বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

বরিশাল মহানগরীর ৭টি মজাখাল সংস্কার ও সৌন্দর্য বর্ধনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১০ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নে নগর ভবনের আপত্তি

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০২২, ১০:২৮ এএম

বরিশাল মহানগরীতে প্রবাহিত ৭টি মজাখাল ১০ কোটি টাকা ব্যায়ে সংস্কার ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প বাস্তবায়নে সিটি করপোরেশনের আপত্তির প্রেক্ষিতে কিছুটা বিপত্তি সৃষ্টি হলেও তা এগিয়ে নিয়ে যাবার কথা বলেছেন বোর্ড কতৃপক্ষ। পানি উন্নয়ন বোর্ড-এর প্রস্তাবনায় পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সুপারিশে নগরীর জেল খাল, সাগরদী খাল, চাঁদমারি খাল, ভাটার খাল, আমানতগঞ্জ খাল, পলাশপুর খাল ও রূপাতলী খাল সংস্কার সহ সৌন্দর্য বর্ধনে পরিকল্পনা কমিশন প্রায় ১০ কোটি টাকা বরাদ্ব প্রদান করেছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পটির প্রথম পর্যায়ে ৭ কোটি টাকা ব্যায়ে খালগুলোর ১৮. ৯০ কিলোমিটার এলাকা পুণঃ খনন ও সংস্কারের দরপত্র আহবান করে তা মূল্যায়ন পর্যায়ে রয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরিশাল পরিচালন ও রক্ষনাবেক্ষন বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।
আর্থিক ও কারিগরি মূল্যায়ন শেষে আগামী মাসেই এসব খাল সংয়স্কারে ঠিকাদারকে কার্যাদেশ প্রদান করা হতে পাড়ে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে। আগামী অর্থ বছরের মধ্যেই নগরীর ১৯ কিলোমিটার খাল সংস্কারের পরে তার দু পাশে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যায়ে ওয়াকওয়ে নির্মান সহ সৌন্দর্য বর্ধনে ভিন্ন দরপত্র আহবানের কথাও জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। যা আগামী বছরের ডিসেম্বর থেকে ২০২৪-এর মার্চের মধ্যে শেষ করার কথা রয়েছে। এসব খালের দুপাশে ওয়াকওয়ে সহ বিশ্রামের জন্য বেঞ্চ নির্মান করা হবে।
তবে নগরীর এসব খালসমুহ সংস্কার ও সৌন্দর্য বর্ধনের প্রকল্পটি নিয়ে আপত্তির কথা জানিয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়ে পরবর্তি কার্যক্রম বন্ধ রাখতেও বলা হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে বিষয়টি নিয়ে তাদের অবস্থান পরিস্কার করে সিটি করপোরেশনকে জবাবও দেয়া হয়েছে বরে জানা গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তরফ থেকে নগরীর ৭টি খাল সংস্কার ও সৌন্দর্য বর্ধন প্রকল্পটি বোর্ডের অনুমোদনের পরে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় হয়ে পারিকল্পনা কমিশনের অনুমোদন অনুযায়ী তা বাস্তবায়নের বিকল্প নেই বলে জানান হয়েছে।
উল্লেখ্য, বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক নগর পরিষদের পক্ষ থেকে নগরীর একাধীক খাল সংস্কারে প্রায় সোয়া ২শ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্পÑপ্রস্তাবনা, ডিপিপি দাখিলের পরে তা পরিকল্পনা কমিশন থেকে ফেরত দেয়া হয়েছিল। বর্তমান নগর পরিষদ দায়িত্ব গ্রহনের পরে নগরীর ছোট বড় ৩৬টি খাল খনন, সংস্কার ও সৌন্দর্য বর্ধনে প্রায় ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকার আরেকটি ডিপিপি দাখিলের পরে পরিকল্পনা কমিশন থেকে তা অনুমোদন না করে প্রথম পর্যায়ে খালের সংখ্যা কমিয়ে প্রকল্প ব্যায় অর্ধেক করতে সিটি করপোরেশনকে দিক নির্দেশনা প্রদান করে। পাশাপাশি নিবন্ধিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পুরো প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা সমিক্ষা সহ নকশা প্রনয়নেরও নির্দেশনা প্রদান করা হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে পরিকল্পনা কমিশনের গাইড লাইন অনুসরন না করেই পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রকল্পব্যায় দ্বিগুনেরও বেশী বৃদ্ধি করে ২ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকার একটি ডিপিপি দাখিল করেন। ফলে তা আর পরিকল্পনা কমিশনের বিবেচনাই লাভ করেনি। উপরন্তু মন্ত্রনালয় ও পরিকল্পনা কমিশন থেকে অসন্তোষ প্রকাশ করে ডিপিপি’টি ফেরত পাঠায় বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
এরপর থেকে বরিশাল মহানগরীর খাল সমুহের উন্নয়ন সহ সংস্কার কাজের আর কোন গতি নেই। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রাথমিকভাবে নগরীর যে ৭টি খাল সংস্কার সহ সৌন্দর্য বর্ধনের পদক্ষেপ গ্রহন করেছে, সে ব্যাপরে আপত্তি জানিয়ে নগর ভবন থেকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা জানান হয়েছে।
এব্যাপারে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মো. ফারুক আহমেদ জানান,‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্পভ’ক্ত ৭টি সহ নগরীর ৪৬টি খাল খনন ও সংস্কারে ২৬শ কোটি টাকার একটি ডিপিপি পরিকল্পনা কমিশনের আর্থিক ও কারিগড়ি কমিটির মূল্যয়ন শেষে এখন একনেক-এর বিবেচনার জন্য রয়েছে। এ প্রেক্ষিতেই পানি উন্নয়ন বোর্ডকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের আগে সিটি করপোরেশনের সাথে কথা বলে সমন্বয়ের কথা বলা হয়েছে। প্রকল্প বাতিল করতে বলা হয়নি বলেও জানান তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন