বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন জাইকা প্রেসিডেন্ট আকিহিকো তানাকা। সোমবার (২৫ জুলাই) বাংলাদেশ সচিবালয়ে নিজ দফতরে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এর সঙ্গে জাইকা প্রেসিডেন্ট আকিহিকো তানাকা সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। অর্থমন্ত্রী জাইকা প্রেসিডেন্টকে সকল বাংলাদেশীদের পক্ষ থেকে স্বাগত জানান। পাশাপাশি তিনি, বাংলাদেশ জাপান সম্পর্কের ভিত্তি হিসাবে উল্লেখ করে ১৯৭৩ সালের অক্টোবরের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাপান সফরের কথা স্মরণ করেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের স্বাধীনতার পরপরই ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া প্রথম দেশগুলোর মধ্যে জাপান অন্যতম। তারপর থেকেই জাপান আমাদের সবচেয়ে বিশ্বস্ত দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগী এবং সময়ের পরীক্ষিত বন্ধু।
বাংলাদেশকে অব্যাহত সমর্থন ও বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় দৃঢ় প্রতিশ্রুতির জন্য জাপান সরকার এবং বিশেষ করে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আ হ ম মুস্তফা কাামল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের মাধ্যমে সম্প্রতি জাপান বাংলাদেশের সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের জাপান সফর এটিকে আরো বেগবান করেছে। পাশাপাশি তিনি জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ২০১৪ সালের বাংলাদেশ সফরের বিষয়টিও উল্লেখ করেন। তিনি বাংলাদেশের মহান বন্ধু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের দুঃখজনক মৃত্যুতে আন্তরিক সমবেদনা জানান এবং জঘন্য এ হত্যাকা-ের ঘটনায় নিন্দা জ্ঞাপন করেন।
করোনা মহামারির শুরুতে জাপান বাংলাদেশকে যে বাজেট সহায়তা প্রদান করেছে তা, বাংলাদেশ ও জাপান উভয় দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেট সহায়তা হিসাবে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এটি আমাদের করোনা মহামারীর নেতিবাচক প্রভাব প্রশমিত করতে এবং রাশিয়া-ইউক্রেন সঙ্কট মোকাবেলায়ও সাহায্য করেছে। দিনে দিনে জাপান বাংলাদেশের একক বৃহত্তম দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগী হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস, জাইকা ভবিষ্যতের বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা বিবেচনা করে, প্রয়োজনীয় বাজেট সহায়তাসহ আমাদের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য আরো অর্থায়ন বাড়াবে।
ড. আকিহিকো তানাকা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, জাইকার সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। বাংলাদেশ বিভিন্ন অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সূচকে বিভিন্ন প্রতিবেশি দেশের থেকে বর্তমানে অনেক এগিয়ে রয়েছে। সহযোগিতার সফল বাস্তবায়নের কারণে এ মুহূর্তে জাপানের সরকারি উন্নয়ন সহযোগিতার তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান অন্যতম। বিভিন্ন সামাজিক সূচকে অগ্রগতি অর্জনের মাধ্যমে উন্নয়নের একটি নতুন পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে বাংলাদেশ। এ সফরে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার চিত্রটা নিজের চোখে দেখে তিনি উপলব্ধি করছেন। তিনি বলেন, গত ১০১৪ সালে তিনি বাংলাদেশে এসেছিলেন, আর এবারের সফরের বাংলাদেশ তাকে অভিভূত করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু সারা বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি এবং জাইকার আবাসিক প্রতিনিধি ইয়ো হায়াকাওয়াসহ জাইকা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন