২০১৯ সালে মিশরের হুরগাদায় সর্বশেষ কনফেডারেশন অফ আফ্রিকান ফুটবলের পুরস্কারের আসর বসেছিল। এরপর কোভিড মহামারির কারণে অনুষ্ঠিত হয়নি দুই মৌসম। গতপরশু রাতে মরোক্কোর রাবাতে আবারও বসল জমকালো এই তারার মেলা। মাঝে বয়ে গিয়েছে ২ বছর ৭ মাস, বদলে গিয়েছে বহুকিছুই। কেবল বদলায়নি আফ্রিকার বর্ষসেরা পুরুষ ফুটবলারের নাম। এতক্ষণে বুঝে যাওয়ার কথা, কে সেই ফুটবলার। হ্যাঁ, সাদিও মানে। সদ্যই সাবেক হওয়া ক্লাব সতীর্থ ও আফ্রিকার ফুটবলের আরেক নক্ষত্র মোহাম্মদ সালাহ এবং জাতীয় দলের সঙ্গী এদুয়ার্দ মেন্দিকে পেছনে ফেলে এই সেনেগালিজ টানা দ্বিতীয়বারের মতন জিতলেন এই মুকুট।
ক্লাব ফুটবল ও জাতীয় দলে দারুণ সময় পাড় করেছেন মানে। গুরুত্বপূর্ণ ৩ গোল ও ২ এসিস্ট করে গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথমবারের মতন মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে জয়ী করেছেন দেশকে। ফাইনালে সালাহর মিশরকেই টাইব্রেকারে হারিয়ে শিরোপা ছুঁয়েছিল সেনেগাল। টাইব্রেকারের শেষ শটটা জালে জড়িয়ে সেদিন সালাহদের কাঁদিয়েছিলেন এই সাদিও মানে। ঠিক তার ৬ সপ্তাহ পরে দৃষ্যপটে আবারও এই দুই দেশ। তবে ক্ষেত্র এবার বিশ্বকাপ বাইছাইপর্বের প্লে অফ। এবারও পেনাল্টিতেই নির্ধারণ হল ভাগ্য, আর জয়ী সেই মানে। জাতীয় দলের হয়ে এমন চোখ ধাঁধানো সাফল্যের সাথে ছিল ক্লাবের অর্জন। এই জুলাইয়ে ৩২ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে বায়ার্নে যোগ দিলেও গত মৌসুমে তার লিভারপুলে পাওয়া সফলতা এই পুরষ্কারের পিছনে অবদান রেখেছে। সিজন জুড়ে মানে অসাধারণ ফুটবল খেলে করেছিলেন ২৩ গোল ও ৫ এসিস্ট। তাতে অলরেডরা ইংলিশ লিগ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রানার্সআপ হলেও এফ এ কাপ এবং লিগ কাপে ঠিকই চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছিল।
প্রাক মৌসুমের ব্যস্ততায় বর্তমান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের সাথে মানেও ছিলেন ওয়াশিংন্টনে। সেখান থেকে সরাসরি মরোক্কোতে উড়ে আসেন পুরষ্কারটি গ্রহণের জন্য। আলোকিত মঞ্চে মানে স্বরণ করলেন দেশের মানুষদের, ’এই বছর আমি পুরষ্কারটি গ্রহণ করতে পেরে সম্মানীত বোধ করছি এবং একই সাথে অত্যন্ত খুশি। আমি সেনেগালের মানুষদের ধন্যবাদ দিতে চাই আর এই পুরষ্কারটি উৎসর্গ করতে চাই দেশের যুবাদের।’ একই সাথে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ভুলেননি তার ক্লাব ও জাতীয় দলের কোচ ও সতীর্থদেরকে। এসময় তিনি বলেন, ‘ধন্যবাদ জানাতে চাই আমার কোচদের, ক্লাব ও জাতীয় দলের সতীর্থদের এবং সেই বন্ধুদের যারা আমার বিপদের দিনের সঙ্গী ছিল।’
মানে এই নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতন আফ্রিকার বর্ষসেরা ফুটবলার হলেন আর এই দুবারই রানার্সআপ হয়েছেন সালাহ। ঠিক তার আগের দুবারও লড়াইটা ছিল লিভারপুলের সাবেক এই দুই জুটির মাঝে। কিন্তু সে দুই আসরে পুরষ্কার গিয়েছিল সালাহর হাতে আর মানেকে দ্বিতীয় হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। এবারের আসরের মোট সাতটি পুরষ্কারের ৫টি জিতে রাতটি নিজেদের করে নিয়েছে নাইজেরিয়া। মানের জাতীয় দলের সতীর্থ টটেনহ্যামে খেলা তরুণ মিডফিল্ডার পাপে সার বর্ষসেরা উদীয়মান খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া সেনেগালের কোচ আলিও সিসে বর্ষসেরা কোচ ও তার দল বর্ষসেরা দলের পুরষ্কারটি নিজেদের করে নেয়। সেনেগালের পাপে ওসমানে অর্জন করেন বছরের সেরা গোলের স্বীকৃতি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন