শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মুরাদনগরে মালচিং পদ্ধতিতে কানিয়া তরমুজ চাষ

বারোমাসি ফল চাষে সফল কৃষক সামুস

মো. মনির হোসাইন, মুরাদনগর (কুমিল্লা) থেকে | প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০২২, ১২:০৫ এএম

মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে বারোমাসি ফল কানিয়া জাতের তরমুজ চাষে সফল হয়েছেন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কৃষক সামসুল হক সামসু। উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহায়তায় তিনি এক বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন।
এই তরমুজের স্বাদও বেশ মিষ্টি। তরমুজের ক্ষেত দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন আশপাশের এলাকার কৃষক ও উৎসুক লোকজন। ইতোপূর্বে তিনি ব্রকলি, স্কোয়াশ, রকমেলন, গোল্ডেন ক্রাউন (হলুদ তরমুজ) এবং সাম্মাম চাষ করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছিলেন।

সামসুল হকের বাড়ি মুরাদনগর উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের ভূবনঘর গ্রামে। সরেজমিনে দেখা যায়, দু’টি ভাগে ভাগ করে তরমুজের চারা লাগনো আছে। পুরো জমিতে বাশের খুঁটির ওপরে জাল বিছিয়ে মাচা তেরি করা হয়েছে। এতে তরমুজগাছের লতা বেড়ে উঠেছে। পুরো মাচা গাছে ছেয়ে আছে।
মাচার মধ্যে সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঝুলছে বিভিন্ন রঙের ও বিভিন্ন আকারের বাহারি তরমুজ। কৃষক সামসু একটি একটি করে তরমুজ কাটছেন, আর ঝুড়িতে তুলছেন। প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি করছেন ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়। খুচরা ও পাইকারি ক্রেতারা জমি থেকে তরমুজ কিনে নিচ্ছেন।

জেলার চান্দিনা উপজেলার মাধাইয়া বাজার থেকে আসা পাইকারি ক্রেতা আবদুল ওহাব বলেন, খবর পেয়ে এসেছি। জমিতে বিভিন্ন আকারের তরমুজ ও দামে ভিন্নতা আছে। প্রতিটি তরমুজের ওজন তিন থেকে চার কেজি। কেজি ১০০ থেকে ১৩০ টাকা দরে কিনেছি। এগুলো ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি।

কৃষক সামসুল হক জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে ঝিঙ্গা, লাউ, মুলা, টমেটো, ব্রকলি, বাধাঁ কপি ও ফুল কপিসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করছেন। গত বছর ব্রকলি, স্কোয়াশ, হলুদ তরমুজ, রকমেলন, মরুর দেশের ফল সাম্মাম ও বারমাসি তরমুজ চাষ করেও ভালো সফলতা পান।

তিনি জানান, গত ৩ বছর ধরে কানিয়া, ম্যাজিক বয় ও হানিডিও জাতের তরমুজ চাষ করছেন। প্রথম বছর লোকসান হলেও পরবর্তী বছর থেকে খুবই লাভ হচ্ছে। ইউটিউবে দেখে তরমুজ চাষে আগ্রহী হন। এক বিঘা ধানি জমি তরমুজ চাষের জন্য প্রস্তুত করেন। এরপর বীজ সংগ্রহ করে বপন করেন।

তরমুজের চারা বড় হলে সেগুলো বাঁশ দিয়ে তৈরি মাচায় ছড়ানো হয়। এরপর প্রথমে ফুল আসে। পরে ক্রমান্বয়ে বেরিয়ে আসে সবুজ, হলুদ ও কালো রঙের তরমুজ। দুই মাসের মধ্যে তরমুজ পরিপক্ব হয়। এক বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত তিনি তরমুজ বিক্রি করে আয় করেছেন দেড় লাখ টাকা।

মুরাদনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাইন উদ্দিন আহম্মেদ ইনকিলাবকে জানান, সামসুল হক সামসু এই উপজেলার একমাত্র কৃষক প্রথম কানিয়া, ম্যাজিক বয় ও হানিডিও প্রজাতির তরমুজ চাষ করছেন। কানিয়া জাতের তরমুজের চাষ বারো মাস হয়ে থাকে। প্রাকৃতিক উপায়ে পোকা দমন প্রক্রিয়াসহ সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে তাকে সহযোগিতা করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, এই প্রজাতির তরমুজ চাষ সম্প্রসারণে কৃষকদের উৎসাহিত করা হবে। কোন কৃষক আগ্রহী হয়ে এ ধরনের উদ্যেগ নিতে চান তাহলে তাকে মুরাদনগর উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের সহযোগীতা ও পরামর্শ দেওয়া হবে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন