আন্দোলনের নামে সহিংসতার উপাদান যুক্ত হলে আওয়ামী লীগ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তা মোকাবিলা করবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ কখনও কাউকে আক্রমণ করবে না। তবে আক্রান্ত হলেই পাল্টা আক্রমণ করা হবে।
গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেট ভবনে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটি আয়োজিত ‘সবুজ বাংলাদেশ: সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে তিন দিনব্যাপী এনভায়রনমেন্টাল প্রটেকশন ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
নির্বাচনে শেখ হাসিনা সরকারকে হঠাতে পারবে না জেনে বিএনপি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা করছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির এখন কর্মী নেই, তাদের কর্মীরা দুর্বৃত্ত হয়ে গেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে। যারা সন্ত্রাসী মামলার আসামি তাদের যদি এসব অপরাধের জন্য পুলিশ ধরে তাহলে কি পুলিশের অপরাধ হয়? আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে বলেন, বিএনপির লোকজন অপরাধী হলে তাদের আইনের আওতায় নিলে কেন এত আপত্তি?
তিনি বলেন, খারাপ কাজ ও অপরাধ যারা করবে তাদের আওয়ামী লীগের হলেও কোনও ছাড় দেওয়া হবে না উল্লেখ করে যে অপরাধ করবে সে যেই দলেরই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি ২০১৩-১৪ সালের মতো আবার আগুন-সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তি শুরু করছে। তারা যখনই রাজপথে আসে, তখন আন্দোলন জমানোর জন্য, দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য, মিডিয়া কাভারেজের জন্য নিজেরাই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। যাতে পুলিশ তাদের ওপর চড়াও হয়। পুলিশকে আপনি আক্রান্ত করবেন, পুলিশ কী নিজেকে রক্ষা করবে না? অবশ্যই রক্ষা করবে।
তিনি বলেন, বিএনপি জানে, নির্বাচন করে শেখ হাসিনা সরকারকে হটাতে পারবে না। তারা এ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে যাচ্ছে। সরকার তাদের ওপর হামলা করছে, এমন অপবাদ দিচ্ছে।
অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় কাজ করছে সরকার। এ জন্য গৃহীত সব কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে এ পর্যন্ত তিন হাজার ৩৬২ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৭৮৯টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসিত হচ্ছে। সরকার এ লক্ষ্যে জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবেদন জমা দিয়েছে (এনডিসি), জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা ও মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা ২০২২-৪১ খসড়া চূড়ান্ত করেছে।
বনমন্ত্রী বলেন, বনায়ন ও বন সংরক্ষণ, অবক্ষয়িত বন পুনরুদ্ধার এবং টেকসই বন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের বৃক্ষাচ্ছাদিত ভূমির আয়তন ২২ দশমিক ৩৭ থেকে ২৫ শতাংশে এবং বনভূমির আয়তন ১৪ দশমিক ০১ শতাংশ থেকে ১৬ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষে কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সরকার গাছ লাগানোর গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার জন্য প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে এবং গাছের চারা বিতরণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের দেশকে সবুজ রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করতে এবং দেশে সবুজ প্রবৃদ্ধিকে জনপ্রিয় করার পক্ষে জনমত তৈরি করতে হবে।
বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দকার বজলুল রহমানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন