শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

বৃহত্তর স্বার্থে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ: প্রতিমন্ত্রী শামসুল

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ জুন, ২০২২, ৭:১৪ পিএম

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেছেন, বৃহত্তর স্বার্থ ও অবদান বিবেচনা করে অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। বুধবার (১৫ জুন) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত প্রস্তাবিত বাজেট পরবর্তী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সব সরকারের আমলেই কিছুটা ছাড় দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ অর্থনীতির মূলধারায় আনার সুযোগ দেয়া হয়েছ। এতে ভালো পরিমাণ টাকা অর্থনীতির মূলধারায় এসেছে ও ভালো রাজস্ব আদায় হয়েছে।

ড. শামসুল আলম বলেন, অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করার সুযোগ দেয়ায় অনেকে সমালোচনা করেন। যে অর্থনীতিবিদরা সমালোচনা করেন তারাও এই অপ্রদর্শিত অর্থকে নির্দিষ্ট পরিমাণ কর দিয়ে অর্থনীতির মূলধারায় আনার সুযোগ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ২০০১ সাল থেকে আমরা দেখেছি, যে সরকারগুলো ক্ষমতায় এসেছেন তারা কর প্রণোদনা দিয়ে অপ্রদর্শিত টাকা অর্থনীতির মূলধারায় আনার প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছেন। এর ফলে আমরা কয়েকশ কোটি টাকা রাজস্ব আসতে দেখেছি। কখনো কখনো চার-পাঁচ হাজার কোটি টাকা এবং সর্বশেষ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা সাদা হয়েছে এই সরকারের আমলে। এটা মোটেই নগন্য পরিমাণ না।

কৃষি খাতে ভর্তুকি দেয়া হয়েছে ৯ হাজার কোটি টাকা। কাজেই ১০ হাজার কোটি টাকা যদি মূলধারায় আসে, সেটাকে একেবারেই কম বলা যাবে না। অনেক মন্ত্রণালয়ের মোট বাজেটই ১০ হাজার কোটি টাকা। কাজেই কিছুটা ছাড় দিয়ে হলেও যদি অপ্রদর্শিত অর্থ মূলধারায় আনা হয়, সেক্ষেত্রে অর্থনৈতিকভাবে অবদান রাখার সুযোগ সৃষ্টি হয়।

সব সরকারই সেটা গণতান্ত্রিক সরকার, এমনকি তত্ত্ববধায়ক সরকার বা ২০০৭-০৮ সময়ে যে সরকার ছিলো তারাও ছাড় দিয়েছে। এর আগে ২০০১ থেকে ২০০৬-০৭ সময়ে যে সরকার ছিলো তারাও দিয়েছে। সে ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারও কয়েকবার ছাড় দিয়েছে, যাতে অপ্রদর্শিত অর্থ মূলধারায় চলে আসে।

অর্থনীতিতে যখন টাকার প্রবাহ বেশি প্রয়োজন, তখন এই সুযোগগুলো দেওয়া হচ্ছে। এই সুযোগ ক্রমান্বয়ে সীমিত হয়ে আসবে। সবাইকে যথাযথ ট্যাক্সের আওতায় নিয়ে আসার প্রচেষ্টা আরও জোরদার করতে হবে। তবে যা দেওয়া হয়েছে, তা অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে।

সভায় শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা ছাড় দিয়ে কালো টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়ার যে দাবি জানান, এ সময় তার সঙ্গেও একমত পোষণ করেন প্রতিমন্ত্রী।

 

আলোচনা সভায় বিএমবিএর সভাপতি ছায়েদুর রহমান ৫ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত আয় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়ার দাবি জানান। এরই প্রেক্ষিতে শামসুল আলম বলেন, আমি আপনাদের কথায় একমত। আমি সুযোগ পেলে, (পরে) বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো। এর আগে, বিএমবিএর পক্ষ থেকে আলোচনা সভায় পাঁচটি দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে- তালিকাভুক্ত ও তালিকাবিহীন কোম্পানির মধ্যকার করহারের ব্যবধান কমপক্ষে ১৫ শতাংশ করা। প্রস্তাবিত বাজেটে মার্চেন্ট ব্যাংকের করহার সাড়ে ৩৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ২৭ শতাংশ করা হয়েছে। এটা আরও কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা। লভ্যাংশ দেয়ার সময় ১০ শতাংশ হারে অগ্রিম কর কাটা হয়। পরবর্তীতে আবার লভ্যাংশ পাওয়া বিনিয়োগকারীর ব্যক্তিগত আয়কর রির্টানের সময় তার ওপর প্রযোজ্য হারে কর দিতে হয়। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা লভ্যাংশ না নিয়ে রেকর্ড ডেটের (তারিখ) আগেই বিক্রি করে দেয়, যা বাজারকে অস্থির করে। তাই অগ্রিম করটিকে চূড়ান্ত কর হিসাবে বিবেচনা করতে হবে। তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাট হার ১০ শতংশ করা এবং পাঁচ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন