শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

সুপার বেনজেমায় সুপার রিয়াল

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ আগস্ট, ২০২২, ১২:০৩ এএম

ইউরোপের ক্লাব পর্যায়ের যে কোনো প্রতিযোগতা মানেই রিয়াল মাদ্রিদের রাজত্ব। কথাটাকে চিরন্তনের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে মাদ্রিদের অভিজাতরা। পরশুরাতে ফিনল্যান্ডের হেলসিংকিতে মৌসুম সূচক উয়েফা সুপার কাপেও তার ছেদ পড়েনি। তবে এই মৌসুমে তাদের বহুল প্রত্যাশিত দুই সাইনিং চুয়ামেনি ও রুডিগারকে একাদশে আশা করেছিল লস ব্ল্যাঙ্কস ফ্যানরা। কিন্তু এই দুজনকে বেঞ্চে রেখে গত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে লিভারপুলের বিপক্ষে খেলা একাদশকেই আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টের বিপক্ষে মাঠে নামান রিয়াল বস কার্লো আনচেলত্তি। এই মৌসুমের প্রথম শিরোপা ঘরে উঠানোর আগে ইতালিয়ান কোচ কোন ধরনের ঝুঁকির পথে হাটেননি। আর রিয়েল বসের চিরচেনা মধ্যমাঠ ও আক্রমণভাগও তার সিধান্তের যথার্ততা প্রমাণ করে জার্মান ক্লাবটিকে হারিয়েছে ২-০ গোলে। মাঠের লড়াইয়ের আগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ২০২১/২২ মৌসুমের সেরা খেলোয়াড়ের পুরষ্কারটি তুলে দেওয়া হয় করিম বেনজামার হাতে। আর তারই সতীর্থ ভিনিসিয়ুস জুনিয়র বাগিয়ে নেন সেরা উঠতি তারকার পুরষ্কার।
এদিন আক্রমণ ও প্রতিআক্রমণে ম্যাচের প্রথম ১৫ মিনিটে রিয়ালকে বেশ চমকে দিয়েছিল ফ্রাঙ্কফুর্ট। তাদের স্ট্রাইকার দাইচি কামাদা এই সময়ের মাঝে পেয়েছিলেন দুইটি সুবর্ণ সুযোগ। তবে এই জাপানিজ ফরোয়ার্ড প্রতিপক্ষের শেষ বাঁধা তিবো কোর্তোয়াকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়াতে ব্যর্থ হন। অন্যদিকে রিয়াল কিছুটা গুছিয়ে নেওয়ার পর বেনজেমার বাড়িয়ে দেওয়া বলে ভিনিসিয়ুসের নেওয়া শট ফ্রাঙ্কফুর্টের জালের দিকেই যাচ্ছিল। কিন্তু গোললাইন থেকে সেই বল ক্লিয়ার করেন জার্মান ক্লাবটির ডিফেন্ডার তুরে। ৩৭ মিনিটে স্পেনিশ জায়ান্টদের এগিয়ে দেন ডেভিড আলাভা। কর্নার থেকে আসা বল পুনরায় সাইডলাইন অতিক্রম করার সময়, কাসেমিরো সুকৌশলী হেডে তা আলাভার কাছে পাঠান। একদম আনমার্কড থাকা অস্ট্রিয়ান ডিফেন্ডার সে বল কেবল টোকা দিয়ে জালে পাঠিয়েছেন। বিরতির পরে দৃষ্যপটে আবারও কাসেমিরো। তার ডি বক্সের বাহির থেকে বাঁপায়ে নেওয়া শট ফ্রাঙ্কফুর্টের বারে প্রতিহত হয়। এরপর ৬৫ মিনিটের সময় দেখা মিললো রিয়ালের বর্তমান ট্রাডমার্ক। যার নাম ‘ভিনিসিয়ুসের পাস ও বেনজামার গোল’। প্রতিপক্ষের ডিবক্সের বাঁ দিক থেকে ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার বল দেন বিশ্বস্ত সঙ্গী বেনজামাকে। জটলার মাঝ থেকে সেই পাস ওয়ান টাচ শটে গোলরক্ষক ট্রাপকে ফাঁকি দিয়ে জালে পাঠিয়ে দেন ফরাসি স্ট্রাইকার। উল্লেখ্য গত মৌসুমে এই জুটি মিলে মোট ৬৬টি গোল করেন। রিয়াল ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার পর আর কোন গোল হয়নি ম্যাচটিতে। তাতেই এই বছরে চতুর্থ শিরোপার ঘরে তুলে নিল বেনজেমা-মড্রিচরা।
এই ম্যাচটি একই সাথে ছিল রেকর্ডের ম্যাচ। আলাবার গোলটি ছিল উয়েফা সুপার কাপের ইতিহাসে প্রথম কোন অস্ট্রিয়ানের গোল। তাছড়া রিয়ালের জার্সিতে এদিনের গোলের মাধ্যমে বেনজেমা পেছনে ফেলে দিলেন ক্লাব লেজেন্ড রাউলকে। একই সাথে বনে গেলেন রিয়ালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোল করা খেলোয়াড়ে। এই ফরাসি গোল মেশিনের গোলসংখ্যা ৩২৪। বেনজেমা সামনে এখন আছেন কেবল জীবন্ত কিংবদন্তি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। পর্তুগীজ তারকার সাদা জার্সিতে গোল সংখ্যা ৪৫০। বেনজেমার এই শিরোপায় গোল করে তার ব্যালন ডি’অর জয়ের দাবিকে আরও সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে। এমনটাই মনে করেন কোচ আনচেলত্ত, ‘বেনজেমা রিয়ালের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একজন। আজ দল যেখানে দাঁড়িয়ে তাতে বেনজেমার যথেষ্ট নবদান আছে। গত মৌসুমে সে প্রচুর গোল করেছে। এবারের শুরুটাও দারুন করেছে। আমার মনে হয় এবারের ব্যালন ডি-অর সেই পাচ্ছে। এব্যাপারে কারও সন্দেহ থাকার কথা না।‘ বিচনয়ী বেনজেমার কন্ঠে অবশ্য ভিন্ন সুর। এই মুহূর্তে তার মাথায় পুরষ্কারের চিন্তা নেই, ’আমি যা করেছি বা পেয়েছি তাতে অবশ্যই আমি গর্বিত। আমার প্রচুর সম্মাননা ও ট্রফি আছে। আমার আর কিছুই প্রমাণের নেই। আমি আসলে প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করার চেষ্টা করছি।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন