রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খেলাধুলা

তাদের সমালোচনা জয়ের মিশন

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ জুলাই, ২০২২, ১২:০৭ এএম

মোহাম্মদ মিঠুন জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েছেন প্রায় এক বছর হতে চলছে। বাজে ফর্মই ছিল এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানের বাদ পড়ার প্রধান কারণ। বাজে ফর্মের কারণে একজন ক্রিকেটার বাদ পড়তেই পারেন। কিন্তু মিঠুনের জন্য সময়টা ছিল কঠিন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা, ট্রল- সবকিছুই সয়েছেন তিনি। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফরম্যান্স ও বাংলাদেশ টাইগার্স দলের সঙ্গে অনুশীলন করে সেই মিঠুন এখন বাংলাদেশ ‘এ’ দলের অধিনায়ক। তার নেতৃত্বে ‘এ’ দল আজ সন্ধ্যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাবে দুটি চারদিনের ম্যাচ ও তিনটি একদিনের ম্যাচ খেলতে।

এই দলটিতেই আছেন জাতীয় দলের আরো দুই সতীর্থ- সৌম্য সরকার ও সাব্বির রহমান। তিনজনই আছেন জাতীয় দলে ফেরার লড়াইয়ে। জাতীয় দল না হলেও মিঠুন ‘এ’ দলকে দেখছেন বাংলাদেশেরই আরেকটি দল হিসেবে। যার নেতৃত্বে থাকতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে সফরপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে মিঠুন বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশেরই প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছি। এটা বাংলাদেশেরই দ্বিতীয় সেরা দল। আশা করি আমরা সেখানে ভালো করতে পারব।’
জাতীয় দল নয় ঠিকই, কিন্তু মিঠুনের ‘এ’ দলে ফেরা আরও একবার আলোচনা-সমালোচনার ডেকে আনবে কি না, সেই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে মিঠুনকে। এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে অনেক বেশি মাতামাতি হয়। এগুলো সামলানোর সামর্থ্য না থাকলে আমি ক্রিকেট খেলতে পারব না। সেটা সামলানোর মত মানসিক দৃঢ়তা থাকতে হবে। এ জন্য আমি যথেষ্ট সময় পেয়েছি। সময় পেয়ে ক্রিকেটে ফিরেছি, ক্রিকেট খেলছি। এখন একটা দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এখানে কীভাবে সর্বোচ্চটা দিতে পারি সেটিতেই আমার পূর্ণ মনোযোগ। আর কোনদিকে কী হচ্ছে তা আমার ভাববার ব্যাপার না, ভাবিও না।’
’এ’ দলের এই সফর ক্রিকেটারদের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেট খেলার সুযোগ করে দেবে বলে মনে করেন মিঠুন। তার কথা, ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেটের কথা যদি চিন্তা করেন, তাহলে ‘এ’ দলের ক্রিকেট ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে ভালো।’ ওয়েস্ট ইন্ডিজে বাংলাদেশ দলের সর্বশেষ দুটি সফরে বাংলাদেশ টেস্ট দলের পারফরম্যান্স ভালো ছিল না। এবারের ’এ’ দলের সফরে লাল বলের খেলাটাই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। মিঠুন যেমন বলছিলেন, ‘লাল বলের চ্যালেঞ্জটা সবসময়ই থাকে। কারণ আমাদের ঘরোয়া পর্যায়ে তেমন চ্যালেঞ্জ সামলাতে হয় না। আন্তর্জাতিক পর্যায়ের দলে গেলে যেটা সামলাতে হয়।’
‘এ’ দলকে মনে করা হয় জাতীয় দলের ব্যাকআপ। এসব দলের হার-জিতের বাইরেও থাকে নির্দিষ্ট খেলোয়াড়দের পারফম্যান্সের হিসেব নিকেশ। জাতীয় দলে ফেরার লড়াইয়ে থাকায় মিঠুন, সাব্বির, সৌম্যদের সঙ্গে নাঈম শেখদের সামনেও থাকবে পারফর্ম করার চ্যালেঞ্জ। নজরও থাকবে তাদের উপর বেশি। মিঠুন ও সাব্বির সীমিত ওভারে খেলেন মিডল অর্ডার বা লোয়ার মিডল অর্ডারে। সৌম্য-নাঈমরা আবার টপ অর্ডারে। একই পজিশনের খেলোয়াড় হওয়ায় জাতীয় দলের ফেরার লড়াইয়ে একে অন্যের প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ার কথা। সফরের আগে এমন কিছু অবশ্য উড়িয়ে দিলেন মিঠুন। তার সোজা কথা, নিজেরা নিজেদের প্রতিদ্বন্দ্বী নন, ‘নিজেদের মধ্যে তো কোন লড়াই নাই। আমরা তো কেউ কারও প্রতিদ্বন্দ্বী নই। আমরা নিজেদের ভাল পারফর্ম করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। এখানে আমরা সবাই মাথায় রাখি যে আমি নিজে কি করছি। অন্য কেউ কি করছে এটা আমরা মাথায় রাখি না।’
এসব আনুষ্ঠানিক কথার বাইরে প্রত্যেকেরই থাকবে আলাদা আলাদা লক্ষ্য, আলাদা আলাদা জেদ, খেদ। এসব কিছু একই মালায় গেঁথে ফেলতে পারলে আবার দল হিসেবেও সুযোগ লাভবান হওয়ার। অধিনায়ক মিঠুন অবশ্যই সেই দলীয় লক্ষ্যের দিকেই মন দিতে চান বেশি, ‘ওখানে আমাদের লক্ষ্য সিরিজ জেতা। এজন্য অনেক সেক্টরেই চ্যালেঞ্জ আসবে ও তা পার করতে হবে। এখানে একদুইজন দিয়ে হবে। শেষদিকে টেলএন্ডারদেরও জয়ের জন্য রান করতে হবে। ব্যাটিং মানে ব্যাটাররা বোলারদেরও তো কাজ করতে হয়। তো যদি আমরা দল হয়ে সবার কাজ সঠিক সময়ে করতে পারি তাহলে জেতা সম্ভব। এজন্য ছোট ছোট কাজে সফল হতে চাই। ব্যক্তি পারফরম্যান্সের থেকে দল হয়ে কীভাবে পারফর্ম করতে পারি সেখানে ফোকাস রাখছি। এটা ধরে রাখতে পারলে ইতিবাচক কিছু হবে অবশ্যই।’
আগামী ৪ আগস্ট সেন্ট লুসিয়ার ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়ামে শুরু হবে সফরের প্রথম চারদিনের ম্যাচে। ১০ আগস্ট থেকে হবে দ্বিতীয় চার দিনের ম্যাচ। ১৬ আগস্ট থেকে শুরু সাদা বলের লড়াই। এরপর ১৮ ও ২০ আগস্ট বাকি দুটি এক দিনের ম্যাচ খেলে দেশে ফিরবে বাংলাদেশ ‘এ’ দল। সফরের সবকটি ম্যাচের ভেন্যুই সেই সেন্ট লুসিয়ায়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন