দুই সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীতে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ডজন প্রতি ৪০ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকায় উঠেছে। এর আগে ডিমের দামের এতটা বৃদ্ধি দেখা যায়নি, দামও এতটা ওঠেনি।
ডিমের সঙ্গে ব্রয়লার মুরগিও কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে মুরগির খাদ্যের উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়া, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি এবং ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
তবে ডিমের দাম যতটা বেড়েছে, ততটা বাড়ার কথা নয় বলেও তারা স্বীকার করেছেন।
ব্যবসায়ীরা আরও বলেন, করোনাসহ বিভিন্ন কারণে অনেক খামার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ডিমের উৎপাদন আগের চেয়ে কমেছে। এসবের প্রভাব পড়েছে ডিমের দামের ওপর। তবে এর সঙ্গে যুক্ত করে খামারিরা বলেছেন, ডিমের দাম বেড়েছে এটা সত্যি। কিন্তু খামারিরা কিন্তু বাড়তি দাম পাচ্ছেন না। এখানে একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে। এই সিন্ডিকেট ডিমের দাম এতটা বাড়িয়ে দিয়েছে।
ডিমের দাম কেন বাড়ছে? এ প্রশ্নে এক আড়তদার বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচ আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। তিনি বলেন, আগে যে গাড়ি ভাড়া ছিল ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা। তা এখন ২২ থেকে ২৩ হাজার টাকা। আর গাড়িতে অন্যকোনো পণ্য অতিরিক্ত পরিবহন করা যায়। কিন্তু অতিরিক্ত ডিমতো পরিবহন করার সুযোগ নেই। পরিবহনের এই বাড়তি ব্যয়তো ডিমের সঙ্গেই যুক্ত হচ্ছে। দাম বৃদ্ধি নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই চলছে সোস্যাল মিডিয়ায় তুমুল সমালোচনা।
অহনা আফরিন নামে একজন লিখেছেন, নিম্ন আয়ের মানুষের এখন বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। মানুষ মরে, উন্নয়ন দিয়ে কি হবে।
অয়ন সরকার নামে একজন লিখেছেন, দেশ উন্নয়ন করে লাভ কি? যদি গরীব মানুষ খেতে না পারে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে নিম্ন আয়ের মানুষের অনেক কষ্ট হচ্ছে।
মাহমুদ নামে একজন লিখেছেন, উচ্চমূল্যের কারণে অনেক আগেই স্বল্প আয়ের মানুষের প্লেট থেকে গরুর গোশত উঠে গেছে। এবার ডিমটাও উঠে যাওয়ার অবস্থা হয়েছে। পুষ্টির চাহিদা মেটাতে আগে বাচ্চাকে সকালে একটা ডিম খাওয়াতাম। কিন্তু এখন বোধহয় সেটা আর সম্ভব হবে না।
আরিফ হোসাইন নামে একজন লিখেছেন, বেহেশতের খাদ্য দ্রব্যের দাম একটু বেশিই হয়।
মোল্লা এ রহমান নামে একজন লিখেছেন, আমরা গরীব, নিম্ন ও মধ্যবিত্ত যারা আছি তারা শুধু উন্নয়ন খাবো। আর দেখবো কিছু করার নেই! কারণ গরীব, নিম্ন ও মধ্যবিত্ত যারা আছি তাদের দেখার কেউ নেই!
মো. আকবর হোসাইন নামে একজন লিখেছেন, এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে খুব তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আসা দরকার। এদেশে কিছু বলতে গেলে ভয় হয়। চোখ বুঝে সব সয়ে যেতে হবে। বাক স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলছি, সংসার খরচ কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। এখন মধ্যবিত্তদের বেঁচে থাকাটা কষ্ট হয়ে পড়েছে।
হাবিব আহমেদ নামে একজন লিখেছেন, তবুও এক শ্রেণির লোক খুশি। কেননা তারা শুধু উন্নয়ন দেখে, কিন্তু তাদের বাবা, মা কিংবা উপার্জন ক্ষমব্যক্তি কিভাবে সংসার চালাচ্ছে, সেটা তারাই ভালো জানে।
মিসেস ফাতেমা নামে একজন লিখেছেন, এগুলো তো বাংলাদেশের সরকারের দেখে লাভ নেই। দেশ তো উন্নত হচ্ছে, জনগণ না খেয়ে মরুক, সরকারের লোকেরা তো জান্নাতে আছে।
মনজিল সরকার নামে একজন লিখেছেন, সব কিছুর দাম লাগামছাড়া। এগুলো দেখার কেউ নেই। সবাই ক্ষমতা নিয়ে ব্যস্ত। আর যে সরকারের জনগণের ভোট লাগে না, সে সরকার জনগণের কথা ভাববে না এটাই স্বাভাবিক।
অনেকেই লিখেছেন, রাজধানীতে ব্যাচেলারদের প্রধান খাদ্য ছিল ডিম। এখন তারা মনে হয় সে ডিমটিও খেতে পারবে না। তাহলে তারা কিভাবে বেঁচে থাকবে?
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন