শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

লবণাক্ত এলাকায় অসময়ে তরমুজ চাষে সাফল্য

জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি (সাতক্ষীরা) থেকে | প্রকাশের সময় : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

আশাশুনি উপজেলার বড়দল ইউনিয়নে বর্ষা মৌসুমে লবণাক্ত এলাকায় অমৌসুমি তরমুজ চাষ করে সফলতা অর্জন করেছেন কৃষকরা। অসময় তরমুজ পেয়ে যেমন তৃপ্ত হচ্ছে মানুষ, তেমনি ভাল মূল্য পেয়ে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।

উপজেলার বড়দল ইউনিয়নে আমন ধান চাষাবাদ হয়ে থাকে। ফলে বছরের অধিকাংশ সময় জমি পতিত থাকে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘উন্নয়ন প্রচেষ্টা’ প্রসপারিটি প্রকল্পের আওতায় পতিত জমি কাজে লাগাতে এবং বছরে একাধিক ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে কৃষকদেরকে উৎসাহিত করতে কার্যক্রম হাতে নেয়। এরই অংশ হিসাবে ইউনিয়নের ফকরাবাদ গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনকে প্রকল্পের সদস্যভুক্ত করে তাকে প্রকল্প হতে জলবায়ু সহনশীল ফসল চাষ বিষয়ক আয়বর্ধনমূলক কর্মকাণ্ড ‘লবণাক্ত এলাকায় মিনি পুকুর পদ্ধতিতে ফসল চাষ’ বাস্তবায়নের জন্য অনুদান সহায়তা দেয়া হয়। এবং প্রসপারিটি প্রকল্পের কারিগরি কর্মকর্তাদের সঠিক পরামর্শ এবং কৃষি বিষয়ক কারিগরি সেবার মাধ্যমে একই জমিতে বছরব্যাপী বিভিন্ন রকম ফসলের চাষ করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। তিনি চলতি বর্ষা মৌসুমে প্রায় ৬ বিঘা লিজকৃত জমির আইলে মালচিং পেপার ব্যবহার করে অমৌসুম জাতের তরমুজ গোল্ডেন ক্রাউন, বিগ বাইট, রবি এবং ব্লাক জায়েন্ট চাষ করেছেন। এতে তার আনুমানিক ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে এবং আড়াই মাসে তরমুজ বিক্রির উপযোগি হয়েছে। এখন তার তরমুজ ক্ষেতে প্রায় ১০০০টি তরমুজ আছে। এসব তরমুজ খেতে খুবই সুস্বাদু এবং দেখতেও বেশ দৃষ্টিনন্দন। স্থানীয় বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি তরমুজ ৫০-৬০ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে এবং তিনি আনুমানিক ৯০-৯৫ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রয় করতে পারবেন বলে আশা করেন।
একই ইউনিয়নের হেতাইলবুনিয়া গ্রামের বিষ্ণপদ মন্ডল, দিলীপ মন্ডল, শংকর মন্ডল, বামনডাঙ্গা গ্রামের মাহফুজুর রহমান ও গোয়ালডাঙ্গা গ্রামের কৃপা মন্ডলসহ অনেকে প্রসপারিটি প্রকল্পের সহায়তায় একই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করেছেন। ইতোমধ্যে তারাও ফসল বাজারে তুলতে শুরু করেছেন। একই সাথে তারা জমির আইল/বাঁধে মিষ্টি কুমড়া, লাউ, ভেন্টি, করলা চাষ এবং জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন। সামনের শীত মৌসুমে বোরো ধান, তরমুজ, সরিষা, এবং বাঁধে ১২ মাস সবজি চাষ করবেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জগদীশ চন্দ্র সানা বলেন, তিনি প্রকল্পের আওতায় কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহযোগিতা দিয়েছেন। যাতে এলাকার মানুষ উপকৃত ও সাবলম্বী হতে পারে। ইতোমধ্যে তাদের সফলতা দেখতে পেয়ে আমি আনন্দবোধ করছি। অমৌসুমী তরমুজ হওয়ায় স্থানীয় বাজারে চাহিদাও ব্যাপক।
এ বিষয়ে উন্নয়ন প্রচেষ্টার প্রসপারিটি প্রকল্পের কারিগরি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. বাশিরুল ইসলাম বলেন, লবণাক্ত এ অঞ্চলে এক ফসলী জমিতে অমৌসুম জাতের তরমুজ চাষ করলে ব্যাপকভাবে লাভবান হওয়া যাবে। এজন্য সহকারী কারিগরি কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম, ব্র্যাঞ্চ ম্যানেজার বিপ্লব দেবনাথকে সাথে নিয়ে আমরা সব সময় চাষিদের পাশে থেকে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। প্রয়োজনে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, মৎস্য কর্মকর্তা ও প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তাকে নিয়ে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, পরামর্শ ও যোগাযোগ স্থাপনের যোগসূত্র করে দিয়েছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন