খুলনা জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির জুলাই মাসের সভা আজ বুধবার (১৩ জুলাই) সকালে জেলা প্রশাসক মোঃ মনিরুজ্জামান তালুকদারের সভাপতিত্বে তাঁর সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাদক সমস্যা সমাজে ক্যান্সারের মত হয়ে উঠেছে। এটি প্রতিরোধে সবাই সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত জিরো টলারেন্স নীতি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়িত না হলে ভবিষ্যত প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাবে। রাজনৈতিক দলের মধ্যে সুযোগ সন্ধানী মাদক ব্যবসায়ীরা যেন অনুপ্রবেশ করতে না পরে সে দিকে দলীয় নেতাকর্মীদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও কিছুটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরে জনবহুল স্থানে চলাচল করতে হবে। একই সাথে করোনা টিকার বুস্টার ডোজ গ্রহণ করতে হবে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার অপরাধের সুযোগ সৃষ্টি করছে। দেশ থেকে মাদক নির্মূলে পুলিশ কাজ করছে। মাদকের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিষয়ে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করলে মাদক প্রতিরোধ করা আরো সহজ হবে। পুলিশ সবসময় তথ্য দাতার পরিচয় গোপন রাখে। এসময় জীবন ও সম্পদের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপনের জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান পুলিশ সুপার।
সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহমেদ বলেন, চলমান জুলাই মাসে এ পর্যন্ত খুলনা জেলায় এক হাজার ৩৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১১৯জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় করোনা শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ। জেলায় করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণের হার শতভাগ হলেও বুস্টার ডোজ গ্রহণের হার এখন পর্যন্ত ২৭ শতাংশ।
সভাপতির বক্তৃতায় জেলা প্রশাসক বলেন, দেশের প্রত্যন্ত এলাকা পর্যন্ত মাদকের বিস্তার ঘটছে। মাদককে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করতে হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে উঠান বৈঠকসহ সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম চালাতে হবে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পুলক কুমার মন্ডল সভায় বিগত মাসে খুলনা জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তুলে ধরেন। খুলনা জেলা অধিক্ষেত্রে বিগত জুন মাসে ডাকাতি ১টি, চুরি ১২টি, খুন ১টি, ধর্ষণ ৫টি, নারী ও শিশু নির্যাতন ১৪টি, মাদকদ্রব্য ৫২ টি এবং অন্যান্য একশত একটিসহ মোট একশত ৮৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যা বিগত মে মাসে দায়ের হওয়া মামলার চেয়ে ১৬টি বেশি। খুলনা মহানগরী অধিক্ষেত্রে জুন মাসে ডাকাতি ১টি, চুরি ৪টি, খুন ২টি, অস্ত্র আইনে ২টি, দ্রুত বিচার ০১টি, ধর্ষণ ৩টি, নারী ও শিশু নির্যাতন ১০টি, নারী ও শিশু পাচার ১টি, মাদকদ্রব্য ৮৭টি এবং অন্যান্য ৩৩টিসহ মোট একশত ৪৪ টি মামলা দায়ে করা হয়েছে। যা বিগত মে মাসে দায়ের হওয়া মামলার চেয়ে ১৩টি বেশি।
সভায় খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু, জেলা পরিষদের প্রশাসক শেখ হারুনুর রশীদ, কেএমপি’র উপপুলিশ কমিশনার সোনালী সেন, বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান, প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম নজরুল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যরা অংশ গ্রহণ করেন।
পরে একই স্থানে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান খুলনা জেলার প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক সেক্টরের শ্রমিক-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা এবং সন্তানের উচ্চ শিক্ষার জন্য বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন থেকে একশত ৩১ জনের মাঝে ৬০ লাখ ৫০ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তার চেত বিতরণ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন