শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রতিবাদে লিবিয়ার পার্লামেন্টে বিক্ষোভকারীদের হামলা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ জুলাই, ২০২২, ২:৫০ পিএম

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুৎ বিভ্রাট, রাজনৈতিক অচলাবস্থাসহ নানা কারণে বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন লিবিয়ার মানুষ। তাঁরা দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর তবরুকে পার্লামেন্ট ভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছেন। স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা।

স্থানীয় সময় শুক্রবার লিবিয়ার বেশ কয়েকটি টেলিভিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন। পার্লামেন্ট ভবনের দেয়ালের একাংশ পুড়ে গেছে। টেলিভিশনগুলোর ভিডিও ফুটেজে পার্লামেন্ট ভবন থেকে কালো ধোঁয়া বের হতে দেখা গেছে। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় পার্লামেন্ট ভবনে কেউ ছিলেন না।
তবরুক শহর ছাড়াও দেশের অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। শুক্রবারে রাজধানী ত্রিপোলির সেন্ট্রাল স্কয়ারে কয়েক শ বিক্ষোভকারী জড়ো হয়েছিলেন। তাঁরা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন এবং অবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ও খাদ্যদ্রব্যের দাম কমানোর দাবি জানিয়েছেন।
লিবিয়ার সংবাদমাধ্যম আল-ওয়াসাত জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। এ ছাড়া তাঁরা জীবনযাত্রার মানোন্নয়নেরও দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা ‘আমরা কাজ করার জন্য বিদ্যুৎ চাই’ বলে স্লোগান দিয়েছেন।
রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জেরে লিবিয়ার বেশ কয়েকটি তেলক্ষেত্র বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে লিবিয়ার বেশ কয়েক দিন ধরে তীব্র লোডশেডিং চলছে।
লিবিয়ার টেলিভিশন আল-আহরারকে আইনপ্রণেতা বালখেইর আলশাব বলেছেন, ‘আমাদের অবশ্যই ব্যর্থতা স্বীকার করতে হবে এবং রাজনৈতিক দৃশ্যপট থেকে সরে যেতে হবে।’
লিবিয়ার পার্লামেন্ট ভবনটি রাজধানী ত্রিপোলি থেকে কয়েক শ কিলোমিটার দূরের শহর তবরুকে অবস্থিত। লিবিয়ার দীর্ঘ সময়ের শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের তিন বছর পর ২০১৪ সালে দেশটি পূর্ব-পশ্চিম দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়।
গত কয়েক সপ্তাহে ত্রিপোলিতে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে কয়েকবার সংঘর্ষ হয়েছে। এতে নতুন করে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
লিবিয়াতে বর্তমানে দুটি সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য লড়াই করছে। রাজধানী ত্রিপোলিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ দিবেইবা। একই সময়ে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফাতহি বাশাঘা বলেছেন, তিনিও ক্ষমতায় থাকার দাবিদার। ফাতহি তবরুক পার্লামেন্টে জোটবদ্ধ আছেন।
২০২০ সালে শুরু হওয়া একটি শান্তি প্রক্রিয়া দেশকে আবার একত্রিত করার চেষ্টা করছে। এর মধ্যে ডিসেম্বরের একটি পূর্ব-নির্ধারিত নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় সংসদ বলেছে, প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ দিবেইবার অন্তর্বতী সরকারের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তাঁর জায়গায় ফাতহি বাশাঘাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এ মাসের শুরুতে পশ্চিম লিবিয়ার দুই প্রভাবশালী মিলিশিয়ার মধ্যে তীব্র লড়াই শুরু হয়। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বাশাঘার অনুগত একটি সশস্ত্র মিলিশিয়া গোষ্ঠী নওয়াসি ব্রিগেড আবদুল হামিদ দিবেইবাকে সমর্থন জানিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ বলেছে, লিবিয়ার অচলাবস্থা নিরসনে প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে। লিবিয়ায় নিযুক্ত জাতিসংঘের দূত স্টেফানি উইলিয়ামস বলেছেন, তিনি আলোচনার মধ্যস্থতা করেছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন