শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

ভোগে নয়, ত্যাগেই সুখ মানের

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০২২, ১২:০০ এএম

সাফল্য, খ্যাতি, প্রাচুর্যে যখন ভরে যায় জীবন, অতীতকে তখন ভুলে যান অনেকে। কেউ স্বে”ছায়, কেউ বা অজান্তে। কিš‘ পিছিয়ে থাকা জনপদে কঠোর দারিদ্রতার মধ্যে বেড়ে ওঠা সাদিও মানে নিজের অতীত ভুলতে পারেননি কখনও। বরং মানুষের পাশে থাকাটাকেই জীবনের ব্রত হিসেবে নিয়েছেন সেনেগালের এই ফুটবলার।
সদ্য লিভারপুল থেকে বায়ার্ন মিউনিখে পাড়ি দেওয়া মানে কখনও বিলাসবহুল গাড়ি-বাড়ির দিকে ছোটেননি। ফুটবল খেলে অর্থ উপার্জন করছেন দুহাত ভরে। সবসময় চেয়েছেন, তার আশপাশের মানুষ যেন এর সুবিধা কিছুটা হলেও পায়। মুখে হাসি নিয়ে থাকতে পারে। মানে তার ৬ বছরের লিভারপুল অধ্যায়ে জিতেছেন সম্ভাব্য প্রায় সব কিছু। নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে এবার পা রেখেছেন বুন্ডেসলিগার দল বায়ার্ন মিউনিখে। দলবদলের আগে যিনি বলেছিলেন, সেনেগালের মানুষের কথা শুনে লিভারপুলে থাকা বা না থাকার সিদ্ধান্ত নেবেন।
আসলে মানের হৃদয়ে সঙ্গে মিশে আছে সেনেগালের মানুষ। বিশেষ করে যে অঞ্চল থেকে উঠে এসেছেন তিনি, সেখানকার লোকজন। মানের জন্মশহর বাম্বালি উত্তর আফ্রিকার পশ্চিমপ্রান্তের খুবই ছোট্ট একটি শহর। দারিদ্রপীড়িত এই শহরে মাত্র ২ হাজার মানুষের বাস। কাসামান্স নদীর তীরবর্তী মানের গ্রামটি রাজধানী থেকে ৭ ঘণ্টার দ‚রত্বে অব¯ি’ত। ম‚লত এখানকার মানুষের পেশা মাছ ধরা। পাকা কোনো রাস্তা নেই, মানুষের মাঝেই গরু-ছাগল ঘুরে বেড়ায় সেখানে। শহরে একটা হাসপাতাল না থাকায় নারীরা নিজ ঘরেই সন্তান প্রসব করতেন।
গ্রামটির আরও অনেকের মতো মানের বাবাকেও পৃথিবীর মায়া ছাড়তে হয় পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা না পেয়ে। পরে নিজ গ্রামে হাসপাতাল নির্মাণ করেছেন মানে। তৈরি করেছেন স্কুলও, যে স্কুলে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে একটি করে ল্যাপটপ দেওয়া হয়।
নতুন একটি গ্যাস স্টেশনেও অর্থায়ন করেছেন মানে। একটি স¤প্রদায়ের সমস্ত শিশুদের মাঝে ক্রীড়াসামগ্রী দান করেছেন। ডাকঘর, খেলার মাঠও গড়ে দিয়েছেন। এমনকি একটি শহরের জন্য ৪জি নেটওয়ার্কের ব্যব¯’াও করেছেন।
সেনেগালের এই অতিদরিদ্র অঞ্চলের সবাইকে প্রতি মাসে ৭০ ইউরো দিয়ে থাকেন মানে। মানে এভাবেই মানুষের পাশে থেকেই আনন্দ খুঁজে পান, ‘আমার অভিনব গাড়ি, বিলাসবহুল বাড়ি, ভ্রমণ এবং বিমান দেখানোর দরকার নেই। জীবন আমাকে যা দিয়েছে, আমার লোকেরা তার কিছুটা হলেও পাবে-এটাকেই প্রাধান্য দেই আমি।’ ২০১৯ সালে ঘানাইয়ান একটি আউটলেটেও মানের সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছিল তার এই গভীর জীবন বোধ, ‘আমি কেন ১০টি ফেরারি (গাড়ি), ২০টি ডায়মন্ডের ঘড়ি বা দুটি বিমান চাইব? এই জিনিসগুলো আমার এবং বিশ্বের জন্য কী কাজে আসবে? আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম এবং একসময় মাঠে কাজ করতাম। কঠিন সময়ে আমাকে টিকে থাকতে হয়েছে, আমি ফুটবল খেলেছি খালি পায়ে। আমার লেখাপড়ার সুযোগ এবং আরও অনেক কিছু ছিল না। কিš‘ আজ ফুটবলের মাধ্যমে যা উপার্জন করি তা দিয়ে মানুষের সাহায্য করতে পারি।’

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন