বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ক্ষমা চাইলেন বিএফআইইউ’র মাসুদ বিশ্বাস

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান মাসুদ বিশ্বাস ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। গতকাল বুধবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি খিজির হায়াতের ডিভিশন বেঞ্চে সশরীরে হাজির হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে সুইস ব্যাংক সংক্রান্ত তথ্য আদালতে উপস্থাপনের ঘটনায় তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন। মাসুদ বিশ্বাস দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, অসাবধনাবশত এই ভুল হয়েছে। পরে আদালত তাকে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করে ক্ষমা করে দেন।

গত মঙ্গলবার বিএফআইইউ’র শীর্ষ কর্মকর্তা মাসুদ বিশ্বাসকে তলব করেন একই আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে সুইস ব্যাংক সংক্রান্ত তথ্য আদালতে দাখিল করায় তার ব্যাখ্যা দিতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান মাসুদ বিশ্বাসকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। গতকাল বেলা ১১টার দিকে তিনি সশরীরে আদালতে হাজির হন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

আদালতে প্রতিবেদন ফরওয়ার্ডিং আকারে দিতে হয়। প্রতিবেদনে স্বাক্ষর দিতে হয় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে। কিন্তু প্রতিবেদনে এসবের কিছুই নেই। আমরা বলেছি এটা একটা উদাসীন প্রতিবেদন। এতে আদালত ভৎসর্ণা করেছেন এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

আদালত যেভাবে চেয়েছিলেন বিএফআইইউ থেকে সেভাবে প্রতিবেদন দেয়া হয়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রেসপন্স টু বাংলাদেশ ব্যাংক। আমরা আদালতে বলেছি, এটা তো রেসপন্স হয় না। এটা তো দুই বন্ধুর বিষয় না। এটা আদালতের আদেশ। তারা প্রতিবেদন দেবে। কিন্তু বিএফআইইউ বলেছে, জবাব তো হবে না। এটা উনার লিখিত ব্যাখ্যা হবে। তাদের দাখিল জবাবে ঘাটতি আছে। এ কারণে আদালত তলব করেছেন।

এর আগে গত ১৪ আগস্ট বিএফআইইউ প্রতিবেদন দেয় সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ জমা সংক্রান্ত তথ্য বিভিন্ন সময়ে দেশটির আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা এফআইইউয়ের কাছে চাওয়া হয়েছিল। সর্বশেষ গত ১৭ জুন এফআইউয়ের কাছে এ সংক্রান্ত তথ্য চেয়েছিল বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউ। অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন প্রতিরোধ, অনুসন্ধান ও তদন্তের জন্য বিএফআইইউ বিদেশি এফআইইউদের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করে থাকে। তবে বিশ্বব্যাপি এসব তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যম হলো এগমন্ড সিকিউর ওয়েব (ইএসডব্লিউ)। ২০১৩ সালের জুলাইতে ইএসডব্লিউর সদস্য হওয়ার পর চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত ৬৭ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে তথ্য চায় বাংলাদেশ।

ইএসডব্লিউ’র মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের এফআইইউকে এ তথ্য দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু একজন ছাড়া অন্যদের বিষয়ে কোনো তথ্য নেই বলে জানায় সুইজারল্যান্ড। আর এ একজনের তথ্য দুদককে দিয়েছে বিএফআইইউ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুইস ব্যাংক চলতি বছরের ১৬ জুন বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পরদিন এগমন্ড সিকিউর ওয়েবের (ইএসডব্লিউ) মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশি ব্যাংক ও ব্যক্তির জমানো অর্থের বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহের জন্য সুইজারল্যান্ডের এফআইইউকে (ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট) অনুরোধ করা হয়। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য পায়নি বাংলাদেশ। প্রতিবেদনে বলা হয়, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশি ব্যক্তিদের অর্থ রাখার বিষয়ে তথ্য জানাতে সর্বশেষ গত ১৭ জুনও চিঠি দিয়েছিল বিএফআইইউ। গত ১১ আগস্ট সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে অর্থ জমা নিয়ে নির্দিষ্ট করে দেশটির সরকারের কাছে বাংলাদেশ সরকার কোনো তথ্য কেন চায়নি-জানতে চান হাইকোর্ট। আদালত বলেন, আমরা সুইস রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে পড়েছি। বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেতে প্রকাশিত সংবাদের কপি জমা দিতে বলা হয়েছে। এই সময় দুদক ও সরকার পক্ষের বক্তব্য শোনেন আদালত।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন