সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে শেয়ারবাজারে ভয়বহ দরপতন হয়েছে। গতকাল সোমবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ২৭৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দিনের সর্বনিম্ন দামে চলে গেছে। লেনদেনের প্রায় সময়জুড়ে এসব প্রতিষ্ঠানের ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য পড়ে থাকে। পৌঁনে তিনশ প্রতিষ্ঠান ক্রেতা সঙ্কটে পড়ে বড় পতন হয়েছে সবকটি মূল্য সূচকের। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক প্রায় একশ পয়েন্ট পড়ে গেছে।
ডিএসইর মতো মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে দেশের অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। এ বাজারটিতেও লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। এর মাধ্যমে ঈদের পর লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হলো।
ঈদের আগেও পতনের মধ্যে ছিল শেয়ারবাজার। ঈদের আগে শেষ পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসই পতন দিয়ে পার হয়। ফলে শেষ ১০ কার্যদিবসের মধ্যে আট কার্যদিবসই পতনের মধ্যে থাকলো শেয়ারবাজার।
লেনদেন শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে যায়। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে পতনের মাত্রা। প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার আগেই প্রায় একশ প্রতিষ্ঠানের ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে।
এ পর্যায়ে দিনের সর্বনিম্ন দামে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিক্রির আদেশ দিতে থাকেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু এরপরও বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী তাদের কাছে থাকা শেয়ার বিক্রি করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ক্রেতা সঙ্কট দেখা দেওয়ায় দিনের লেনদেন শেষে মাত্র ১২টি প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৫৮টির এবং ১২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম কমার তালিকায় স্থান হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২৭৫টির শেয়ার ও ইউনিট দিনের সর্বনিম্ন দামে লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বিপুল পরিমাণ শেয়ার দিনের সর্বনিম্ন দামে বিক্রির আদেশ আশায় লেনদেনের বেশিরভাগ সময় ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য পড়ে থাকে। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৮৭ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২১৬ পয়েন্টে নেমে গেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৩১ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২৩৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৫৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি বাজারটিতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৫১৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৫৯৩ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৭৮ কোটি ২০ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে বেশি লেনদেন হয়েছে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর ২৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ১৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফরচুন সুজ। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-গ্রামীণফোন, ওরিয়ন ইনফিউশন, কেডিএস, তিতাস গ্যাস, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, ওরিয়ন ফার্মা এবং এইচ আর টেক্সটাইল। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২৪২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ৬১ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ২৯৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৬০টির এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন