আগামীকাল রোববার অনুষ্ঠিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। ইতিমধ্যে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উপভোগ করতে অনেকেই ঢাকা ছেড়েছেন। এখনও অনেকে আছেন বাড়ির পথে। তাই স্বাভাবিকভাবেই বাজারে ক্রেতার চাপ অন্য সময়ের তুলনায় অনেক কম। তবে যারা ঢাকায় ঈদ উদযাপন করবেন তারা ব্যস্ত শেষ সময়ের কেনাকাটায়। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, সবজি, গোশত, শুকনো মরিচ, জিরা, তেজপাতা, ধনেসহ বেশকিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। তবে এর ভীড়ে কিছুটা কমেছে পেঁয়াজের দাম।
ঈদের প্রয়োজনীয় মসলা তেজপাতার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, যা কিছুদিন আগে ছিল ১৫০ থেকে ১৭০ টাকার মধ্যে। আর ধনে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৭০ টাকা, যা কিছুদিন আগে ছিল ১২০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে। বেড়েছে শুকনো মরিচের দামও। দেশি শুকনো মরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, যা কিছুদিন আগে ছিল ২২০ থেকে ২৬০ টাকার মধ্যে। আর আমদানি করা শুকনো মরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪২০ টাকা, যা কিছুদিন আগে ছিল ৩০০ থেকে ৩৮০ টাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাইকারিতে মানভেদে এখন এলাচের কেজি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০০ থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা। এক মাস আগে এলাচের কেজি ছিল এক হাজার ৪০০ থেকে দুই হাজার ৪০০ টাকা। এ হিসাবে কেজিতে এলাচের দাম কমেছে ২০০ টাকা পর্যন্ত।
এলাচের দাম কমলেও স্থিতিশীল রয়েছে লবঙ্গ ও দারুচিনির দাম। পাইকারিতে লবঙ্গের কেজি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪০ থেকে এক হাজার ৬০ টাকা। এছাড়া দারুচিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩১০ থেকে ৩৯০ টাকা।
অপরদিকে ভারত থেকে আমদানি করা জিরার দাম কিছুটা বেড়ে এখন ৩৮৫ থেকে ৩৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। কিছুদিন আগে যা ছিল ৩৮০ থেকে ৩৮৫ টাকা। অর্থাৎ ভারত থেকে আমদানি করা জিরা পাইকারিতে কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে। তবে আফগানিস্তান থেকে আমদানি করা জিরা আগের মতো ৪০০ থেকে ৪১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, দারুচিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৬০ টাকা। এলাচ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার ৮০০ টাকা। জিরার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। লবঙ্গের কেজি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা। এবার ঈদ কেন্দ্রিক গরম মসলার দাম না বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং বন্যার কারণে এবার বিক্রি অনেক কম হয়েছে। অপরদিকে গরম মসলা আমদানি হয়েছে বেশি। ফলে চাহিদার তুলনায় জোগান বেশি হওয়ায় দাম বাড়েনি।
বর্তমান অস্থিতিশীল বাজারে ৮০ টাকা কেজি দরে শসা, বেগুন, কচুর লতি, করলা ও বরবটি বিক্রি হচ্ছে। টমেটোর দাম কিছুটা বেশি, বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে। এ ছাড়া ৫০ টাকা কেজি দরে চিচিঙ্গা, পটল, ঢেঁড়শ ও পেঁপে বিক্রি হচ্ছে। আকারভেদে প্রতি পিস লাউ ৬০ টাকা, চাল কুমড়া ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। প্রতি কেজি আলু ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ১৬০ টাকা এবং প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা এবং লেবু ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি পেঁয়াজ ও রসুন ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে চায়না রসুনের ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা এবং প্রতি কেজি আদা ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি খোলা চিনি ৮৫ টাকা ও প্যাকেট চিনি ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ডজন লাল ডিম ১২০ টাকা, হাঁসের ডিম ১৯৫ থেকে ১৯০ টাকা এবং মুরগির ডিম ২০০ থেকে ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রতি কেজি গরুর গোশত ৭০০ টাকা এবং খাসির গোশত ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা, পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা এবং লেয়ার মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মুরগির বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা। অর্থাৎ, সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দামে কোনো পরিবর্তন আসেনি।
মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। তেলাপিয়া, পাঙাস মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৬০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। এছাড়া কৈ মাছের কেজি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা আর পাবদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব মাছের দামে পরিবর্তন আসেনি।
দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ইলিশেরও। এক কেজি ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকা। ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি আর ৪০০-৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন