আর্জেন্টিনা থেকে বিপুল পরিমাণে সয়াবিন তেল আমদানি করে বাংলাদেশ। দেশটি থেকে আমদানিতে গত এক মাসে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম অনেকটাই কমেছে। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) হিসাব বলছে, গত বুধবার আর্জেন্টিনায় অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের টনপ্রতি দাম ছিল ১ হাজার ৪৬৪ ডলার, যা এক মাস আগে ১ হাজার ৯৭০ ডলার ছিল। সে হিসেবে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম এক মাসের ব্যবধানে প্রায় ২৬ শতাংশ কমেছে।
শুধু সয়াবিন তেল নয়, বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বাড়ার যে প্রবণতা তৈরি হয়েছিল, তা এখন কমতে শুরু করেছে। এটা বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটি সুখবর। কারণ, বিদেশ থেকে আমদানি করেই এসব পণ্যের বড় অংশের চাহিদা মেটানো হয়। কয়েক মাস ধরে ধারাবাহিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশের মূল্যস্ফীতিও অনেকটা বেড়ে গেছে। সংসারের ব্যয় বেড়ে ব্যাপক সংকটে পড়েছে সীমিত আয়ের মানুষ। বিশ্ববাজারে দামের পড়তির ধারার প্রভাব পড়ছে দেশের বাজারেও। পাইকারি বাজারে কিছু কিছু পণ্যের দাম কমেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য মোস্তফা আবিদ খান বলেন, বিশ্ববাজারে দাম কমেছে, এটা ভালো খবর। সমস্যা হলো দেশে ডলারের দাম বেড়ে গেছে। এখন বিশ্ববাজারের দাম, ডলারের দর ও জাহাজভাড়া মিলিয়ে দেশে আনার খরচ কত, তা পর্যালোচনা করতে হবে এবং দেশে সে অনুযায়ী প্রভাব পড়ল কি না, সেটা দেখতে হবে।
সয়াবিন তেলের মতো কমেছে পাম তেলের দামও। যে অপরিশোধিত পাম তেলের দাম টনপ্রতি ১ হাজার ৬৯০ ডলারে উঠেছিল, বুধবার তা নেমে আসে ১ হাজার ২৩০ ডলারে। এক মাসে দাম কমেছে ২৭ শতাংশ।
ব্যবসায়ীদের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে কোম্পানি ও সরবরাহের সময়ভেদে প্রতি লিটার পাম তেলের দাম কমেছে ৮ থেকে ১৬ শতাংশ। ১ জুন একটি কোম্পানির পাম তেলের দাম ছিল লিটারপ্রতি ১৫৩ টাকা, যা ১৪১ টাকায় নামে। আরেকটি কোম্পানি ১৫ দিন পরে সরবরাহের ক্ষেত্রে পাম তেলের সরবরাহ আদেশ (এসও) বিক্রি করছে লিটারপ্রতি ১২০ টাকা দরে। খাতুনগঞ্জের ২২ দিনে সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ৭ টাকা কমেছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সয়াবিন তেল আমদানি করতে সময় লাগে ৪০ দিনের মতো। তবে পাম তেল আসে ১৫ দিনের মধ্যে। ফলে পামের দাম বেশি কমেছে।
তবে ব্যবসায়ীরা মনে করেন, বিশ্ববাজারে দাম কমতির দিকে থাকায় এটা আশা করা যায় যে দেশেও কমবে। তবে কোম্পানিগুলো কমাচ্ছে কি না, সেদিকে সরকারি নজরদারি দরকার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন