শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যবসা বাণিজ্য

গফরগাঁওয়ে শীতের আমেজ লেপ বিক্রির ধুম

গফরগাঁও থেকে মুহাম্মদ আতিকুল্লাহ | প্রকাশের সময় : ২৪ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

গফরগাঁও উপজেলার ১৫টি  ইউনিয়নে ইতোমধ্যেই শীত নামতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে আগমনী সঙ্কেত পাওয়া যাচ্ছে। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত কুয়াশা পরিলক্ষিত হয়। গত প্রায় এক মাস যাবৎ এ অঞ্চলে আবহাওয়ার যে পরির্বতন তাই মূলত আসন্ন শীতকে স্বাগত জানিয়েছে। দিন দিনে কুয়াশার পরিমাণ অনেকটা বৃদ্ধি পাচ্ছে । রাতে তাপমাত্রাও ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। শীত মৌসুমকে সামনে রেখে এ অঞ্চলে ইতোমধ্যেই নানা ধরনের প্রাক-প্রস্তুতি চলছে আগাম ধুমধামে। অনেকে শীতের কথা মনে রেখে ইতোমধ্যেই লেপ-তোষক বানানোর চিন্তা করছেন। কেউবা আবার আগাম অর্ডার দিয়েছেন। লেপ-তোষক তৈরির কারিগররাও ক্রমশ ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। গফরগাঁও নতুন বাজারের মেসার্স বেডিং স্টোরের মালিক মো: ইদ্রিস আলী জানান, শীত ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে লেপ-তোষক বিক্রি বেড়ে গেছে। গতবারের তুলনায় এবার কিছুটা দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ৭-৮ মাস কর্মহীন থাকার পর আসন্ন শীত মৌসুম প্রাক্কালে তারাও প্রস্তুত হচ্ছেন। ১০-১৫ দিন পর অবশ্য তাদের ব্যস্ততা আরো বেড়ে যাবে। নিম্ন শ্রেণীর লোকজনদের শীত কাটানোর একমাত্র সম্বল হচ্ছে পুরান কাপড় দিয়ে তৈরি হয় গ্রামবাংলার নকশীকাঁথা। এখন থেকে তারা তাদের কাঁথা বানানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। গ্রাম-গঞ্জে, বিভিন্ন বাড়িঘরে পরিলক্ষিত হয়, অসহায় মহিলারা পুরনো কাপড় সংগ্রহ করে দিন-রাত পরিশ্রম করে কাঁথা তৈরি করছেন। একজন ভিক্ষুক মহিলা ইনকিলাবকে জানান, ‘ভাইরে আমাদের কপালে কি লেপ-তোষক জুটবে’? আমরা সারা দিন বিভিন্ন
বাড়ি ঘুরে ঘুরে চাল সংগ্রহ করি। এতে করে আমাদের সংসার চলে। তাই আমাদের কপালে লেপ-তোষক জুটবে না। শীতের সঙ্গে সম্পর্ক আছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী ‘ভাপা পিঠা’। গ্রাম-গঞ্জে বাড়ি বাড়ি ভাপা পিঠার আয়োজন ছাড়াও বিভিন্ন সড়কের মোড়ে মোড়ে শীতের কুয়াশায় সকালে ভাপা পিঠার আছে দারুণ কদর। শীতের অন্যান্য পিঠারও কদর আছে গ্রামবাংলার সর্বত্র। আর মাত্র কয়েক দিন পর পুরোদমে চলতি মৌসুমের আমন ধান কাটার ধুম পড়ে যাবে। পরে জামাইদের গ্রামাঞ্চলে নতুন ধানের শীতের পিঠা খাওয়ানোর জন্য পিঠার দাওয়াত দেয়ার রেওয়াজ এখনও চালু আছে সর্বত্র। শীত মৌসুমকে সামনে রেখে গ্রামবাংলার খেজুরগাছে কলসী পাতা শোভা পাচ্ছে। শীত মৌসুমের সঙ্গে এ অঞ্চলের ইসলাম ধর্মভীরু লোকজন ইসলামী সম্মেলন, ধর্ম সভা বা ধর্মীয় অনুষ্ঠান করার জন্য এলাকায় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করতে শুরু করে দিয়েছে বলে পরিলক্ষিত হয়। এ অঞ্চলে ইসলামী সভা শীতকালে বেশি হয়ে থাকে। এছাড়া শীতের সাথে গফরগাঁও শহর, গ্রাম-গঞ্জে শিল্প সংস্কৃতির যোগাযোগ সুগভীর। মূলত সাংস্কৃতিক তৎপরতা শীতকালে বেশি হয়। আবহাওয়া শুকনো থাকার কারণে এবং শীতের আমেজের সময় সাংস্কৃতিক কর্মকা- বেশি। তাই অন্যান্য বছরের মতো এবার গফরগাঁওয়ের  গ্রাম-গঞ্জে সাংস্কৃতিক কর্মীরা তৎপর হয়ে উঠেছেন। শীতকালে খেলাধুলার উৎকৃষ্ট মৌসুম। তাই এ অঞ্চলের ক্রীড়ামোদীরা আসন্ন মৌসুমে তাদের কার্যক্রম প্রণয়নে ব্যস্ত। পোশাক ব্যবসায়ীরাও  বসে নেই। শীত মৌসুম সামনে রেখে পুরনো ও নতুন কাপড় বিক্রির জন্য মজুদ করে নিচ্ছে, যাতে করে শীতের শুরুতে চড়া দামে বিক্রি করতে পারে। সব মিলিয়ে শীত শুরুর এ দিনগুলোতে গ্রাম-গঞ্জে চলছে নতুন এক মৌসুম বরণ করে নেয়ার প্রস্তুতি। দেখার মতো প্রস্তুতি নিচ্ছে আসন্ন শীত মোকাবেলা করার জন্য ।   

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন