ব্যাটিং ফর্ম ও অধিনায়কত্ব নিয়ে সমালোচনার মধ্যে থাকা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে স্কোয়াডে না রেখে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশের অধিনায়কের দায়িত্ব বিসিবি তুলে দেয় নুরুল হাসান সোহানের কাঁধে। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নেতৃত্বের পথচলার শুরুটা মসৃণ হলো তার। তার নেতৃত্বে প্রথম ম্যাচে ১৭ রানে হারলেও দ্বিতীয়টিতে ৭ উইকেটে জিতে সমতায় ফিরেছে টাইগাররা। আজকের সিরিজের শেষ ম্যাচটি তাই রূপ নিয়েছে অঘোষিত ফাইনালে। অথচ, তার আগের দিন দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব পালনকালে আঙুলে চোট পান সোহান। ফলে চলমান সফর শেষ হয়ে গেল বাংলাদেশের নতুন টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের। তাই সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। সোহানের জায়গায় দলে নেওয়া হয়েছে সেই মাহমুদউল্লাহকেই। ওয়ানডে দলের সঙ্গে তিনি এখন জিম্বাবুয়েতেই আছেন।
গতপরশু হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে মুখোমুখি হয় স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে ও সফরকারী বাংলাদেশ। টস হেরে টাইগাররা আগে ফিল্ডিংয়ে নামার পর বাম হাতের আঙুলে চোট পান সোহান। একাদশে ফেরা তরুণ পেসার হাসান মাহমুদের একটি ডেলিভারি গ্লাভসবন্দি করার সময় আঘাত লাগে তার তর্জনীতে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোহানের জিম্বাবুয়ে সফর থেকে ছিটকে যাওয়ার দুঃসংবাদ দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সোহানের চোটের বিষয়ে বাংলাদেশ দলের ফিজিও মুজাদ্দেদ আলফা সানি বলেছেন, ‘আমরা একটি এক্স-রে করার পর তার তর্জনীতে চিড় ধরা পড়েছে।’
চোট থেকে সেরে উঠতে তিন সপ্তাহের মতো সময় লাগবে সোহানের। কিন্তু এর অনেক আগেই বাংলাদেশের জিম্বাবুয়ে সফরের ইতি ঘটবে। আজ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টির পর আসছে শুক্রবার থেকে মাঠে গড়াবে দুই দলের তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। ফলে বাকি ম্যাচগুলোতে সোহানের খেলার আর কোনো সম্ভাবনা নেই। সোহানের জিম্বাবুয়ে সফর শেষ হয়ে যাওয়া নিয়ে সানি যোগ করেছেন, ‘এই ধরনের চোট থেকে সেরে উঠতে প্রায় তিন সপ্তাহ সময় লাগে। তাই সে আগামী মঙ্গলবারের (আজ) শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ও আসন্ন ওয়ানডে সিরিজ থেকে ছিটকে গেছে।’
অথচ, এই সোহানই প্রথম টি-টোয়েন্টিতে অপরাজিত ৪২ রানের ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস খেলেও বাংলাদেশকে জেতাতে পারেননি। ২৬ বল মোকাবিলায় তিনি মেরেছিলেন ১ চার ও ৪ ছক্কা। তবে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ৫ উইকেট শিকারের পর লিটন দাস হাফসেঞ্চুরি হাঁকালে ব্যাটিংয়ে নামার প্রয়োজন হয়নি সোহানের। তবে মোসাদ্দেকের বলে একটি ক্যাচ নিয়েছিলেন। তবে দুঃসংবাদটা আসে ম্যাচ শেষে। কিš‘ পুরো ম্যাচ ব্যথা সহ্য করে কিপিং করে গেছেন। চোটের বিষয়টি কাউকেই বুঝতে দেননি। ম্যাচ শেষে এক্স-রে করিয়ে দেখা গেছে আঘাতের জায়গায় চিড় ধরেছে। আগামীকালের শেষ ম্যাচ তো বটেই, ওয়ানডে সিরিজেও তিনটি ম্যাচ খেলা হবে না নুরুলের। এমন চোট থেকে সুস্থ হতে নাকি কমপক্ষে তিন সপ্তাহ সময় লাগে।
সিরিজ থেকে ছিটকে যাওয়ায় নুরুলকে দেশে ফিরতে হবে। তার বদলি হিসেবে কোনো ক্রিকেটার দেশ থেকে পাঠানোর সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন নির্বাচক প্যানেলের এক সদস্য, ‘উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডেতে মুশফিকুর রহিম তো আছে। মনে হয় না কাউকে পাঠানোর প্রয়োজন হবে।’ নুরুল অবশ্য থেকে যেতে চেয়েছিলেন। দুই দিন বিশ্রাম নিলেই নাকি তিনি খেলার মতো অবস্থায় ফিরতে পারবেন বলে তার ধারণা। বাংলাদেশ দলের ফিজিও মুজাদ্দেদ আলফা অবশ্য বলেছেন ভিন্ন কথা, ‘নুরুলের আঙুলে এক্স-রে করার পর দেখা গেছে তার আঙুল ভেঙেছে। এ ধরনের চোট থেকে সেরে উঠতে কমপক্ষে তিন সপ্তাহ সময় প্রয়োজন। সে কারণে নুরুল ২ আগস্টের (আজ) সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ ও এর পরের ওয়ানডে সিরিজে খেলতে পারবেন না।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন