ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে সন্তানের অসুস্থতার শোকে বাবা মৃত্যু বরণ করেন। বুধবার দুপুরে ওই দূর্ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, উপজেলার রাজিবপুর ইউনিয়নের ভাটিচরনওপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলাম বেপারী (৫০) ৩ মেয়ে ৩ ছেলে ও এক স্ত্রী নিয়ে একটি সুখের সংসার নিয়ে বসবাস করে আসছে। এরই মাঝে নজরুল ইসলামের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া বড় মেয়ে মিথিলা আক্তার শারিরীক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এঅবস্থায় গত রোববার সন্তান মিথিলাকে চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন বাবা নজরুল ইসলাম। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মিথিলার শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হয়। এ অবস্থায় বুধবার সকালে মিথিলা হাসপাতাল থেকে ফোন করে বাবা নজরুল ইসলামকে বলে তার শরীর ভালো না একটু দেখে যাওয়ার জন্য। কিন্তু বাবা নজরুল অসুস্থ মেয়ের এমন কথা শুনে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন। এদিকে পরিবারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক মেয়েকে দেখতে হাসপাতালে যেতে হবে এই ভেবে নজরুল বুধবার সকাল ১১টায় খাওয়া দাওয়া শেষ করে। কিন্তু মেয়ে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছে এমন শোক যেনো কিছুতেই মানতে পারছে না বাবা হয়ে। এমন চিন্তা করতে করতে হঠাৎ রশি হাতে নিয়ে চলে যায় বাড়ির গোডাউন করে। সেখানে গিয়ে দীর্ঘদিন যাবত মেয়ে অসুস্থ হয়ে কষ্ট করছে এমন শোকে ঘরের আড়ার সাথে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করে।
এদিকে পরিবারের লোকজন অসুস্থ মেয়েকে দেখতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে হবে বলে নজরুল কে খুঁজতে থাকে। অনেক খুঁজাখুঁজির পর বসত ঘরের সাথে গোডাউনের দরজা খুলে নজরুলকে ফাঁসিতে ঝুলে রয়েছে দেখতে পায় তার মেঝো ছেলে ফয়সাল মিয়া। পরে তার ডাকচিৎকারে পরিবারের লোকজন এসে নজরুল ইসলাম কে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থা দেখতে পায়। পরে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ পীরজাদা শেখ মোহাম্মদ মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে লাশ ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ না থাকায় সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের জন্য লাশ দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন