তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যারা সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে লালন-পালন করে, সাম্প্রদায়িকতাকে নিয়ে রাজনীতি করে দেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিনত করতে চায় তাদের বর্জন করুন। তিনি শুক্রবার নগরীর প্রবর্তক মোড়ে ইসকনের উদ্যোগে আয়োজিত রথযাত্রা উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ দাশ ব্রহ্মচারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান, চট্টগ্রামস্থ ভারতীয় সহকারী হাই-কমিশনার ডা. রাজীব রঞ্জন ও ইসকন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারী।
মন্ত্রী বলেন, রথযাত্রা চট্টগ্রামে একটি বড় উৎসব। যুগ যুগ ধরে এই রথযাত্রা উৎসব হয়ে আসছে। প্রকৃতপক্ষে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নানাবিধ অনুষ্ঠান আমাদের সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে। এই রথযাত্রাও আমাদের সংস্কৃতির অংশ।
তিনি বলেন, কেউ স্বীকার করুক আর না করুক ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগ হয়েছিল সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে। হিন্দুদের জন্য একটি রাষ্ট্র আর মুসলিমদের জন্য আরেকটি রাষ্ট্র। কিন্তু বিভাজনের পর আমরা বাঙালিরা অনুধাবন করেছি, এই সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থা আমাদের জন্য নয়। সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় পাকিস্তানে সেই সংস্কৃতি এবং পরিচয় যখন হুমকির মুখে পড়লো তখন জাতির পিতার নেতৃত্বে এই বাংলাদেশ রচিত হলো।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের পরিচয় বদলে দেয়া হলো। সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বানানোর অপচেষ্টা হলো, অনেক ক্ষেত্রে তারা সফলও হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর যেই চেতনার ভিত্তিতে রাষ্ট্র রচিত হয়েছিল সেই রাষ্ট্রকে মূল চরিত্র ফিরিয়ে আনার জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা চেষ্টা চালিয়েছেন। গত সাড়ে ১৩ বছর ধরে দেশ পরিচালনার প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রের যে পরিচয় নষ্ট করা হয়েছিল সেটি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এই দেশে যারা সাম্প্রদায়িকতাকে নিয়ে রাজনীতি করে, তাদের রাজনীতির মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা এবং ভারত বিরোধিতা, যখন নির্বাচন আসে তখন তারা সাম্প্রদায়িকতাকে নিয়ে আসে নির্বাচনের মাঠে। বলতে শুরু করে আওয়ামী লীগ হচ্ছে হিন্দুদের দল, আওয়ামী লীগ হচ্ছে ভারতের চর। যদিও এই সমস্ত ট্যাবলেট আগের মতো কাজ করে না।
হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচন অতি সন্নিকটে। তারা আবারও একই স্লোগান নিয়ে হাজির হবে। আমাদের সরকার হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য অনেক কাজ করেছে। এখন চাকুরির ক্ষেত্রেও সচিবালয় থেকে শুরু করে বিচার বিভাগ, সেনাবাহিনী, পুলিশ বাহিনী, প্রশাসনে দেখলে বুঝা যায়, সেখানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের হার এখন কতটুকু, আগে কতটুকু ছিল। এই বিশ্লেষণ করলে বুঝা যায়, আমাদের সরকার সবার অধিকার নিশ্চিতের জন্য কি কাজ করছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন