পরপর দুই বছর বিশ্বকাপ, কোনো দলের জন্য সম্ভাবনা, কোনো দলের জন্য চাপ। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে চাপের প্রভাবই বেশি। গত আসরে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল খুবই রুগ্ন। প্রাথমিক রাউন্ডে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর কোন রকমে মূল পর্বে পা রেখে একটিও ম্যাচ জেতেনি মাহমুদউল্লাহর দল। সবচেয়ে বড় কথা টি-টোয়েন্টি সংস্করণের ভাষাটাই এখন রপ্ত করতে পারেনি বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিধ্বস্ত হওয়ার পর প্রিয় সংস্করণ ওয়ানডেতে ঠিকই জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। আরেকটি ওয়ানডে সিরিজ শেষের আগে রাসেল ডমিঙ্গোর ভাবনার জগতে নেই ৫০ ওভারের ক্রিকেট। বাংলাদেশের কোচ তাকিয়ে অক্টোবর-নভেম্বরে হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। অস্ট্রেলিয়ায় এবার চাপকে হারিয়ে বিশ্বকাপের মূল পর্বে দলের জয় খরা কাটাতে চান বাংলাদেশ কোচ।
২০ ওভারের বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত ৩৩ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের জয় স্রেফ ৭টি। এর মধ্যে ৬টি জয়ই প্রাথমিক পর্বে। সেই ২০০৭ সালে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর আর কখনোই মূল পর্বে কোনো জয়ের দেখা মেলেনি। উল্টো এই সময়ে প্রাথমিক পর্বে হংকং, স্কটল্যান্ডের মতো সহযোগী দেশের কাছে হারের তেতো স্বাদ মিলেছে। গত বিশ্বকাপে দলের বাজে পারফরম্যান্সের পর টি-টোয়েন্টিতে সেই ব্যর্থতার বলয় থেকে এখনও বের হতে পারেনি বাংলাদেশ। চলতি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও টি-টোয়েন্টি সিরিজে ধরা দেয়নি জয়। যদিও ওয়ানডেতে প্রথম দুই ম্যাচেই সিরিজ জয় নিশ্চিত হওয়ার পর দলে এখন স্বস্তির আবহ। তবে টি-টোয়েন্টির বাস্তবতা তো ভিন্ন!
রাসেল ডমিঙ্গোও সেটা জানেন ভালোভাবেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচের আগে গায়নায় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশ কোচ বললেন, সামনে টি-টোয়েন্টিতে ডুব দিতে হবে দলকে এবং এবার ইতি টানতে হবে ব্যর্থতার ধারায়, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আমাদের জন্য দারুণ গুরুত্বপূর্ণ। ওয়ানডে বিশ্বকাপ এখনও ১৫ মাস দূরে। মাঝের এই সময়ে অনেক কিছু হয়ে যেতে পারে। অনেক ম্যাচও খেলব আমরা। আপাতত আমাদের মনোযোগ থাকবে এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। চেষ্টা থাকবে বিশ্বকাপে লড়াই করার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আমরা কখনও কোনো ম্যাচ জিতিনি (মূল পর্বে, ২০০৭ আসরের পর থেকে)। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারা তাই আমাদের জন্য হবে কঠিন চ্যালেঞ্জ। এবার কিছু ম্যাচ জিততে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকব।’
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের পিছিয়ে থাকার নানা কারণ আলোচিত হয়ে আসছে নানা সময়ে। তবে বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পেছনে মূল কারণ ডমিঙ্গোর মতে, প্রত্যাশার ভার, ‘ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে বিশ্বকাপে। আমাদের স্কিলসেট ভালো, বোলিং আক্রমণ ভালো। গুরুত্বপূর্ণ হলো, বিশ্বকাপের মতো আসরের চাপ সামলানো। এটা সবসময়ই চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো ক্রিকেটপ্রিয় দেশে, যেখানে ক্রিকেটাররা সত্যিই চাপটা অনুভব করে। এই চাপটা সামলাতে হবে। মিডিয়া, দর্শক, সবাই অনেক কাটাছেঁড়া করবে। সেটা সামলে মনোযোগ ধরে রাখতে হবে নিজের কাজে এবং একটি করে পদক্ষেপে এগিয়ে যেতে হবে।’
আগামী ১৬ অক্টোবর শুরু হবে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন