বিএনপির ১১ ফেব্রুয়ারি ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মসূচি ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ একই দিন সারাদেশে শান্তি সমাবেশের কর্মসূচি দিয়েছে। এই কর্মসূচি সংঘাতের জন্য নয় বলে দাবি করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, আমরা আমাদের কর্মসূচি পালন করছি, বিএনপির সঙ্গে কোনো সংঘাতে যাচ্ছি না। ২০১৩-১৪ সালে আমরা দেখেছি বিএনপি কর্মসূচির নামে আগুন সন্ত্রাস, রেল স্টেশন, ভূমি অফিস পুড়িয়ে দিয়েছিল। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া আমাদের কর্তব্য। কাজেই সারা বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত সতর্ক পাহারায় থাকবো। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মৎস ভবন মোড়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) উদ্যোগে সড়ক নিরাপত্তা সংক্রান্ত সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন পর্যন্ত আমাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রতিদিন আছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে যে কর্মসূচি তা পাল্টাপাল্টি কোনো কর্মসূচি নয়। জনগণের জানমাল রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। আর তাই নির্বাচনের আগে আমাদের দলীয় কর্মসূচি থাকবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার আমলে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন দৃশ্যমান। এখন অগ্রাধিকার হলো অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং বিশৃঙ্খলাকে নিয়ন্ত্রণে আনা। এ জন্য প্রয়োজন জনগণের সচেতনতা।
ইজিবাইকগুলো নীতিমালার মধ্যে নিয়ে আসার কাজ শেষ পর্যায়ে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, মেট্রোরেলের পিলারে যারা পোস্টার লাগিয়েছেন তারা নিজ দায়িত্বে সেগুলো সরাবেন, অন্যথায় ব্যবস্থা নেয়া হবে। সড়কে নিরাপত্তা সবাই চায়, ফলে সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে।
ঢাকায় পরিবেশ ও বায়ু দূষণ বিপজ্জনক অবস্থায় পৌঁছেছে স্বীকার করে সিটি করপোরেশন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের প্রতি উষ্মা প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় ফের শীর্ষে উঠে এসেছে ঢাকা। আমাদের লজ্জার ব্যপার, বাংলাদেশ আজকে উন্নয়ন অর্জনে বিশ্বের বিষ্ময় সেই বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বায়ু দূষণ ওয়াস্ট কনডিশানে বায়ু দুষণ খুবই বাজে অবস্থা, বিপজ্জনক অবস্থা, এটা অত্যন্ত লজ্জার বিষয় এবং এটা অবশ্যই মানুষ সৃষ্ট। আজকে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করতে গিয়ে রাস্তায় ধুলা, ঠিকমত পানি না দেওয়া, রাস্তায় প্রতিদিনই পানি দেওয়া দরকার। এই দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের, কোথাও কোথাও করেন। আমি তাদেরকে অনুরোধ করবো দুজনই উদ্যমী মেয়র, তারা যেন এই কাজটি করে।
এ সময় পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়ের কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, আশপাশের ইটের ভাটাগুলো প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। আমাদের এখন মাটি থেকে ইট তৈরি করার জ্বালানো পোড়ানো আমাদের পরিবেশকে দুষিত করছে। আমাদের পরিবেশ মন্ত্রণালয় শুধু সার্টিফিকেট দিলে চলবে না। দরকার হলে টিমওয়ার্ক করতে হবে। আজকে দূষণ এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিন। ঢাকায় আজকে প্রায় দুই কোটি মানুষের বাস, এই ছোট শহরটা আমাদের পরিবেশ ঠিক রাখতে হবে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ছোট একটা দেশ সিঙ্গাপুর, সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছে, যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে ধুমপান করতে পারবেন না, আমাদের এখানে গাড়ির হর্ণ বাঁজিয়ে যাচ্ছে। যেখানে সেখানে সিগারেট টানছে। আজকাল স্কুলের ছেলে মেয়েরা প্রকাশ্যে সিগারেট টানছে। কোন ভেদাভেদ নেই। যেখানে সেখানে খুশি হর্ন বাজাচ্ছে, হাসপাতালের সামনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে হর্ন বাজাচ্ছে, এগুলো বন্ধ করতে হবে।
সড়কে শৃংখলা আনতে বিশ্বব্যাংকের প্রজেক্টের কথা তুলে ধরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, পরিবহনে শৃংখলা আনা এটা এখন আমাদের টপ প্রায়োরটি। বিশ্বব্যাংক একটা প্রকল্প আমাদের এখানে করছে। এখন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে যাবে, প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারলে বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগের শৃংখলা আমরা অনেক দুর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো। তবে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হচ্ছে মানুষের জনসচেতনতা, জনগণের সচেতনতা। শৃঙ্খলা না এলে উন্নয়ন খুব একটা কাজে আসবে না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের প্রোগাম প্রতিদিনই, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত, আমাদের প্রতিদিনই কর্মসূচি। আমাদের বিভাগ, জেলা-উপজেলা, মহানগর-থানা, ইউনিয়নে প্রয়োজনে ওয়ার্ডে থাকবে। আমাদের কর্মসূচি আমরা নির্বাচন পর্যন্ত সারা বাংলাদেশে থাকবে। এখানে কারও সাথে পাল্টা পাল্টি নয়, এটা আমাদের কর্মসূচিরই অংশ। আমরা আমাদের কর্মসূচি পালন করছি। ##
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন