বিশ্বব্যাপী জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সঙ্কট মোকাবিলায় বাসা-বাড়ি, অফিস-আদালত, শিল্পকারখানাসহ সব জায়গায় বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে নেয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ। এই ধারাবাহিকতায় আগামী সেপ্টেম্বর থেকে লোডশেডিং অর্ধেকে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছে সরকার। এজন্য লোডশেডিং সমন্বয়ে সপ্তাহে একেক দিন একেক এলাকায় শিল্পকারখানা বন্ধ থাকবে। কবে কোন এলাকায় সাপ্তাহিক বন্ধ থাকবে সেটিও গত বৃহষ্পতিবারে ঠিক করে দেয়া হয়েছে। এলাকাভেদে ছুটি যেদিনই হোক, সেটি হবে সপ্তাহে একদিন। দেশের শিল্পাঞ্চলসমূহে একেক দিন একেক এলাকায় সাপ্তাহিক ছুটি হলেও শিল্পের উৎপাদনে কোনো ব্যত্যয় হবে না বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। এলাকা ভেদে সপ্তাহের যে কোনো একদিন শিল্প বন্ধ হলেও বাকি দিনগুলোতে কারখানায় উৎপাদন হবে সব সময়। এতে উৎপাদনে কোনো সমস্যা হবে না বলে জানান শিল্পখাতের উদ্যোক্তারা। তবে কারখানা চালু থাকা অবস্থায় গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।
নতুন নিয়মে দেশের ৩১টি শিল্পাঞ্চলে গতকাল সাপ্তাহিক ছুটি কার্যকর হয়েছে। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ছুটি থাকায় বন্ধ থাকে কলকারখানা। তবে, বেশির ভাগ কারখানায় আগে থেকেই শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন দৃশ্যমান হয়নি। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বেশিরভাগ কারখানায় নির্দেশনা না পৌঁছানোর কারণে নতুন নিয়মের ব্যত্যয় হয়েছে।
এ বিষয়ে বিকেএমইএ’র কার্যকরী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, সরকার বিদ্যুৎ সরবরাহ রেশনিং করেছে, বর্তমান পেক্ষাপটে এটা খুবই স্বাভাবিক। কারণ সারা বিশ্বেই এখন সংকট চলছে, শুধু বাংলাদেশে না। এ রেশনিং চালানোর জন্য আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে, যেটা গতকাল শুক্রবার থেকেই। এতে আমাদের একটু সমস্যা হবে। কারণ আমাদের সঙ্গে এলাকাভিত্তিক রেশনিং করার কথা ছিল, কিন্তু করা হয়েছে বিদ্যুতের ফিডার ওয়াইজ। এতে কারখানায় সমন্বয়ের সমস্যা হবে। কারণ আজ পাশের একটা কারখানা বন্ধ, সেখানে আমার কারখানার একটা অংশ রয়েছে, সেখানে কিন্তু বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে না। ফলে সেখানে আমার সমন্বয় করতে একটু অসুবিধা হবে। তারপরও আমরা শুরু করতে চাই। এতে কোথাও সমস্যা হলে আমরা সরকার ও বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে কথা বলে সমন্বয় করার চেষ্টা করবো।
মোহাম্মদ হাতেম আরও বলেন, তবে বিদ্যুতের চেয়ে আমরা আরও বড় সমস্যায় আছি, সেটা হলো গ্যাস। গত বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ শিল্প এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ ছিল। এতে আমরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এ বিষয়ে আমরা তিতাস গ্যাসের এমডি ও পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি, কিন্তু কেউ সদুত্তর দিতে পারেননি। কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ ছিল বলতে পারেননি তারা। শিল্পের উৎপাদন নিশ্চিতে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার অনুরোধ জানান তিনি।
তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি শহিদউল্লাহ আজিম বলেন, আমরাতো প্রতি সপ্তাহে একদিন কারখানা বন্ধ রাখি। সেক্ষেত্রে আমরা সপ্তাহে একেকদিন একেক এলাকায় বন্ধ রাখবো। এটা আগের মতো হবে অর্থাৎ সাপ্তাহিক বন্ধ এক দিনই হবে। তিনি বলেন, আগে একইদিন (শুক্রবার) সাপ্তাহিক বন্ধ থাকতো। এখন হয়তো এলাকাভেদে সপ্তাহের একদিন করে একেক এলাকায় ঠিক করা হবে। এতে উৎপাদনে কোনো প্রভাব পড়বে না। উৎপাদন হবে আগের মতোই, শুধু সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পরিবর্তন আসবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন