পায়ের চোট ও তলপেটের যন্ত্রনা নিয়েও যুক্ত্রাষ্ট্রের ১১তম বাছাই টেলর ফ্রিটজকে হারিয়ে উইম্বলডনের সেমি ফাইনালে উঠে গিয়েছেন রাফায়েল নাদাল। কিন্তু সর্বনাশা চোটের কারণে এই স্প্যানিশ মহাতারকার শেষ পর্যন্ত শেষ চারে নামা হবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় গোটা টেনিস বিশ্ব। তলপেটের পেশির ব্যাথায় বেশ চিন্তিত ছিলেন রাফা কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে সেটা এতটা প্রকোট হয়ে যাবে তা ভাবতে পারেননি। খেলা শুরুর পরেই পুরোনো পায়ের চোট ও তলপেটের ব্যথা তীব্র আকার ধারন করে। দ্বিতীয় সেটের সময় বাধ্য হয় মেডিকেল টাইম আউট নেন। দর্শকাসন থেকে তার বাবা ও বোন বারবার বলছিলেন খেলা থামিয়ে দিতে। কিন্তু প্রতিকূলতায় থেমে যাওয়ার মানুষ নন রেকর্ড ২২ বারের গ্রান্ড স্ল্যাম জয়ী এই কিংবদন্তী। তীব্র যন্ত্রনা নিয়েও ৪ ঘন্টা ২১ মিনিটের মহারণ জিতিছেন ৩-৬, ৭-৫, ৩-৬, ৭-৫, ৭-৬ ব্যবধানে। তাতেই লড়াকু এই সৈনিকের সামনে ১৯৬৯ সালের রড লেভারের পর প্রথম পুরুষ প্লেয়ার হিসেবে ক্যালেন্ডার গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের হাতছানি। ম্যাচ জয়ের পর গণধ্যমকে জানান, ‘ভাবতে পারিনি জিতবো। ফ্রিটজে খুবই ভালো খেলেছে। তবে জিততে পেরে খুশি আমি। চোট ও পরবর্তী ম্যাচে খেলার ব্যাপারে এই স্পেনিশ বলেন, ‘সমস্যা লেগেই আছে। কয়েকদিন ধরে তলপেটের যন্ত্রনা হচ্ছিল, যা ম্যাচ চলাকালীন খুবই বেড়ে যায়। বৃহস্পতিবার (গতকাল) কয়েকটা পরীক্ষা হবে। সবকিছু দেখে তারপর খেলতে নামার সিদ্ধান্ত নিব।’
নাদাল বিতর্কিত খেলোয়াড় নিক কিরিয়সকে সেমি ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে পাচ্ছেন। এই অস্ট্রেলিয়ান শেষ আটে ২ ঘন্টা ১৩ মিনিটের লড়াইয়ে চিলির ক্রিশ্চিয়ান গারিনকে সরাসরি ৬-৪, ৬-৩, ৭-৬ গেমে হারিয়ে উঠে গিয়েছেন সেমি ফাইনালে। টেনিস জীবনের শুরু থেকেই বিতর্ক কিরিয়সের সঙ্গী। মাঠ ও মাঠের বাহিরের কার্যকলাপে জন্য আপনি তাসমেনিয়া পাড়ের এই প্লেয়ারকে ভালোবাসতে পারেন আবার ঘৃনাও করতে পারেন কিন্তু উপেক্ষা করবার পথ নেই। সে মাঠে নামলেই দুর্দান্ত রিটার্ন বা সার্ব করে তালি আদায় করবে। কিন্তু পরক্ষণেই আবার প্রতিপক্ষ বা দর্শকদের সাথে আশালীন আচরণ করে সমালোচনার কেন্দ্রে চলে আসবেন। ২৭ বছর বয়সী এই টেনিস তারক যেন একটি প্যাকেজ। এই আসরেই থুতু ছিটিয়েছেন দর্শকদের দিকে। চিচিপাসকে করেছেন কটাক্ষ। গুনেছেন জরিমানা। বান্ধবীকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করার অভিযোগে ক্যানাবেরোর আদালতে হাজিরা দিতে হবে উইম্বলডনের পরেই। কিন্তু এরপরও জীবনের সবচেয়ে বড় ম্যাচের আগে বেশ আত্মবিশাসী এই অস্ট্রেলিয়ান বলেন, ‘এখন আমার লক্ষ একটাই এবং সেদিকেই এগিয়ে যচ্ছি। এবার আমি সত্যই সাফল্য পেতে চাই। সম্ভব হলে ট্রফিটাও তুলতে চাই’। উল্লেখ্য মিলোস রাওনিকের কাছে হেরে ২০১৪ সালে উইম্বলডনে আর অ্যান্ডি মারের সাথে হেরে পরের বছরে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমি ফাইনালে উঠার সুযোগ হারিয়েছিলেন কিরিয়স।
এদিকে ওপেন যুগের প্রথম আফ্রিকান হিসেবে তিউনিশিয়ার ওনস জাবির উঠে গিয়েছেন উইম্বলডনের ফাইনালে। গতকাল জার্মান টাটজানা মারিয়াকে ৬-২, ৩-৬, ৬-১ ব্যবধানে হারিয়ে তিনি এই কৃতি করেছেন। ২৭ বছর বয়সী এই আরব আগামী শনিবারের ফাইনালে মুখোমুখি হবেন ২০১৯ সালের চ্যাম্পিয়ন সিমোনা হালেপ ও এলেনা রাইবাকিনার মধ্যকার বিজয়ীর সাথে। ম্যাচ জয়ের পর এই তিউনেশিয়ান বলেন, ‘অনেক পরিশ্রম ও ত্যাগের পর এটা স্বপ্ন সত্য হবার মতন। আমি খুশি যে সেই কষ্টের ফলাফল পাচ্ছি, এখন আরো একটা ম্যাচে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চাই’।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন