ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণগ্রস্ত গ্রাহকদের ঋণের দায় এড়াতে বড় অঙ্কের সুদ মওকুফ সুবিধাসহ ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়ালো বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল বৃহস্পতিবার একটি সার্কুলার জারি করে এতথ্য জানানো হয়েছে।
‘এককালীন এক্সিট’ নামে সার্কুলারে বলা হয়, বিভিন্ন আবেদন পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, এককালীন এক্সিট নীতিমালা অনুযায়ী, নির্ধারিত সময় গত ৩০ এপ্রিলের মধ্যে আবেদন দাখিল করতে না পারায় ঋণ সমন্বয়ের সদিচ্ছুক অনেক গ্রাহক তাদের মন্দমানে শ্রেণিকৃত ঋণ সমন্বয় করতে পারছেন না। এ অবস্থায় গ্রাহকদের ঋণ পরিশোধের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ আদায় ও তারল্য পরিস্থিতির উন্নতির লক্ষ্যে এক্সিট সুবিধার আবেদন দাখিলের সময়সীমা আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হলো। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রাপ্ত আবেদনগুলো আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে।
এর আগে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট বা অন্য কোনও কারণে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের যেগুলো অস্তিত্ব সংকটে বা বন্ধ হওয়ার উপক্রম অবস্থায় আছে, তাদের ঋণ দায় শোধ করতে এ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলে সার্কুলারে জানিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
ওই সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়, এককালীন বা সর্বোচ্চ এক বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধের শর্তে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণগ্রাহকরা সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ সুদ মওকুফ সুবিধা পাবেন। এ সুবিধা নিতে হলে আগামী ৩১ জুলাইর মধ্যে সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে ঋণের সর্বশেষ স্থিতির কমপক্ষে ২ শতাংশ ‘ডাউনপেমেন্ট’ দিয়ে আবেদন করতে হবে। এ সার্কুলার জারির আগে কোনও ঋণ কিস্তি বা অংশ বিশেষ পরিশোধ করে থাকলে, তা ‘ডাউনপেমেন্ট’ হিসেবে গণ্য হবে না। সার্কুলারে আরও বলা হয়, জাল-জালিয়াতি বা কোনও ধরনের প্রতারণা বা অনিয়মের মাধ্যমে নেওয়া ঋণের ক্ষেত্রে এ সুবিধা মিলবে না। সার্কুলারে বলা হয়েছে, চাইলে সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ এমন গ্রাহককে ঋণের আরোপিত সুদের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ মওকুফ করতে পারবে।
এর বাইরে অনারোপিত সুদ বা অন্য কোনও জরিমানা বা চার্জ বা ফি মওকুফ করতে পারবে। তবে কোনোভাবেই মূল ঋণ বা ঋণের আসল অর্থ মওকুফ করতে পারবে না। ঋণ প্রদানের দিন থেকে ঋণ সমন্বয় বা পুরো আদায়ের দিন পর্যন্ত আদায়যোগ্য অর্থের ওপর ‘কস্ট অব ফান্ড’ সুদ (ইসলামি শরিয়াহ মাফিক অর্থায়নের ক্ষেত্রে মুনাফা) আরোপ করতে পারবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান। সম্পূর্ণরূপে পরিশোধ না করা পর্যন্ত এ ঋণ ‘শ্রেণিকৃত’ বা খেলাপি হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন