স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্য শেখ আবদুল হাকিম আর নেই। শনিবার দিবাগত রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি। (ইন্নালিল্লাহে ওয়াইন্না ইলায়হি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও তিন মেয়েসহ অসংখ্য গুনগ্রাহি এবং আত্মীয়-স্বজন রেখে যান। রোববার বাদ আসর যশোর উপশহরের ‘এ’ ব্লক মসজিদে হাকিমের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। যশোর স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় জানাজা শেষ উপশহর কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।
যশোরেই স্থায়ীভাবে থাকতেন শেখ আব্দুল হাকিম। বেশ কয়েক বছর ধরে বার্ধক্য ও নানা জটিল রোগে ভুগছিলেন তিনি। স্বাধীনতার আগে দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে ঢাকা লিগে খেলা শুরু করেন হাকিম। পাকিস্তান যুব দলে ডাক পেয়েছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলে যোগ দেন। ১৯৭৩ সালে মারদেকা কাপে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় দলের সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭৫ সালের মারদেকা কাপেও খেলেছেন। স্বাধীনতার পর তিনি ওয়াপদা এবং ওয়ারী ক্লাবের হয়ে দাপটের সঙ্গে খেলেন। তবে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম এই সদস্যদের শেষ জীবন কেটেছে অনেক কষ্টে। তিন বছর আগে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের পর হাকিমের একটি চোখ প্রায় নষ্ট হয়েই গিয়েছিল হাকিমের। তখন থেকেই প্রচন্ড অসুস্থ অবস্থান জীবন-যাপন করছিলেন। গত কয়েক মাস যাবত কথা বলতে পারতেন না তিনি। নল দিয়ে তাকে খাওয়া দাওয়া করাতে হতো। জানা গেছে, গত ২১ আগস্ট দিবাগত রাতে হঠাৎ বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন হাকিম। তখন যশোরের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হয় তাকে। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে পরের দিন সকালে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই ছয়দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন সাবেক এই ফুটবলার।
সত্তর ও আশির দশকের দেশের অন্যতম সেরা লেফট উইংব্যাক শেখ আবদুল হাকিমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ও বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস কমিউনিটি (বিএসজেসি)সহ বিভিন্ন সংগঠন। তারা মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনাসহ শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন