্বাস নিতে পারবে এখান থেকে।’
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৮২.৫ ওভারে ২৭৪/৬ (তামিম ১৪০*, জয় ০, শান্ত ৫৪, মুমিনুল ০, লিটন ৪, ইয়াসির আহত অবসর ১১,মিরাজ ৭, মোসাদ্দেক ৬* ; ম্যাকসুইন ১/৪৯, লুইস ২/৪৪, মিন্ডলে ০/২০, আর্চিবল্ড ০/৩২, চার্লস ১/৫৭, চেইস ০/১৭, ওয়ারিক্যান ১/২৮, কারাইয়া ১/১৫) প্রথম দিন শেষে
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন