বার্মিংহামের আলেকজান্ডার স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার ছিলেন ২২তম কমনওয়েলথ গেমসের বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। বাংলাদেশ দলের মার্চপাস্টে দেশসেরা নারী ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সীমান্তর সঙ্গে লাল-সবুজের পতাকাও বহন করেন বক্সার সৃর কৃঞ্চ চাকমা। পরের দিনই তার ইভেন্ট। তাই গতকাল সকালে রিংয়ে ওঠার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সুর কৃষ্ণ। কিন্তু এদিন রিংয়ে নামতেই পারেননি দেশসেরা এই বক্সার। রিংয়ে নামার আগে কাল সকালে রুটিন মেডিকেল চেক আপেই অন্ধকার নেমে আসে সুর কৃঞ্চের চোখে। ধরা পড়ে উচ্চ রক্তচাপ। ১৫-২০ মিনিট বিশ্রামের পর আবারও যখন মেডিকেল চেপ করা হয় তখনও দেখা যায় তার রক্তচাপ কমেনি। বক্সিংয়ের মতো খেলায় উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে রিংয়ে নামার নিয়ম নেই বলে গেমস কর্তৃপক্ষ সুর কৃষ্ণকে খেলার অনুমতি দেয়নি। ফলে তার জন্য দিনটি ছিল হতাশার।
কমনওয়েলথ গেমস থেকে পদক পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে বক্সিংয়ে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা পারফরমার সুর কৃষ্ণ। অসুস্থতার জন্য লাইট ওয়েটারফাইটে খেলতে পারেননি বলে হতাশ হয়ে এখন দেশে ফিরতে হচ্ছে তাকে। অথচ এক ঘন্টা পর ঠিকই উচ্চ রক্তচাপ কমে যায় সুর কৃষ্ণের। এনএইসি হল থেকে বার্মিংহামের একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে প্রথমে তার রক্তচাপ বেশি পান। এর এক ঘন্টা পর থেকেই রক্তচাপ কমতে শুরু করলে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেন সুর কৃষ্ণ। তবে গেমসের নিয়ম অনুযায়ী এক নির্দিষ্ট সময়ের আগে মেডিকেল টেস্ট উত্তীর্ণ করতে হয়। তা করতে পারেননি বলেই রিংয়ে নামা হয়নি তার। সেই জন্য খুব হতাশ সুর কৃষ্ণ চাকমা, ‘ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে মেডিকেল টেস্ট যখন দেই, তখন কোন সমস্যা হয়নি আমার। প্রেসার মেপে ডাক্তাররা বেশি পায়। দ্বিতীয়বারের পরীক্ষায়ও বেশি আসলে আমাকে খেলার অনুমতি দেয়নি। অথচ এক কিছুক্ষণ পরেই আমার প্রেসার স্বাভাবিক হয়ে যায়। এখন ভাঙা মন নিয়ে আমার ইভেন্টের খেলা দেখছি। এটা দুর্ভাগ্য না তো কী? কোন নার্ভাসনেস কাজ করেনি আমার মধ্যে। গতরাতে ভাল ঘুম না হওয়ার কারণেই হয়তো এমনটা হয়েছে।’
এর আগে ২০১৮ গোল্ডকোস্ট কমনওয়েলথ গেমসে কোচ কাজী আব্দুল মান্নানের গাফিলতির কারণে লজ্জায় ডুবতে হয়েছিল বাংলাদেশ বক্সিংকে। ওই আসওে ম্যাচের দিন সকালে নিয়মানুযায়ী ম্যানেজার্স মিটিংয়ে যোগ দেয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ দলের। কিন্তু সেই সময় দলের কোচ হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করা কাজী আব্দুল মান্নান মিটিংয়ে যোগ দেননি। ম্যানেজার্স মিটিংয়ে বাংলাদেশের কোনো ডেলিগেট না থাকায় চার বছর আগে অনুষ্ঠিত এই গেমসে না খেলেই দেশে ফিরতে হয়েছিল দুই বক্সার রবিন ও আলামিনকে। এবার অবশ্য সেরকম বিব্রতকর লজ্জায় পড়তে হয়নি। তবে বক্সিংয়ে দেশ যার দিকে তাকিয়ে ছিল সবাই সেই সুর কৃষ্ণের রিংয়ে নামতে না পারাটা নানান প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। কমওয়েলথের মতো বড় প্রতিযোগিতায় টানা দু’বারই কেন বক্সিং ইভেন্টে বাংলাদেশের জন্য তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে। এর জবাব কে বা কারা দেবে?
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন